হার্টবিট ডেস্ক
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা গ্রহণের ৬ মাস পরে গ্রহণকারীদের শরীরে অ্যান্টিবডি উপস্থিতির হার আগের তুলনায় মাত্র ৫ ভাগ কমেছে। এ অবস্থায় টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরে বুস্টার ডোজ নিতে হবে কিনা সে বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) গবেষণা চলছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
আজ বুধবার (২৭ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে বিএসএমএমইউ তৃতীয় গবেষণা দিবস ২০২১ উদযাপন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘মুজিব বর্ষের আহবান, গবেষণায় উত্তরণ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। পরে বৈজ্ঞানিক অধিবেশন ও অ্যাওয়ার্ড প্রদানসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় গবেষণা দিবস-২০২১ উদযাপন করা হয়। এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ১৫ জন শিক্ষক, চিকিৎসককে গবেষণার জন্য রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এছাড়াও চারজন শিক্ষক চিকিৎসককে ভাইস-চ্যান্সেলর এ্যাওয়ার্ড ২০২১ প্রদান করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘দেশকে এগিয়ে নিতে গবেষণার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রতিনিয়ত নতুন করে শিখতে হয়। ফলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে আরও বেশি করে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। সকল চিকিৎসককেই গবেষণার চর্চায় মনোযোগী হতে হবে। গবেষণায় দেওয়া অর্থ যাতে ফেরত না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একইসঙ্গে আমাদের অর্জিত পুরানো জ্ঞান যাতে হারিয়ে না যায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে গবেষণার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রতিনিয়ত নতুন করে শিখতে হয়। ফলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে আরো বেশি করে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। সকল চিকিৎসককেই গবেষণার চর্চায় মনোযোগী হতে হবে। গবেষণায় দেওয়া অর্থ যাতে ফেরত না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের অর্জিত পুরানো জ্ঞান যাতে হারিয়ে না যায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিএসএমএমইউতে বিভিন্ন রোগ ও চিকিৎসা বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। গবেষণা করার জন্য ২০২০-২০২১ সালে ৭ শতাধিক শিক্ষক, চিকিৎসক ও ছাত্রছাত্রীদের গবেষণা কর্ম অনুমোদন দেওয়াসহ অনেককে গবেষণা মঞ্জুরী, থিসিস গ্রান্ট প্রদান করা হয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাকর্ম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে দেশে গবেষণা বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। আমরাও গবেষণায় গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি, যেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায় বিশ্বের বুকে রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।’
গবেষণার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে কোভিড-১৯ এর জেনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছি। গবেষণায় দেখা গেছে মোট সংক্রমনের শতকরা ৯৮ ভাগ ভারতীয় বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। আমরা করোনার টিকা গ্রহীতাদের উপর গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছি। সেখানে দেখা গেছে টিকা গ্রহীতাদের শতকরা ৯৮ ভাগের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ভারতের অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা নিয়েছেন ৬ মাস পরে তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি উপস্থিতির হার পূর্বের তুলনায় মাত্র ৫ ভাগ কমেছে। করোনাভাইরাসের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরে বুস্টার ডোজ নিতে হবে কিনা সে বিষয়ে গবেষণা চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করতে আলাদাভাবে রিসার্চ সেন্টারসহ একাডেমিক ভবন গড়ে তোলা হবে। উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান উন্নত চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সংযুক্তির মাধ্যমে বিএসএমএমইউ আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে এই প্রত্যাশা সবার। সবাই মিলে যার যে দায়িত্ব, তা সঠিকভাবে পালনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত এই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সফল হবেই।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারমান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণা মানুষের জীবনের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হওয়ায় অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সাথে এই গবেষণা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। গবেষণা কার্যক্রম আরও তরান্বিত করতে বেসরকারি খাতের এগিয়ে আসা উচিত।’
এছাড়া শুধু গবেষণার বরাদ্দ গ্রহণ করলেই হবে না, কি কি গবেষণা করা হলো তাও মানুষকে জানাতে হবে বালেও জানিয়েছেন ইউজিসি চেয়ারম্যান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএসএমএমইউর উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন প্রমুখ। গুরুত্বপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে সিন্ডিকেটের সম্মানিত সদস্যবৃন্দ, ডিনবৃন্দ, বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, শিক্ষক, চিকিৎসক ও ছাত্রছাত্রী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post