হার্টবিট ডেস্ক
বর্তমানে দেশের দুই কোটি দুই লাখের বেশি মানুষ পূর্ণ দুই ডোজ করে করোনার টিকা পেয়েছেন। এ নিয়ে ১২ শতাংশ মানুষ পূর্ণ দুই ডোজ টিকার আওতায় এসেছেন। দুই ডোজ টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে।
দুই দিন আগে ভারত একশ কোটি ডোজ টিকা দিয়েছে। এর আগে একশ কোটি ডোজ টিকা দিয়েছিল চীন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে, ভারতের ২১ শতাংশ জনগোষ্ঠী পূর্ণ দুই ডোজ টিকার আওতায় এসেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশের টিকাপ্রাপ্তিতে কোনো সমস্যা নেই। তবে জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, দেশে টিকা দেওয়া হচ্ছে ধীরগতিতে। গত কয়েক সপ্তাহে দেশে দৈনিক গড়ে ছয় লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হচ্ছে। এর অর্ধেক প্রথম ডোজ, বাকি অর্ধেক দ্বিতীয় ডোজ। এক দিনে আরও বেশিসংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়ার সামর্থ্য থাকলেও স্বাস্থ্য বিভাগ তা দিতে পারছে না। টিকার বড় মজুত না থাকায় এই সমস্যা হচ্ছে।
জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ‘টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি। টিকার জন্য শুরুর দিকে আমরা একটি উৎসের ওপর নির্ভর করে ছিলাম। ঠিক সময়ে আমরা বিকল্প উৎসগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করিনি বলে এখন পর্যাপ্ত টিকা পাচ্ছি না। একসঙ্গে বেশি টিকা পাচ্ছি না বলে আমরা দ্রুত বেশি মানুষকে টিকা দিতে পারছি না।’
গতকাল শনিবার সারা দেশে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ১০৬ জনকে প্রথম ডোজ এবং ২ লাখ ৭০ হাজার ৩৯ জনকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৩ কোটি ৯৮ লাখ ৮৯ হাজার ২৬৮ জন। এর মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ২ কোটি ২ লাখ ৬৪ হাজার ৫১৩ জন, যা মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ। সরকার ৮০ শতাংশ মানুষকে পূর্ণ দুই ডোজ টিকা দেওয়ার লক্ষমাত্রা ঠিক করেছে।
নিবন্ধন করে টিকা না পাওয়া মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। টিকার জন্য এ পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ৫ কোটি ৬০ লাখ ২১ হাজার ৭৪৬ জন মানুষ। নিবন্ধন করে টিকার অপেক্ষায় আছেন ১ কোটি ৬১ লাখের বেশি মানুষ। অন্যদিকে প্রথম ডোজ নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় আছেন ১ কোটি ৯৬ লাখের বেশি মানুষ।
দেশে এ পর্যন্ত টিকা এসেছে প্রায় সাড়ে সাত কোটি ডোজ। ১০ অক্টোবর রাজধানীর মহাখালীর বিসিপিএস চত্বরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, চলতি মাসে তিন কোটির বেশি টিকা আসবে। নভেম্বর মাসে আসবে ৩ কোটি ৭৫ লাখ টিকা। ডিসেম্বরে আসবে পাঁচ কোটি টিকা। আর জানুয়ারিতে আসবে পৌনে চার কোটি টিকা। অর্থাৎ জানুয়ারির মধ্যে কিছু কমবেশি ১৬ কোটি টিকা দেশে আসবে।
বাংলাদেশ কিছু টিকা পেয়েছে উপহার হিসেবে। কিছু টিকা পেয়েছে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে। কিছু টিকা কিনেছে।
দেশে এখন ১৮ বছরের বেশি যেকোনো নাগরিক টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারছেন। সরকার বলেছে, ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের শিগগিরই টিকা দেওয়া শুরু হবে।
কোভিড ১৯ টাস্কফোর্সের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পূর্ণ দুই ডোজ টিকা দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ভুটান। দেশটির ৬৮ শতাংশ মানুষ পূর্ণ দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন। এরপর ৬৪ শতাংশ মানুষকে দুই ডোজ টিকা দিয়ে এগিয়ে আছে মালদ্বীপ। সবচেয়ে পেছনে আছে মিয়ানমার। দেশটির ৮ শতাংশ মানুষ দুই ডোজ করে টিকা পেয়েছেন।
Discussion about this post