হার্টবিট ডেস্ক
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেডিকেটেড করোনা ইউনিটে দায়িত্বপ্রাপ্ত করোনা যোদ্ধাদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ চিকিৎসক-নার্স প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন। বাকি ৬৬ শতাংশ চিকিৎসক-নার্স করোনাকালে দায়িত্ব পালন করলেও প্রণোদনার বরাদ্দ থেকে এখনো বঞ্চিত রয়েছেন। এ নিয়ে করোনার সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে খ্যাত চিকিৎসক ও নার্সদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল অফিস সূত্র মতে, ডেডিকেটেড করোনা ইউনিটে দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩৬২ চিকিৎসকের মধ্যে ১৪৯ জন প্রণোদনার বরাদ্দ হিসেবে মূল বেতনের সমপরিমাণ দুই মাসের টাকা পেয়েছেন। ১০২৮ জন সিনিয়র স্টাফ নার্সদের মধ্যে ৩৪০ জন একই হারে প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন। গত অর্থবছরে প্রণোদনার বরাদ্দকৃত টাকার পরিমাণ ছিল ২ কোটি ২৯ লক্ষ ৫৮ হাজার ১৪০ টাকা। এই হিসেবে ৩৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ চিকিৎসক নার্স প্রণোদনার বরাদ্দের টাকা পেয়েছেন। এখনও ২১৩ জন চিকিৎসক ও ৬৮৮ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স প্রণোদনার বরাদ্দের টাকা পাননি। এছাড়া করোনাকালে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ১৪৬ জন চিকিৎসক, ৪৫০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ৯৫ কর্মচারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এদের মধ্যে শাখাল বেগম নামে একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
এখনও প্রণোদনার বরাদ্দের টাকা না পাওয়ায় চিকিৎসক ও নার্সদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার আনিসুর রহমান জানান, ডেডিকেটেড করোনা ইউনিটে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করলেও সহকারী অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পর্যায়ের চিকিৎসকদের প্রণোদনার বরাদ্দ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ অমানবিক এবং দ্বৈতনীতির বাস্তবায়ন করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পার হয়ে গেলেও অনেক চিকিৎসক এখনও প্রণোদনার বরাদ্দের টাকা পায়নি।
এদিকে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল শাখার সভাপতি লুৎফর রহমান জানান, করোনা ইউনিটে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাড়ে চারশ সিনিয়র স্টাফ নার্স করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সেবা করলেও এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ নার্স প্রণোদনার বরাদ্দের টাকা পায়নি। যারা এখনও টাকা পায়নি তাদের মাঝে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। চাপা ক্ষোভ নিয়ে এখনও এসব নার্সরা করোনা ইউনিটে রোগীদের সেবা করে যাচ্ছে। বিষয়টা বিবেচনায় এনে দ্রুতই এখনও যারা প্রণোদনার বরাদ্দের টাকা পায়নি তাদের টাকা পাওয়ার ব্যাপারে দ্রুতই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে এমনটাই দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাক্তার ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজী জানান, চলতি অর্থবছরে প্রণোদনার বরাদ্দের জন্য দ্বিতীয় দফায় ১৭৯ জন চিকিৎসক ও ৫৮০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্সের নামের তালিকা স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে তারা প্রণোদনার টাকা পেয়ে যাবেন। তিনি আরও জানান, তৃতীয় দফায় যারা বাকি আছেন তাদের নামের তালিকা স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠানোর কাজ প্রক্রিয়াধীন। ডেডিকেটেড করোনা ইউনিটে দায়িত্ব পালন করেছেন চিকিৎসক নার্স প্রত্যেকেই প্রণোদনার বরাদ্দের টাকা পাবেন এমনটাই জানিয়েছেন উপ-পরিচালক।
Discussion about this post