হার্টবিট ডেস্ক
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশান-২ অবস্থিত হোটেল আমারিতে ‘ফাইলেরিয়াসিস নির্মূল, কৃমি নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষুদে চিকিৎসক কার্যক্রম’ নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালিক বলেছেন, খুদে ডাক্তার কর্মসূচি উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। শিক্ষার্থীরা নিজেরাও জানবে, অন্য শিক্ষার্থীকেও জানাবে এবং পরামর্শের পাশাপাশি তাদের সেবা দেবে। এটা একটি ভিন্নধর্মী উদ্যোগ।
এর আগে শিশু ডাক্তারদের কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাইয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এসময় কৃমির ওষুধ খাওয়ানো কর্মসূচি সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক বছরে চার কোটি শিক্ষার্থীকে কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়। যা দুই ধাপে হলে ৮ কোটি। বিশাল একটি কাজ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও এ কাজে যথেষ্ট সহযোগিতা করে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শিশুদের উৎসাহ দেওয়া দরকার। তারাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাদের মধ্য থেকেই ভবিষ্যৎ চিকিৎসক হবে।
শিশুর মাধ্যমে শিশুদের স্বাস্থ্য-শিক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১১ সাল থেকে খুদে ডাক্তার কর্মসূচি শুরু করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রতিশ্রেণি বা সেকশনের জন্য তিনজন হিসেবে ক্ষুদে ডাক্তার নির্বাচন করা হয়। সেজন্য প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ, সপ্তম এবং নমব শ্রেণি থেকে শিক্ষার্থী বাছাই করা হয়। বাছাই করা এসব শিক্ষার্থীদের ক্ষুদে ডাক্তার উপাধি দিয়ে একজন শ্রেণি শিক্ষক বা গাইড শিক্ষকের মাধ্যমে তাদের কার্যাবলী সম্পর্কে অবহিত করা হয়।
এসময় শিশু চিকিৎসকদের কাজের বিষয়বস্তু উল্লেখ করে কর্মকর্তারা বলেন, তারা নির্ধারিত শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাস্থ্য বার্তা দেওয়া, বছরে দুইবার জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহে কৃমিনাশক ওষুধ সেবন, দুইবারেই শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা (ওজন, উচ্চতা ও দৃষ্টি শক্তির পরিমাপ) করা। এছাড়া স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন দিবসে সক্রিয় অংশ নেওয়া হচ্ছে ক্ষুদে ডাক্তার দলের অন্যতম প্রধান কাজ। যা একজন গাইড শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে থাকে।
স্বাস্থ্য পরীক্ষার উদ্দেশ্য
১. শিক্ষার্থীদের উচ্চতা, ওজন পরিমাপ এবং দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করা।
২. শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ উচ্চতা, ওজন ও দৃষ্টিশক্তি সম্পর্কে সচেতন করে তোলা
৩. উচ্চতা, ওজন ও দৃষ্টিশক্তির কোনো সমস্যা থাকলে তা প্রতিকারের ব্যবস্থা করা।
দেশের সব প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এটাকে আরও বেগবান করতে এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্ষুদে ডাক্তার কার্যক্রম চালু করতে ২০১৮ সালের ২২ আগস্ট থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের সব সিটি করপোরেশনের জোনাল মেডিক্যাল অফিসার, জেলার সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা পর্যায় থেকে সব মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের নিয়ে একদিনের প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।পরবর্তীতে ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকসহ দেশের সব স্বাস্থ্য পরিদর্শক, জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক, প্রথম শ্রেণির পৌরসভার মেডিক্যাল অফিসার বা স্বাস্থ্য কর্মীদের সমন্বয়ে কৃমি নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষুদে ডাক্তার কার্যক্রম মাঠ পর্যায়ে জোরদার এবং সফলভাবে বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে একদিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরুও করা হলেও করোনার কারণে সেই কার্যক্রম প্রায় বছরখানেক বিঘ্নিত হয়ে ২০২১ সালের এপ্রিলে সেটি সফল হয়।
আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে পালিত হবে ২৫তম জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম।
Discussion about this post