হার্টবিট ডেস্ক
প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় শোচনীয়ভাবে চলছে মাদারীপুর সদর হাসপাতালসহ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো। সেখানে চিকিৎসক ও দক্ষ জনবল সংকটের পাশাপাশি রয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধেরও অভাব। চিকিৎসা সরঞ্জাম নষ্ট হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
মাদারীপুর সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালটি ১০০ শয্যার হলেও জনবল রয়েছে ৫০ শয্যারও কম। শিশু বিশেষজ্ঞ, চক্ষু বিশেষজ্ঞ, রেডিওলজিস্ট, ফিজিওথেরাপিসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের চিকিৎসক নেই। ইসিজি মেশিনটিও নষ্ট। দক্ষ টেকনিশিয়ান না থাকায় করা যাচ্ছে না আলট্রাসনোগ্রাম ও উন্নতমানের পরীক্ষা।
অপরদিকে, সনোলজিস্ট না থাকায় হাসপাতালটিতে আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন থাকলেও অব্যবহৃত থাকছে সেটি। ফলে রোগীদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা ঢাকায় যেতে হচ্ছে। এদিকে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ছয় তলা ভবন নির্মাণ করে ২৫০ শয্যায় উন্নতিকরণের লক্ষ্য থাকলেও দুই বছরে শুরু হয়নি কার্যক্রম। এরপরও ছয়তলার ওপর আরও পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে বর্ধিত দুটিতলা নির্মাণ কাজ চলছে সেখানে।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রহিম মুন্সী বলেন, একটি শয্যাও খালি নেই। তাই জরুরি বিভাগে ডাক্তার দেখাইয়া চলে যাচ্ছি। অনেকে হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে আছে।
সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী বলেন, লোকজন হাসপাতালে সেবা নিতে এসে প্রবেশপথেই ময়লা আবর্জনা দেখতে পাচ্ছেন। হাসপাতালের ভেতরেও নানা জায়গায় ময়লা ফেলে রাখা হচ্ছে। এতে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকা অত্যন্ত দুঃখজনক।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নূরুল ইসলাম বলেন, আমাদের সদর হাসপাতালে ২২ জন মেডিকেল অফিসার থাকার কথা। সেখানে আছেন মাত্র ১৪ জন। আমরা বার বার স্বাস্থ্য বিভাগে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু তারপরও চিকিৎসক পাচ্ছি না। এ কারণে অনেক সময় রোগীদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা দিতে পারি না। তবে আমাদের চেষ্টার কমতি থাকে না।
লোকবল সংকট আর টেকনিশিয়ানের অভাবে প্রায় মুখ থুবড়ে পড়েছে জেলার কালকিনি ও শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দুটোও। তবে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট নেই। অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে সেখানে চিকিৎসার মান আরও বাড়বে বলে দাবি করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ।
সেবা পেতে ভোগান্তি আর জনবল বাড়ানোর বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত সির্ভিল সার্জন ডা. একরামুল কবির জানান, আমরা জোর চেষ্টা করছি সদর হাসপাতালটিতে ২৫০ শয্যা চালু করার। ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেয়েছি। এখন শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে লোকবল নিয়োগ দিলেই চালু করা সম্ভব হবে। আর সাধারণ রোগীরা যেন সঠিক চিকিৎসাসেবা পায়, সে বিষয়ে আমরা কঠোর মনিটরিং করে থাকি।
Discussion about this post