হার্টবিট ডেস্ক
সারা বিশ্বে ক্ষুধা নিবারণ কার্যক্রম ও ফলাফলের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সের (জিএইচআই)-২০২১ এর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর)। এতে দেখা যায়, এবারের তালিকায় বাংলাদেশ ৭৬, পাকিস্তান ৯২ এবং ১০১ নম্বরে রয়েছে ভারত।
২০২০ সালের বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১০৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৭৫তম। ২০১৯ সালে একই সূচকে ১১৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৮৮। এ সূচকে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ছিল ৮৬তম।
গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মতো দেশগুলো ২৮ দশমিক ছয় পয়েন্ট পেয়ে ‘গুরুতর’ অবস্থা থেকে ১৯ দশমিক এক পয়েন্ট কমে নেমে এসেছে ‘মধ্যপন্থী’ হিসাবে।
১১৬টি দেশকে নিয়ে গবেষণার তালিকায় নেপালও বাংলাদেশের সঙ্গে ৭৬ নম্বরে রয়েছে এবার। ক্ষুধা সূচকের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চীন।
বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের মাধ্যমে বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ের ক্ষুধার মাত্রা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে শূন্য পেলে ধরা হয়, ওই অঞ্চলে ক্ষুধা নেই। আর এই সূচকে ১০০ হলো সর্বনিম্ন মাত্রা, অর্থাৎ এটি ক্ষুধার সর্বোচ্চ মাত্রাকে বোঝায়।
প্রতিবছর আয়ারল্যান্ডের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড’ ও জার্মান সংস্থা ‘ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফ’ যৌথভাবে বিশ্বের দেশগুলোর ক্ষুধার পরিমাণ নির্ধারণ করে তালিকা প্রকাশ করে থাকে। এতে নির্ণায়ক হিসোবে ধরা হয়, সমসাময়িক অর্থনৈতিক অবস্থান, শিশুস্বাস্থ্য ও সম্পদ বণ্টনের মতো বিষয়গুলো। অপুষ্টির পরিমাণ, পাঁচ বছরের কমবয়সী শিশুদের উচ্চতা অনুযায়ী কম ওজন, পাঁচ বছরের কমবয়সী শিশুদের বয়স অনুযায়ী কম উচ্চতা এবং শিশু মৃত্যুর হার হিসাব করে ক্ষুধার মাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
ভারতের পরে আছে পাপুয়া নিউগিনি, আফগানিস্তান, নাইজেরিয়া, কঙ্গো, মোজাম্বিক, সিয়েরা লিওন, পূর্ব তিমুর, হাইতি, লাইবেরিয়া, মাদাগাস্কার, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, চাদ, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, ইয়েমেন ও সোমালিয়ার মতো ১৫টি দেশ।
এবারের সূচকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে আফ্রিকার দেশ সোমালিয়া। জিএইচআইতে এ দেশটির পয়েন্ট খুব কম, যা উদ্বেগজনক। আরও পাঁচটি দেশের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে জানা গেছে।। সেই দেশগুলো হচ্ছে, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, চাদ, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, মাদাগাস্কার ও ইয়েমেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৪৭টি দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা সূচকে তাদের লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থ হবে। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়নের জিরো হাঙ্গার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানোর ক্ষেত্রেও সংশয় থেকে যাচ্ছে।
কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড প্রধান নির্বাহী ডমিনিক ম্যাকসোর্লি বলেন, ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব, করোনা মহামারি এবং দীর্ঘদিন ধরে চলা সহিংস ঘটনা, ক্ষুধা সূচকের লক্ষ্যপূরণে বাধা সৃষ্টি করে। তিনি আরও বলেন, গত বছর থেকেই খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টিজনিত সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
সূত্র: দ্যা টেলিগ্রাফ, আনন্দবাজার
Discussion about this post