হার্টবিট ডেস্ক
যারা নতুন মা হয়েছেন তাদের বডি শেপ বা শারীরিক গঠন ঠিক রাখা একটা চ্যালেঞ্জই বটে। শরীর ঠিক রাখতে অনেকেই নিয়মিত যোগাসন করে থাকেন।
সন্তানপালনের সঙ্গে সঙ্গে নিজের যত্ন নেওয়াও খুব জরুরি। একজন মেয়ে যখন মা হয়, তখন তার শারীরিক ও মানসিক নানা পরিবর্তন আসে। সব কিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে চলতে পারলেও অনেকের কাছেই মাতৃত্ব পরবর্তী শারীরিক গঠনের পরিবর্তন বা ওজনবৃদ্ধি বেশ চাপের কারণ হয়। কারণ, আগের মতো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে গেলে যে কসরত দরকার, সেটা মাতৃত্বকালীন অবস্থায় করা খুব সহজ ব্যাপার নয়। এই সময় তাই সন্তানের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি নিজের একটু হলেও খেয়াল রাখুন। এই সময় কিছু ব্যায়াম শারীরিক ও মানসিকভাবে চাঙা করতে পারে। সঙ্গে ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যাক পেন নিরাময়ে সহায়ক হয়।
১. যোগা ব্রিদিং: প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দু-হাত দেহের দু-পাশে রেখে চোখ বন্ধ করে শ্বাস নিতে নিতে দু-হাত ধীরে ধীরে মাথার ওপরে তুলুন। আবার ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে দু’হাত নামিয়ে দেহের দু-পাশে রাখুন, এভাবে দশবার অভ্যাস করুন।
২. আপার বডি টুইস্টিং: প্রথমে দেড় থেকে দু’ফুট পরিমাপে দু-পা ফাঁক করে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দু’হাতের তালু দিয়ে কোমরের দু’পাশে ধরতে হবে। এবার শ্বাস নিতে নিতে ডান দিকে কোমরটা মোচড় দিতে হবে এবং শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে হবে, আবার শ্বাস নিতে নিতে কোমরটা বামদিকে মোচড় দিতে হবে। শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে হবে। এভাবে পাঁচবার অভ্যাস করতে হবে।
৩. সাইড বেন্ডিং: জোড়া হাত মাথার দু’পাশে তুলে শ্বাস নিতে নিতে ডান দিকে যতটা সম্ভব বেঁকাতে হবে ও শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে দেহ সোজা করতে হবে। আবার শ্বাস নিতে নিতে দেহটাকে বামদিকে যতটা সম্ভব বেঁকাতে হবে ও শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে সোজা করতে হবে।
৪. লেগ রেইস উইথ মুভমেন্ট: চিত হয়ে শুয়ে কোমরের নিচে দুটো হাত রেখে দু’পা মাটি থেকে ৩০ ডিগ্রি ওঠানো ও নামানো করতে হবে।
৫. লিফটিং অফ বাটাক: চিত হয়ে শুয়ে দুটো পা ভাঁজ করে রেখে হিপ বা নিতম্ব উপরে তোলা ও নামানো। এভাবে দশবার অভ্যাস করতে হবে। সময় পেলেই করতে পারেন যে আসনগুলো
১. পবন মুক্তাসন: চিত হয়ে শুয়ে প্রথমে ডান পা, তারপর বাম পা ও তারপর দুটি পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করে পেট ও বুকের সঙ্গে দু’হাত দিয়ে চেপে ধরতে হবে। সঙ্গে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে মনে মনে দশ গুনুন।
উপকারিতা: পেটে বায়ু, অম্বল, আমাশয়, কোষ্ঠবদ্ধতা সারাতে এবং পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
২. উত্থানপদাসন: চিত হয়ে শুয়ে দু’হাত শরীরের দু-পাশে রেখে দু’পা মাটি থেকে ৩০ ডিগ্রি ওপরে তুলে ধরে রাখতে হবে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে ও মনে মনে দশ গুনতে হবে।
উপকারিতা: পেটের চর্বি কমাতে ও পেটের পেশি মজবুত করতে সাহায্য করে।
৩. যষ্টি আসন: চিত হয়ে শুয়ে দু’হাত মাথায় দু’পাশে পাশাপাশি রেখে এক হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে অপর হাতের বুড়ো আঙুল ধরে শরীরটাকে টানটান অবস্থায় রাখতে হবে।
উপকারিতা: কোমরে ব্যথা, স্নায়বিক দুর্বলতা, অলসতা, অবসাদ দূর করে।
৪. কপালভাতি: বজ্রাসনে বা সুখাসনে বসে জোরে ফুঁ দিয়ে মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে হবে সঙ্গে সঙ্গে পেট ভেতরের দিকে টানতে হবে। এভাবে ২০ বার করতে হবে, এরপর একটু থেমে আবার ২০ বার করতে হবে।
উপকারিতা: পেটে বায়ু, আমাশয়, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্ষুধামান্দ্য, ফ্যাটি লিভার ও পেটে চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
৫. সূর্যভেদ প্রাণায়াম: পদ্মাসনে বা সুখাসনে মেরুদণ্ড সোজা করে বসে ডান হাতের অনামিকা ও কনিষ্ঠা আঙুল দ্বারা বাম নাসাপথ বন্ধ করে ধীরে ধীরে ডান নাসাপথ দিয়ে শ্বাস গ্রহণ করতে হবে। এরপর ডান নাসাপথ বন্ধ করে ধীরে ধীরে বাম নাসাপথ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে হবে। আবার বাম নাসাপথ দিয়ে শ্বাস নিয়ে বাম নাসাপথ বন্ধ করে ডান নাসাপথ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে হবে। এটা একবার হল। এরূপ দশবার করতে হবে। এরপর শবাসনে বিশ্রাম নিতে হবে।
Discussion about this post