হার্টবিট ডেস্ক
স্বাদের কারণে মিষ্টি কুমড়া অনেকেরই পছন্দের একটি সবজি। সাধারণ এই সবজিটি মানবদেহের পুষ্টির যোগান দিতে অসাধারণ এক উৎস। এতে ভিটামিন-এ, বি-কমপ্লেক্স, সি, ই, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, জিংক, ফ্লেভনয়েড পলি-ফেনলিক, অ্যান্টিঅক্সিডেণ্ট উপাদানসহ শরীরের জন্য উপকারী আরো অনেক উপাদান রয়েছে।
মিষ্টি কুমড়ায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানবদেহকে ক্যান্সার ও আলঝেইমার রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। এছাড়াও নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খেলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়-
চোখ ভালো রাখে : মিষ্টি কুমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে। বিটাক্যারোটিন সমৃদ্ধ এই সবজিটি চোখের জন্য খুবই ভালো। বয়সজনিত রোগ বিশেষ করে রেটিনার বিভিন্ন অসুখ প্রতিরোধে মিষ্টি কুমড়া বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এটি ভিটামিন এ-এর অভাবজনিত অন্যান্য রোগেও বেশ কার্যকরী।
শরীর গঠন করে : গাজরের তুলনায় মিষ্টি কুমড়াতে বেশি পরিমাণে বিটাক্যারোটিন পাওয়া যায়। গাজরে যেখানে ১৩ মিলিগ্রাম বিটাক্যারোটিন রয়েছে, মিষ্টি কুমড়াতে সেখানে ৩৩ মিলিগ্রাম বিটাক্যারোটিন রয়েছে। মিষ্টি কুমড়া ফ্রি রেডিকালের কারণে ক্ষতি প্রতিরোধ করতে পারে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে : অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ মিষ্টি কুমড়া ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোলেস্টেরল কম রাখতে সাহায্য করে। আর্টারির দেয়ালে চর্বির স্তর জমতে বাধা দেয়। ফলে মিষ্টি কুমড়া নিয়মিত খেলে হৃদরোগও প্রতিরোধ করা যায়।
হৃৎপিণ্ড ভালো রাখে : মিষ্টি কুমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম পাওয়া যায়। এসব উপাদান হাইপারটেনশন এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। এছাড়া মিষ্টি কুমড়ার বিভিন্ন উপাদান ইউরিনেশনের সমস্যা কমায় ও কিডনিতে পাথর হতে বাধা দেয়।
হজম সহায়ক : মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকায় তা সহজেই হজম হয়। হজমশক্তি বৃদ্ধি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে মিষ্টি কুমড়া ভূমিকা রাখে।
ত্বক উজ্বল করে : মিষ্টি কুমড়াতে প্রচুর পরিমাণে জিংক ও আলফা হাইড্রোক্সাইড পওয়া যায়। জিংক ইমিউনিটি সিস্টেম ভালো রাখে ও অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়া বয়সের বলিরেখা মুছে ত্বক উজ্বল করতেও মিষ্টি কুমড়া সাহায্য করে।
দেহের জ্বালাপোড়া সমস্যা দূর করে : কুমড়ার ক্যারটিনয়েড এর জন্য এর রঙ উজ্জ্বল কমলা হয়ে থাকে এবং এটি দেহের জ্বালাপোড়ার সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। এই সবজির বিটা-ক্যারোটিন উপাদান মানবদেহের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। আলফা-ক্যারোটিন উপাদান দেহে টিউমার হওয়া থেকে রক্ষা করে।
ব্যায়াম করার পর : ব্যায়াম করার পর খাদ্য হিসেবে কুমড়া খাওয়া যেতে পারে। তার সাথে মিষ্টি আলুও খাওয়া যেতে পারে। এই খাবার মানবদেহে প্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেটের জোগান দিয়ে থাকে। কুমড়া মানবদেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে তো রাখেই, পাশাপাশি দেহের সুস্থ পেশি তৈরিতেও সাহায্য করে। যারা অ্যাথলেটিক ট্রেনিং নিয়ে থাকেন, তাদের জন্য কুমড়ো বেশি করে খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি।
গর্ভবতীদের জন্য : গর্ভাবস্থায় মিষ্টি কুমড়া খাওয়া উচিত। কারণ এটি দেহে অনেক বেশি শক্তি যোগায় ও গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যের জন্য কুমড়া অনেক উপকারী খাদ্য। এটি হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ও কুমড়ার আয়রন গর্ভে থাকা শিশুকে অক্সিজেন দিতে সাহায্য করে । পাশাপাশি মায়ের রক্তশূন্যতা রোধ করে।
উচ্চ রক্তচাপ কমায় : কুমড়াতে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম থাকায় এটি মানবশরীরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন-সি ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে থাকে। তাছাড়া কুমড়োর বিভিন্ন উপাদান দেহের কিডনি, লিভার, হৃদৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখে। কুমড়ার ফাইবার দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রেখে দেহকে স্ট্রোকের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে। সূত্র: বোল্ড স্কাই
Discussion about this post