হার্টবিট ডেস্ক
করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এখনও প্রায় ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ টিকা নিতে আগ্রহী নয়। বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘প্লস ওয়ান’-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানের ৪ হাজার ১৭৫ জনের মধ্যে এ গবেষণা চলান। ছয় মাস আগে গবেষণা কাজটি করা হলেও বর্তমানে এ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে দাবি গবেষক দলের।
গবেষণায় দেখা গেছে, ৬০ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ টিকা নিতে আগ্রহী হলেও এখনও ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশ লোক নিতে চান না টিকা। এদের মধ্যে অনেকে মনে করেন, প্রাকৃতিকভাবেই তারা সুরক্ষিত।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, প্রায় ৯২ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষই করোনার টিকা সম্পর্কে ধারণা রাখেন। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তারা এ ধারণা পেয়েছেন। টিকা সম্পর্কে জানলেও ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন, টিকা নিলে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ৪৬ শতাংশ মনে করেন, টিকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। আবার ১৬ দশমিক ৬ শতাংশের দাবি, করোনা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে।
গবেষক দলের প্রধান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পাল বলেন, আমাদের গবেষণাটি করোনার টিকাদান কার্যক্রমের শুরুর দিকে করা। তখন মানুষের মধ্যে এ টিকা সম্পর্কে তেমন কোনও সচেতনতা ছিল না। যদিও বর্তমানে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়ছে। তবে এখনও নিম্ন আয়ের বিশাল একটি অংশ করোনার টিকার আওতায় আসেনি। গণটিকার মতো কার্যক্রম আরও বাড়ানো হলে এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
গবেষণা দলের আরেক সদস্য চবি প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. দ্বৈপায়ন শিকদার বলেন, গবেষণা কাজটি বেশ কিছুদিন আগের। গবেষণার পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে প্রচার হতে বেশ কিছুদিন সময় লেগে গেছে। বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে তারতম্য থাকতে পারে। তবে ফলাফল যা-ই হোক, গণটিকার মতো কার্যক্রম আরও প্রসারিত করা প্রয়োজন।
চিকিৎসকদের মতে, করোনার টিকা গ্রহণ করার পর কারও হাতে ব্যথা ও ফুলে যাওয়া, মাথাব্যথা, জ্বর, অবসাদ দেখা দেয়। শরীরে অ্যান্টিজেন প্রবেশ করার পর এ ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, যা স্বাভাবিক। এর কারণ, শরীরে বাইরে থেকে প্রবেশ করা কোনও কিছুর উপস্থিতি শনাক্ত হওয়া মাত্রই শ্বেতরক্তকণিকাগুলো ছড়িয়ে পড়ে।
গবেষণা সহযোগী ছিলেন পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনার্দন মহান্ত ও সঞ্জীব ঘোষ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সুজত পাল। এছাড়া যুক্ত ছিলেন আকিব জাবেদ, ফাহমিদা ইয়াসমিন, সুরঞ্জনা শিকদার, বিশ্বজিৎ চৌধুরী, তপন কুমার নাথ।
Discussion about this post