হার্টবিট ডেস্ক
দেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দুই সিটি করপোরেশনের কোনো অভিযানই কাজে আসছে না। গত তিন দিনে নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় এক হাজার। যাদের বেশির ভাগই শিশু।
এদিকে, চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্তদের জন্য নির্ধারিত হাসপাতালের সক্ষমতা না থাকায় রোগীর চাপ বাড়ছে শিশু হাসপাতালে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলতি মাসেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসার সম্ভাবনা নেই।
হাসপাতালগুলোর গত কয়েক মাসের চিত্র এমনই। প্রতিদিন শুধুমাত্র ঢাকা শিশু হাসপাতালেই ভর্তি হচ্ছে ১০-১৫ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসা নিচ্ছে ৬৭ শিশু।
ঢাকা শিশু হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজনরা জানান, সিটি করপোরেশনের লোকেরা কি করে ওষুধ ঠিকমত দেয় না। কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে শিশু হাসপাতালে বাচ্চাকে নিয়ে এসেছি।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য নির্ধারিত ছয়টি হাসপাতালের মধ্যে রোগীর চাপ সবচেয়ে বেশি মিটফোর্ড হাসপাতালে। এরপরই রয়েছে ঢাকা শিশু হাসপাতাল। চিকিৎসরা বলছেন, অন্য হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা না থাকায় এখানে চাপ বাড়ছে।ঢাকা শিশু হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, ১০ থেকে ১৫ শিশু প্রতিদিনই এখানে ভর্তি হচ্ছে।
পরামর্শ হচ্ছে জ্বরটা যদি প্রচণ্ড আকারে হয়, মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা ও বমি হয় তাহলে অবশ্যই হাসপাতালে আনতে হবে আর ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে হবে।চলমান এই ডেঙ্গু পরিস্থিতি চলতি মাসেও নিয়ন্ত্রণে আসার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, বৃষ্টিপাত যতদিন পর্যন্ত না থামছে। ততদিন পর্যন্ত ডেঙ্গু প্রজনন কমবে না। জনগণকে সচেতন হতে হবে। এ মাসেও ডেঙ্গুর প্রকোপ কমবে বলে মনে হচ্ছে না। চলতি মৌসুমে সারাদেশে সাড়ে ১২ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণসমূহ:
১। প্রচণ্ড জ্বর
২। তীব্র মাথাব্যথা
৩। বমি
৪। শরীরে লাল র্যাশ ওঠা
৫। মাংসপেশীতে ব্যথা ৬।
চোখের পেছনে ব্যথা
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়:
১। মশার প্রজনন স্থল ধ্বংস করা।
২। ঘর ও আশপাশের যে কোনো পাত্রে বা জায়গায় জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা যাতে এডিস
মশার লাভা বিস্তার না করতে পারে।
৩। ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, বালতি, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা, নারকেলের মালা, কনটেইনার, মটকা, ব্যাটারি সেল ইত্যাদি প্রতিনিয়ত পরিষ্কার করা; যাতে এডিস মশা বিস্তার না করতে পারে।
৪। রাতে বা দিনে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা।
৫। স্বাস্থ্যকর পরিবেশ স্থাপন করা।
৬। মশা নিধনের ওষুধ, স্প্রে কিংবা কয়েল ব্যবহার করা।
৭। জানালাতে মশা প্রতিরোধক নেট ব্যবহার করা।
সোমবার ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ৮০ জন ও দেশের অন্যান্য বিভাগগুলোতে ১৯১ জন রোগী ভর্তি আছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসে সাত হাজার ৬৯৮ জনের, জুলাই মাসে দুই হাজার ২৮৬ জনের, জুন মাসে ২৭২ জনের এবং মে মাসে ৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে।
Discussion about this post