হার্টবিট ডেস্ক
চট্টগ্রাম নগরীর খুলশীস্থ হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল অবশেষে বকেয়া বিল মাথায় নিয়ে শেষ পর্যন্ত বন্ধই হচ্ছে । আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের পর পুরোপুরি গুটিয়ে নেয়া হচ্ছে নানা আলোচনা-সমালোচনা নিয়ে যাত্রা শুরু হওয়া এ হাসপাতালটি। ইতোমধ্যে হাসপাতালের সংশ্লিষ্টরা জরুরি বৈঠকে পুরোপুরি বন্ধের সিদ্ধান্তও নিয়েছেন। বৈঠক সূত্রে এসব জানা যায়।
এদিকে, বকেয়া বিলের পরিমাণে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করেনি সংশ্লিষ্টরা। কর্তৃপক্ষ জানায়, বিদ্যুৎ বিলসহ কয়েকটি খাতের বিল এখনও পরিশোধ করা যায়নি। তবে সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর (সোমবার) সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বির সভাপতিত্বে হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল বন্ধের বিষয়ে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাতে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি, বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. লিয়াকত আলী, হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালের ইনচার্জ সহকারী পরিচালক ডা. মনোয়ার হোসেন, জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আবদুর রবসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সভায় আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের পর হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল পুরোপুরি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে ভবিষ্যতে কখনো সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে তা পুনরায় চালু করা হবে এমন সিদ্ধান্তও হয় বৈঠকে। এছাড়া বিদ্যুৎ বিলসহ বকেয়া বিলগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধ, বন্ধের বিষয়ে হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালের মূল মালিকদের অবহিত করা, যাদের অবদানে এ কোভিড মহামারির শুরুর দিকে এ হাসপাতাল চালু হয়েছে, তাদের ধন্যবাদ পত্র প্রেরণের বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয় এ বৈঠকে।
বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ও জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা, সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘সংক্রমণ এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যেহেতু আমাদের অন্য হাসপাতালে এখন শয্যা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে, তাই হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে এটি বন্ধ করা হবে।’
বিলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যেহেতু সড়ক ও জনপদ বিভাগ থেকে পাওয়া একটি জেনারেট ব্যবস্থা ছিল। তবে বিদ্যুৎ বিলসহ কিছু বকেয়া বিল আছে, তাও দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা হবে।’
এর আগে গেল বছরের ২০ মে সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় চালু করা হয় একসময়ের অভিজাত এ হাসপাতালটি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা এ হাসপাতালটি চালু করতে অর্থায়ন করেন চট্টগ্রাম প্রাইভেট ক্লিনিক ও নার্স এসোসিয়েশন। কিন্তু হাসপাতালটি চালু হওয়ার পর থেকেই রোগীর শূন্যতায় ভোগতে হয়। এরমধ্যে যারাই চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন, তাও ছিল সীমিত সংখ্যক। আবার চিকিৎসা নিতে ভর্তি হওয়াদেরও দুর্ভোগের অভিযোগ কম ছিল না। এমনও হয়েছে, সকালে ভর্তি হয়ে রাতেই অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর হয়েছেন কেউ কেউ। এরমধ্যে গত ডিসেম্বরের পর দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ ছিল হাসপাতালটি। সবশেষে গত জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ২৫ জন রোগী নিয়ে কিছুদিন চললেও, তা অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই রোগী শূন্য হয়ে পড়ে।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি আরও বলেন, ‘ এরমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, তারা সেখানে সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করবেন। এরপর সেখানে থাকা শয্যাসহ যন্ত্রপাতিগুলো যারা দিয়েছে, তাদের তা বুঝিয়ে দেয়া হবে। আর যেগুলো অনুদান হিসেবে পাওয়া গেছে, তা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হবে। ইতোমধ্যে ওই হাসপাতালে (হলি ক্রিসেন্ট) নিয়োজিত চিকিৎসকদের জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।’
Discussion about this post