হার্টবিট ডেস্ক
বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ক্যান্সার ও করোনা মহামারিতে বহুল ব্যবহৃত দেশী ও বিদেশী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ঔষধ এবং ঔষধ তৈরির সরঞ্জামসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- তরিকুল ইসলাম, সৈয়দ আল মামুন, সাইদুল ইসলাম, মনোয়ার, আবদুল লতিফ, নাজমুল ঢালী ও সাগর আহমেদ মিলন।
এসময় তাদের হেফাজতে থাকা একমি কোম্পানির মোনাস ৭০০ বক্স, স্কয়ার কোম্পানির সেকলো ৫০ বক্স, জেনিথ কোম্পানির ন্যাপ্রোক্সেন প্লাস ৭৪৮ বক্সসহ অন্যান্য কোম্পানির বিপুল পরিমাণ নকল ঔষধ, ঔষধ তৈরির মেশিন, ডায়াস ও ঔষধের খালি বক্স উদ্ধার করা হয়।
গত বুধবার ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর কাজলা, আরামবাগ ও মিটফোর্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, একটি অসাধু চক্র নকল ঔষধ বাজারজাত করছে। এ চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। গত বুধবার ধারাবাহিক অভিযানে এ চক্রের ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি প্রধান বলেন, গ্রেপ্তারকৃত তরিকুল ইসলাম ও সৈয়দ আল মামুন কারখানা স্থাপন করে জীবন রক্ষাকারী এসকল নকল ঔষধ তৈরি করেন। সাইদুল ইসলাম এ নকল ঔষধ তৈরির প্রধান কারিগর, মনোয়ার এ্যালো এ্যালো ফয়েল ও আবদুল লতিফ ঔষধের পাতায় ছাপ দেয়ার গুরুত্বপূর্ণ উপাদানসহ সিলিন্ডার সরবরাহ করতেন। গ্রেপ্তারকৃত নাজমুল ঢালী ঔষধের বক্সে ছাপ দেয়ার পর তৈরিকৃত এসকল নকল ঔষধ গ্রেপ্তারকৃত সাগর আহমেদ মিলনের নেতৃত্বে মিটফোর্ডের কয়েকটি গ্রুপের মাধ্যমে বাজারজাত করতেন।
তিনি আরো বলেন, এই সকল ঔষধ এর ইনগ্রিডিয়েন্টস এ মূলত প্রয়োজনীয় কোন সক্রিয় উপাদান থাকে না। এছাড়া মেইন স্টার্চ নিম্ন গ্রেডের ব্যবহৃত হয়। এমনকি স্টেরয়েড ও ডাই ব্যবহৃত হতে পারে। নন ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রেডের এসব কেমিক্যাল সেবনের ফলে মানুষের কিডনি, লিভার, হৃদযন্ত্রের মারাত্নক ক্ষতি হতে পারে। এসকল নকল ঔষধ সাধারণ মানুষের জন্য মরণ ফাঁদ।
ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, বিশ্ব বাজারে ১৪৫ টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ঔষধ। ভেজাল এবং নকল ঔষধ এই সুনাম এবং আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। মফস্বলের ঔষধ ফার্মেসিগুলোকে টার্গেট করে একটি সংঘবদ্ধ অসাধু চক্র সারাদেশে ভেজাল ও নকল ঔষধ ছড়িয়ে দিচ্ছে। এ ধরণের ওষুধ মাদকের চেয়েও ভয়াবহ।
এসময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, যদি কেউ আমাদের নকল ঔষধ কারখানা সমন্ধে অবগত করেন তাহলে আমরা কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। গ্রেপ্তারকৃতদের নামে বংশাল থানায় মামলা দায়ের হয়েছে এবং আদালতের মাধ্যমে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
Discussion about this post