ডা. জাহেদ পারভেজ
করোনামুক্ত হওয়ার পরও এর ক্ষতিকর প্রভাব রয়ে যায় শরীরে। অন্যান্য সমস্যার পাশাপাশি চুল পড়ার সমস্যা প্রকটভাবে দেখা দিচ্ছে অনেকের। গুরুতর কোনো রোগ বা সংক্রমণের পর চুল পড়ার ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলা করতে গিয়ে শরীরে অনেক রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে থাকে। এর প্রভাব রয়ে যায় অনেক দিন। করোনাকালীন প্রচণ্ড মানসিক চাপও চুল পড়ার একটা বড় কারণ।
সংক্রমণমুক্ত হওয়ার পর চুল পড়তে থাকলে দুশ্চিন্তা করবেন না মোটেই। রোগবালাইয়ের পর প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০টি চুল পড়া স্বাভাবিক। এটি কয়েক মাস পর নিজ থেকেই ঠিক হয়ে যাবে।
সংক্রমণমুক্ত হওয়ার পর চুল পড়তে থাকলে দুশ্চিন্তা করবেন না মোটেই। রোগবালাইয়ের পর প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০টি চুল পড়া স্বাভাবিক।
গ্রোথ ফেজ থেকে রেস্টিং এবং এরপর শেডিং ফেজ পর্যন্ত চুলের একটি চক্র বা সাইকেল চলে। ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট জ্বর বা অন্য কোনো অসুস্থতায় শরীরে যে প্রদাহ হয় ও রাসায়নিক চাপ বাড়ে, তা চুলকে দ্রুত শেডিং ফেজে প্রবেশ করতে বাধ্য করে। একে বলা হয় টেলোজেন ইলুভিয়াম। এই সমস্যা সাময়িক এবং তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে এটি ঠিক হয়ে যায়। নতুন চুল গজিয়ে চুলের পরিমাণ আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। তবে অধিক হারে চুল পড়লে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা জেনে নেওয়া জরুরি। এ সময় পর্যাপ্ত ঘুম, সঠিক খাবার, ব্যায়াম, শরীরচর্চা, মেডিটেশন ইত্যাদি মেনে চলা জরুরি।
এ সময় চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কিছু যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। অনেক সময় এ ক্ষেত্রে হেয়ার সাপ্লিমেন্ট এবং পেপটাইড বেজড সেরাম দেওয়া হয়। ফলে দ্রুত চুল গজায়। চুল পড়ার কারণ যদি অপুষ্টি হয়, তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
যেসব বিষয় লক্ষ রাখতে হবে
● খাবারের তালিকায় যোগ করুন পর্যাপ্ত আয়রনসমৃদ্ধ খাবার।
● চুলে তেলের ব্যবহার কিছুদিন বন্ধ রাখুন।
● কাঠবাদাম, আখরোট, সেদ্ধ চিনাবাদাম, চিয়া বীজ, সবুজ শাকসবজির মতো অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি খাবার বেশি করে খান। এসব খাবার সংক্রমণ থেকে শরীরকে দ্রুত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করবে।
● শরীর আর্দ্র রাখতে হবে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
● চুলে খুশকির সমস্যা থাকলে তা দূর করুন।
● চুল ও মাথার ত্বক পরিষ্কারের জন্য মাইল্ড সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
● চুল যদি অস্বাভাবিক হারে পড়তে থাকে এবং মাথায় টাক দেখা দেয়, তবে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিন।
ডা. জাহেদ পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
Discussion about this post