হার্টবিট ডেস্ক
চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের নতুন কোনও ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা খুব একটা নেই বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) গবেষকরা। ৩০০ টি নমুনার স্পাইক প্রোটিনের জিনোম সিকোয়েন্স বিশ্লেষণের পর তারা এ দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে জানানো হয়, সম্প্রতি চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের নেতৃত্বে একদল গবেষক করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের জিনোম সিকোয়েন্সের মিউটেশন নিয়ে গবেষণা করেন। এ গবেষণায় কোভিড-১৯ সংক্রমণের শুরু থেকে এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন সময়ের ৩০০ টি নমুনা অন্তর্ভুক্ত করে সেগুলোর স্পাইক প্রোটিনের জিনোম সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ করা হয়। বিশ্লেষণের মাধ্যমে গবেষকরা মিউটেশন এবং উচ্চ সংক্রমণ করতে সক্ষম এমন করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য নতুন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি শনাক্তকরণের চেষ্টা চালান।
সিভাসু কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ ল্যাবের গবেষকগণ ২০২০ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত উক্ত ল্যাবে পরীক্ষা হওয়া নমুনার মধ্যে ৩০০ টি কোভিড-১৯ পজিটিভ নমুনার স্পাইক প্রোটিনের সিকোয়েন্সিং এবং এদের মিউটেশন বিশ্লেষণ করেন। বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬৭ টি নমুনার স্পাইক প্রোটিনের মধ্যে মিউটেশন রয়েছে। এরমধ্যে নিউক্লিওটাইডের সিঙ্গেল মিউটেশন হয়েছে ৪৩টি নমুনায় ও একের অধিক নিউক্লিওটাইডের মিউটেশন হয়েছে ২৪ টি নমুনায়। এসব মিউটেশনের কারণে স্পাইক প্রোটিনের ৪৯ টি বিভিন্ন স্থানে অ্যামাইনো এসিডের পরিবর্তন হয়েছে। তবে বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, এর দ্বারা স্পাইক প্রোটিনের গঠনের উল্লেখযোগ্য কোনও পরিবর্তন হয়নি। এসব মিউটেশনের স্থান ছিল স্পাইক প্রোটিনের S1 ডোমেইন এবং S1-S2 সাব-ইউনিট লিঙ্কার।
অ্যামাইনো এসিডসগুলোর মিউটেশনের উল্লেখযোগ্য স্থানসমূহ হচ্ছে, D614G, D138H, V213L এবং Q506H। বিশ্লেষণের আলোকে গবেষকরা দাবি করেন- চট্টগ্রাম অঞ্চলে নতুনভাবে সংক্রমণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম এমন কোনও করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি নেই। তবে গবেষক দলের ধারণা, বিভিন্ন জিনের বায়োলজিক্যাল মডেলিং দ্বারা করোনাভাইরাসের মিউটেশন সম্পর্কে আরও গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাবে।
গবেষক দলের অন্য সদস্যরা হলেন- অধ্যাপক ড. শারমিন চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, বৈজ্ঞানিক কর্মকতা ডা. ত্রিদীপ দাশ, মলিকুলার বায়োলজিস্ট ডা. প্রনেশ দত্ত, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম এবং ডা. তানভীর আহমদ নিজামী।
Discussion about this post