হার্টবিট ডেস্ক
বিএসএমএমইউতে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের শেষ বিদায়ের স্মৃতিধন্য, বাঙালির তীর্থস্থান এবং এই কেবিনটি জাতীয় কবির স্মৃতিধন্য জাদুঘর হিসেবে উন্মুক্ত থাকবে। এই মহত্তম উদ্যোগ নিয়েছেন বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ।
শোষিত বঞ্চিত নিপীড়িত জনতার কবি, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী, বিশ্ব মানবতার কবি বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর স্মৃতিধন্য কক্ষ শুক্রবার ১২ই ভাদ্র ১৪২৮ বঙ্গাব্দ, ২৭ আগস্ট ২০২১ইং তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান বি ব্লকের দ্বিতীয় তলায় কেবিন ১১৭ এর শুভ উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। ঐতিহাসিক এই উদ্বোধন শেষে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে এক মহতী আলোচনার আয়োজন করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে ও ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফার্মাসিউটিক্যালস এর সহায়তায় আয়োজিত এই মহতী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, এমপি। সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। উদ্বোধক হিসেবে স্মৃতিচারণমূলক মূল্যবান বক্তব্য রাখেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। আলোচক হিসেবে অংশ নেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নুরুল হুদা, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, সম্মিলিত সাংস্কৃতি জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, কলামিস্ট, সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও গবেষক সুভাষ সিংহ রায়, নজরুল সঙ্গীত শিল্পী সাদিয়া আফরিন মল্লিক, নজরুল সঙ্গীত শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল, নজরুল স্মৃতিক্ষক উদ্বোধন উপ-কমিটির সদস্য সচিব ডা. এস এম ইয়ার ই মাহাবুব। আবৃত্তি করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জয়ন্ত চট্টপাধ্যায়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান।
এরআগে সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। এসময় সেখানে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, সঙ্কট মোচনে, অন্যায় ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে চিরকাল প্রেরণা দিবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর আদর্শ। বর্তমান সময়েও যেকোনো অশুভ তৎপরতার বিষয়ে আমাদেরকে সতর্ক থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও জাতীয় কবির আদর্শকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে কাজ করে যেতে হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৭৫ সালের ২২ জুলাই চিকিৎসকদের পরামর্শে বঙ্গবন্ধু ‘কবিভবন’ থেকে কবিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (তৎকালীন আই পিজি এম আর)-এর ১১৭ নম্বর কেবিনে স্থানান্তর করেন। ১ বছর ১ মাস ৮ দিন এ কেবিনে চিকিৎসক ও নার্সদের নিবিড় যতœ ও সেবা দেওয়া হয় মানবতার এই কবিকে। বিভিন্ন সময়ে কবির চিকিৎসায় যুক্ত ছিলেন স্বাস্থ্য বিভাগের তৎকালীন মহাপরিচালক ডা. মেজর এ চৌধুরী, পরবর্তী সময়ে জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলাম, ডা. নাজিমুদ্দৌলা, ডা. আশিকুর রহমান খান প্রমুখ। বঙ্গবন্ধুর অনুমতি নিয়ে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা দেন ডা. বায়েজিদ খান। কবির সার্বক্ষণিক সেবা প্রদানে যুক্ত ছিলেন সেবিকা শামসুন্নাহার ও সেবক ওয়াহিদুল্লাহ ভুঁইয়া। এই ১১৭ নম্বর কেবিনেই বাঙালির পরমপ্রিয় কবির জীবনাবসান ঘটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে শান্ত, সবুজ পরিবেশে সমাহিত করা হয়েছে তাঁকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়-এর ১১৭ নম্বর কেবিনটি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের শেষ বিদায়ের স্মৃতিধন্য, বাঙালির তীর্থস্থান এবং এই কেবিনটি জাতীয় কবির স্মৃতিধন্য জাদুঘর হিসেবে উন্মুক্ত থাকবে।
Discussion about this post