হার্টবিট ডেস্ক
যাঁরা শরীর-স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন, ডিম তাঁদের খাদ্যতালিকার আবশ্যক অঙ্গ। যাঁরা ততটা নন, তাঁদেরও জলখাবারের পাতে বা টিফিনের বাক্সে অন্তত একটা ডিম থাকেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ডিম ঠিক কীভাবে খেলে আপনি তার পূর্ণ পুষ্টিগুণ উপভোগ করতে পারবেন? তার চেয়েও বড়ো কথা হচ্ছে, দিনে আপনি কতগুলো ডিম খেতে পারবেন, তা অতি অবশ্যই একবার পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করে জেনে নিন। প্রোটিনের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি আবার শরীরে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে। তবে হ্যাঁ, এ কথা ঠিক যে অতিরিক্ত বেশি সময় ধরে রান্না করলে ডিমের পুষ্টিগুণের অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। তাই জেনে নিন ঠিক কোন কোন পদ্ধতিতে ডিম রান্না করলে তার থেকে পূর্ণ পুষ্টিগুণ মিলতে পারে।
হাফ বয়েল বা সফট বয়েল: আগুনের তাপে ডিমের সাদাটি সুসিদ্ধ হয়েছে, অথচ কুসুম তখনও নরম ও টুকটুকে লাল – এমন সফট বয়েলড ডিম স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে ভালো। আঁচ ডিমের মধ্যে থাকা যে কোনও ক্ষতিকারক জীবাণুকে মেরে দেয়, কিন্তু সেই সঙ্গে অটুট রাখে কুসুম থেকে পাওয়া সবটুকু পুষ্টিগুণ। সাধারণত ফুটন্ত নুনজলে মিনিট চার-পাঁচ ডিম ফোটালেই পারফেক্ট হাফ বয়েলড ডিম পাওয়া যায়। তবে নির্ধারিত সময়ের পর গরম জল থেকে তুলে নিয়ে তা বরফঠান্ডা জলে ভিজিয়ে দিন। তা হলে খোসা ছাড়াতে সুবিধে হবে।
পোচ: ভারতীয় মতে ডিমের পোচ বলতে যা বোঝায়, তা বিদেশিদের নিয়মে ফ্রায়েড এগ। তাতে মাখন বা তেল লাগে। সনাতন পোচড ডিম কিন্তু তেলবিহীন এবং খুব স্বাস্থ্যকর, তবে তৈরি করা অপেক্ষাকৃত কঠিন। ডিমটা ভেঙে নিন একটি বাটিতে, সামান্য নুন আর গোলমরিচের গুঁড়ো দিন তার উপর, কুসুম যেন আস্ত থাকে। একটা বড়ো জায়গায় জল ফোটান ভিনিগার দিয়ে, তার মধ্যে সাবধানে এই ডিমটা ছেড়ে দিন, ছাড়ার সময় জলটা একবার নেড়ে দেবেন হাতা দিয়ে। সাদা অংশটা কুসুমকে মুড়ে নেবে এবং খুব দ্রুত রান্না হয়ে যাবে, তখন ঝাঁঝরি দিয়ে তুলে জল ঝরিয়ে নিন। প্রথমেই পারফেক্ট পোচ বানাতে পারবেন না, কিন্তু প্র্যাকটিস করতে করতে দক্ষতা এসে যাবে।
পুরো সেদ্ধ ডিম: মোটামুটি মিনিট আট-দশ নুনজলে ফোটালেই পুরো সেদ্ধ ডিম পাওয়া যায়। সবাই হজম করতে পারবেন। ডিমের স্যালাড, স্যান্ডউইচ বা তরকারিও রেঁধে ফেলা যায় হার্ড বয়েলড ডিম দিয়ে। পুষ্টির দিক থেকেও তেমন ঘাটতি পড়ে না, তা ছাড়া টিফিনবক্সে ভরে স্কুল, অফিস, ট্যুর সর্বত্র নিয়ে যেতে পারবেন।
ইচ্ছে করলে আপনি স্ক্র্যাম্বল করে, ভেজে বা অমলেট বানিয়েও ডিম খেতে পারেন। তবে সেটা এক-আধদিনের জন্যই ঠিক আছে। রোজ খাওয়ার জন্য এর কোনওটিই আদর্শ পছন্দ হতে পারে না। ডিমের কুসুমকে আপনি যত বেশিক্ষণ অক্সিজেন ও তাপের সংস্পর্শে রাখবেন, তত তাড়াতাড়ি কমবে তার কার্যকারিতা। আর হ্যাঁ, যাঁরা কুসুম বাদ দিয়ে স্রেফ সাদাটা খাচ্ছেন, তাঁরা কিন্তু স্বাদ আর স্বাস্থ্য – দুটো দিকেই কম্প্রোমাইজ় করছেন। পূর্ণ পুষ্টি জোগাতে পারে পুরো ডিমই।
Discussion about this post