হার্টবিট ডেস্ক
বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের অধীনে হোমিওপ্যাথিক ও ইউনানি চিকিৎসাশাস্ত্রে ডিগ্রিধারী কোনো ব্যক্তি নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না বলে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে এসব বিকল্প চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন আদালত।
‘ডাক্তার’ শব্দ ব্যতীত হোমিওপ্যাথি ও ইউনানি ডিগ্রিধারীরা নামের সঙ্গে যেসব পদবি ব্যবহার করতে পারবেন, সে বিষয়ে কিছু পর্যবেক্ষণও দিয়েছেন হাইকোর্ট।
হোমিও-ইউনানি পড়ে কেউ তার নামের পূর্বে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না আদেশ দিয়ে শনিবার (১৪ আগস্ট) প্রকাশিত রায়ে এসব পর্যবেক্ষণ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চের স্বাক্ষরের পর ৭১ পৃষ্ঠার রায়টি বাংলায় প্রকাশিত হয়।
প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির বাইরে হোমিও-ইউনানি প্রভৃতি চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাকে ‘বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি’ উল্লেখ করে আদালত তার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ‘বিকল্পধারার চিকিৎসা পদ্ধতির পেশাধারীরা নামের পূর্বে ১) ইনটেগ্রেটেড ফিজিশিয়ান, ২) কমপ্লিমেন্টারি ফিজিশিয়ান, ৩) ইন্টেগ্রেটেড মেডিসিন প্রাকটিশনার এবং ৪) কমপ্লিমেন্টারি মেডিক্যাল প্রাকটিশনার পদবি ব্যবহার করতে পারেন। পাশের দেশ ভারতেও বিকল্পধারার চিকিৎসকরা (ডা.) লিখতে পারেন না।’
এসব চিকিৎসা পদ্ধতির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে আদালত বলেছেন, ‘বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি পাঁচ হাজার বছরের প্রাচীন। সুতরাং পাঁচ হাজার বছর ধরে সারা পৃথিবীতে চলে আসা প্রাচীন বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির যথাযথ এবং সঠিকভাবে পঠন এবং প্রশিক্ষণ জনমানুষের সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন করবে। প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি তথা পশ্চিমা চিকিৎসা পদ্ধতি আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হওয়া শুরু হয় আজ থেকে মাত্র ১৬২ বছর আগে। পৃথিবীর প্রথম প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির আইনটির নাম “দ্যা মেডিক্যাল অ্যাক্ট, ১৮৫৮” যা ইংল্যান্ডের সংসদ পাশ করেছিল। অর্থাৎ ১৮৫৮ সালের আগে চিকিৎসা ব্যবস্থা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল না। অপরদিকে, পাঁচ হাজার বছর পূর্ব হতে মানুষ বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করে আসছে।’
প্রসঙ্গত, এর আগে হোমিওপ্যাথিক ও ইউনানি চিকিৎসা শাস্ত্রে ডিগ্রিধারীরা নামের পূর্বে ডাক্তার ব্যবহারের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছিলেন। সেই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত। এরপর ওই রুলের ওপর শুনানি হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম ও অ্যাডভোকেট খোন্দকার নীলিমা ইয়াসমিন। অপরপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম।
Discussion about this post