হার্টবিট ডেস্ক
দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা গ্রহণকারী দেহে ৯৮ শতাংশ অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পরিচালিত এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। আজ সোমবার (২ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাহউদ্দীন শাহ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ অতিমারীতে সমস্ত বিশ্ব আজ বিপর্যস্ত। দেশে সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ২০ হাজার ৯১৬ জন এবং মোট শনাক্ত হয়েছেন ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৮ জন।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশ পুরুষ এবং অর্ধেকের বেশি স্বাস্থ্য সেবা প্রদান এর সাথে জড়িত। অংশগ্রহণকারীদেও মধ্যে ৩১ শতাংশের পূর্বে কোভিড সংক্রমিত হবার ইতিহাস আছে। অর্ধেকের ও বেশি অংশগ্রহণকারী পূর্ব থেকেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানীসহ অন্যান্য রোগে ভুগছিলেন। তবে এ ধরনের রোগের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টিকা গ্রহণের পর এন্টিবডি তৈরিতে কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়নি। ৪২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী টিকাগ্রহণের পরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছেন, সকলের ক্ষেত্রেই উপসর্গ মৃদু ছিল। রক্ত জমাট বাধা বা এরকম অন্য কোনো জটিল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গবেষণাকালীন সময়ে পরিলক্ষিত হয়নি। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সাথে এন্টিবডির উপস্থিতির কোন সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। টিকা গ্রহণকারীদের মাঝে ৯৮ শতাংশের শরীরে এন্টিবডি এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যারা পূর্বেই কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের শরীরে তুলনামূলক বেশি এন্টিবডি পাওয়া গিয়েছে।
এ গবেষণা থেকে বাংলাদেশের জনগণের উপর টিকা প্রয়োগের পর কার্যকর এন্টিবডি তৈরির প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে সময়ের সাথে এন্টিবডির উপস্থিতির পরিবর্তন এবং পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচিতে নতুন অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য টিকার এন্টিবডি তৈরির কার্যক্ষমতা পর্যালোচনার জন্য আরো গবেষণা প্রয়োজন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে কোভিড অতিমারী মোকাবেলায় দেশে ভ্যাক্সিনেশন কর্মসূচি চলমান আছে এবং বর্তমানে তা আরো বেগবান হচ্ছে। মূলত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক উদ্ভাবিত এবং সেরাম ইনস্টিটিউট, ভারতে প্রস্তুতকৃত কোভিশিল্ড ভ্যাক্সিন দিয়ে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে আরো কয়েক ধরনের টিকা এ কর্মসূচিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। টিকাদান এর উদ্দেশ্য হল মানবদেহে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি করা, যা ভবিষ্যতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হবার এবংআক্রান্ত হলে রোগের তীব্রতার সম্ভাবনা কমায় বলে পূর্ববর্তী গবেষণায় জানা গেছে।’
কোভিড-১৯ এবং ভ্যাক্সিনের উপর পরিচালিত ‘হেমাটলজিকেল প্যারামিটারস অ্যান্ড অ্যান্টিবডি টাইটর আফটার ভ্যাকসিনেশন সার্স-কোভ-২’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল ঘোষণায় জানানো হয়, ‘এই বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর টিকা গ্রহণকারী ২০৯ জন টিকা গ্রহীতা এই গবেষণায় স্বেচ্ছায় অংশ নেন।’
এর প্রধান গবেষক ছিলেন বিএসএমএমইউয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাহউদ্দীন শাহ সহ-গবেষক হিসেবে প্রকল্পটিতে যুক্ত ছিলেন।
Discussion about this post