হার্টবিট ডেস্ক
চট্টগ্রামে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে’ আক্রান্ত রোগীর ইনজেকশন ‘অ্যামফোটেরিসিন-বি’ যোগাড় হয়েছে পাঁচ দিনের চেষ্টায় । ইনজেকশন পাওয়ার পর শনিবার (৩১ জুলাই) দুপুর থেকে চিকিৎসা শুরু করেছেন চিকিৎসকরা।
ষাটোরধ্ব এই মহিলা রোগীর ছেলে মো. বেলাল হোসাইন বলেন, গত ৫ দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে মাত্র ২২ ডোজ যোগাড় করা সম্ভব হয়েছে। প্রতিটি ডোজের দাম পড়েছে ১৫ হাজার টাকা। লাগবে আরও ৫৩ ডোজ । আল্লাহ সহায় থাকলে হয়তো বাকি ডোজগুলোও ব্যবস্থা করতে পারবো।
বেলাল বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকরা সবাই আন্তরিক। সকলেই সহযোগীতা করছেন ।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত এই রোগী বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষের তত্ত্বাবধানে ।
ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ বলেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ যতটুকু ছড়িয়েছে তা যাতে আর না ছড়ায় সে চেষ্টা চলছে। অ্যামফোটেরিসিন-বি ইনজেকশনটি প্রতিদিন ৫ ডোজ করে ১৫ দিন পর্যন্ত মোট ৭৫ ডোজ দিতে হবে। আপাতত যা যোগাড় হয়েছে তা দিয়ে আগামী ৪ দিন চলবে।
তিনি বলেন, রোগীর চিকিৎসায় একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। প্রতিদিন রোগীর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ওই নারীর স্বজনেরা জানান, গত ২৫ জুন তাঁর জ্বর আসে। ৩ জুলাই পরীক্ষায় করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। পরে ১৫ জুলাই পরীক্ষায় তিনি কোভিড নেগেটিভ হন। তবে এরপর তাঁর নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। ২৪ জুলাই তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। পরে চিকিৎসকরা বিভিন্ন পরীক্ষা করে রোগীর শরীরে মিউকোরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রয়েছে বল নিশ্চিত হন।
করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছিল কালো ছত্রাক বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস হিসেবে পরিচিত ‘মিউকরমাইকোসিস’।
এই ছত্রাক সাইনাস, মস্তিষ্ক ও ফুসফুসে আক্রমণ করে। ডায়াবেটিস, এইডস বা ক্যান্সারে যারা আক্রান্ত, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দারুণভাবে দুর্বল, তাদের ক্ষেত্রে এ সংক্রমণ প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।
এতে আক্রান্তদের মাথা ব্যথা, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, মুখের একপাশ ফুলে যওয়া, চোখ ফুলে যাওয়া বা চোখে ব্যথা করা, চোখের পাপড়ি ঝরে পড়া, ঝাপসা দেখা এবং এক সময় দৃষ্টি হারানোর মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে নাকের পাশপাশে চামড়ায় কালচে দাগ দেখা দিতে পারে।
বাংলাদেশে গত জুন মাসে খুলনার এক ব্যক্তির কালো ছত্রাক সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তিনি সেরে উঠেছেন।
Discussion about this post