করোনাকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে অন্য রোগে ভোগা মুমূর্ষু রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না। রোগী মারা গেছেন- এমন অভিযোগও আছে। অসুস্থ ব্যক্তি ও স্বজনরা বলছেন, করোনার অজুহাতে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় করা হচ্ছে নানান টালবাহানা। আর বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে বিপাকে পড়েন নিম্নআয়ের মানুষ।
অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে স্ট্রেচারে শুয়ে আছেন জয়নাল। শিশু সন্তান কোলে নিয়ে পাশে স্ত্রী। হতবুদ্ধি বাবা, স্বজন- কেউ জানেন না কোথায় মিলবে চিকিৎসা। সরকারি সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে অন্য কোথাও যেতে। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই তাদের। অথচ ক’দিন আগে এখান থেকেই অপারেশন করান জয়নাল। ১৫ জুলাই বিকেলে তড়িঘড়ি করে ছাড়পত্র ধরিয়ে দেয় হাসপাতাল। স্বজনদের অভিযোগ, সে সময়ও ছিল নানা জটিলতা; বাসায় নেয়ার পর যা আরও বাড়ে।
হৃদরোগে আক্রান্ত স্ত্রী রোকসানাকে নিয়ে ঢাকার হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরছেন বাবুল। চারদিনেও ভর্তি করাতে পারেননি। ফিরিয়ে দিয়েছে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিট ও। হাসপাতালগুলোর সামনে এমন অনেক মানুষের আকুতি দিনভর। কাউকে বলা হয়েছে করোনার প্রকোপ কমলে চিকিৎসা নিতে। কিন্ত রোগ কী আর সময় মেপে চলে?
রোগী ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিট জানিয়েছে চিকিৎসক সংকটের কথা। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিন বলেন, হঠাৎ চিকিৎসক তৈরি করা সম্ভব না। একজন চিকিৎসক তৈরি করতে অন্তত সাত বছর সময় লাগে। হাসপাতাল থেকে রোগী ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, এমন হওয়ার কথা না, কে ফিরিয়ে দিয়েছে বিষয়টা দেখবো।
অন্যদিকে, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. খলিলুর রহমান বললেন, করোনা চিকিৎসার জন্য পুরো হাসপাতালকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে অনেক কোভিড না হওয়া রোগীদের।
উল্লেখ্য যে, বর্তমানে রাজধানীতে অবস্থিত ১৬টি সরকারি হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এসব হাসপাতালে নানা রোগে আক্রান্ত নিম্নআয়ের মানুষই সাধারণত বেশি চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। সুত্র- যমুনা টিভি
Discussion about this post