বেঁচে থাকা এবং বংশবৃদ্ধির জন্য সব ভাইরাসের দেহেই পরিবর্তন ঘটে।বেশিরভাগ সময়েই এসব পরিবর্তন খুবই সূক্ষ্ম। কোন কোন সময়ে এতে ভাইরাসেরই ক্ষতি হয়। তবে অন্যগুলোতে যখন বড় ধরনের মিউটেশন ঘটে তখন রোগটা আরও বেশি সংক্রামক রূপ নেয় এবং রোগীর ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।।
সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসের হাজার হাজার ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে।
কিন্তু ইউকে, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রাজিল ভ্যারিয়েন্টকে ”উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট” বলে মনে করা হয়।
ইউকে বা কেন্ট ভ্যারিয়েন্ট (যার আরেক নাম B.1.1.7) প্রথম দেখা গেছে ব্রিটেনে। পরে ৫০টিরও বেশি দেশে এই ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে। এবং এটি এখনও মিউটেট করছে।
ব্রাজিল ভ্যারিয়েন্ট (P.1) ছড়িয়ে পড়েছে ১০টিরও বেশি দেশে। এর মধ্যে ব্রিটেনও রয়েছে।
এছাড়াও ২৮শে এপ্রিল পর্যন্ত ব্রিটেনে ইন্ডিয়া ভ্যারিয়েন্ট (B.1.617 )-এর ২০০টি কেস ধরা পড়েছে।
তবে ভারতে কোভিড-১৯ মহামারির বর্তমান ঢেউয়ের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই বলেই বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
নতুন ভ্যারিয়েন্ট কি বেশি বিপজ্জনক?
যারা এসব ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগের অসুস্থতার মাত্রা অনেক বেশি এমন কোন প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।
করোনার মূল রূপের ক্ষেত্রে যেমনটা দেখা গেছে, বয়স্ক এবং শারীরিক সমস্যা যাদের প্রকট এসব ভ্যারিয়েন্টেও তারাই বেশি ঝুঁকির মুখে।
কিন্তু ভ্যাকসিন নেয়া হয়নি এমন জনগোষ্ঠীর জন্য বেশি সংক্রামক কোন ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটলে রোগী মৃত্যুর ঘটনাও ঘটবে বেশি।
কিছু গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে, ইউকে ভ্যারিয়েন্টে ব্যক্তি-বিশেষের ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকি ৩০% বেশি। তবে এর পক্ষে প্রমাণ খুব একটা জোরালো নয়।
কিন্তু করোনার সব ধরনের স্ট্রেইনের ক্ষেত্রেই ডাক্তারদের উপদেশ একই: ভাল করে হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, ফেস মাস্ক ব্যবহার করা এবং ঘরের মধ্যে বায়ু চলাচল নিশ্চিত করা।
নতুন ভ্যারিয়েন্ট কিভাবে নিজেকে বদলে ফেলে?


ইউকে, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল কিংবা ইন্ডিয়ান – সবগুলো ভ্যারিয়েন্টই নিজের দেহের স্পাইক প্রোটিনে পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এটি ভাইরাসের একটি অংশ যেটি দিয়ে সে মানুষের দেহকোষের ভেতরে ঢুকে পড়তে পারে। ।
N501Y নামে পরিচিত একটি মিউটেশনে দেখা গেছে, দেহকোষে সংক্রমণ এবং বিস্তারের ক্ষেত্রে এটি ভাইরাসকে বিশেষ সুবিধে করে দেয়।
কোন কোন বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ইউকে/কেন্ট ভ্যারিয়েন্টটি ৭০% বেশি সংক্রামক, যদিও পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড বলছে, এটি ৩০%-৫০% সংক্রামক।
দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিল ভ্যারিয়েন্টেও E484K নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ মিউটেশন ঘটেছে। এর ফলে ভাইরাস অ্যান্টিবডির হাত থেকে পালাতে পারে। অ্যান্টিবডি দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
ইউকে ভ্যারিয়েন্টের মধ্যে সম্প্রতি এধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন।
ইন্ডিয়া ভ্যারিয়েন্টেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ মিউটেশন ঘটেছে যার ফলে এটা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেদ করতে পারে। সেজন্যই বিজ্ঞানীরা এখন এটি নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে গবেষণা চালাচ্ছেন। সুত্র- বিবিসি
Discussion about this post