হার্টবিট ডেস্ক
দেশে করোনা সংক্রমণের এ অবস্থায় আশঙ্কা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরও। শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা যেভাবে বাড়তে শুরু করেছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতালে আইসিইউ শয্যাসহ কোনো সাধারণ শয্যাও খালি পাওয়া যাবে না বলে মনে করছেন অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন।
তিনি বলেন, গত মাসে সারাদেশে সংক্রমণের হার অনেক বেশি ছিল। জুন মাসে এক লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন সংক্রমিত হয়েছেন। জুলাইয়ের প্রথম ১০ দিনে প্রায় এক লাখ রোগীকে সংক্রমিত হতে দেখেছি। আমরা যেভাবে সংক্রমিত হচ্ছি, হাসপাতালে রোগীর চাপ যদি বাড়তেই থাকে, আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে হাসপাতালের শয্যা আর খালি থাকবে না।
রোবেদ আমিন বলেন, কোভিড-১৯-এর যে ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন আছে, তার মাধ্যমে মৃত্যু শুধু বয়স্ক মানুষের হচ্ছে না, তরুণদেরও হচ্ছে। বিভাগ অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে আমরা দেখেছি, সব জেলাতেই কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়েছে এবং সংক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে। সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের এ পরিস্থিতিতে বিদ্যমান লকডাউন তুলে দিলে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড ইউনিভার্সিটির সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ও জনস্বাস্থ্যবিদ ড. খোন্দকার মেহেদী আকরাম।
তিনি বলেন, দৈনিক মৃত্যুহারের দিক দিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান আজ চতুর্থ। আজ সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যেই ১৫ তারিখ থেকে লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের চিন্তাধারা এমন যে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টেরও ঈদ করার শখ আছে। তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে মুক্ত করা হলো। ঈদের পর তাকে আবার লকডাউন দিয়ে আটকে রাখার চেষ্টা করা হবে। অথচ দেশে আজ (১২ জুলাই) মারা গেলেন ২২০ জন। গতকাল মারা গেছেন ২৩০ জন। সংখ্যাগুলো আমাদের কাছে ছোট মনে হলেও দেশের মোট জনসংখ্যার তুলনায় অনেক বড়।
তিনি আরও বলেন, ভারতে যখন প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার জন মারা যাচ্ছিলেন, তখন আমরা বলেছিলাম, ‘ভারতে কি ভয়ংকর অবস্থা’! কিন্তু বাংলাদেশের জনসংখ্যা ভারতের চেয়ে সাড়ে আট গুণ কম। সেই হিসাবে বাংলাদেশের ২৩০ জনের মৃত্যু ভারতের প্রায় ২০০০ জন মৃত্যুর সমান। তাহলে কি বাংলাদেশে এখন ভয়াবহ অবস্থা নয়? অবশ্যই ভয়াবহ অবস্থা। এর ভেতরে লকডাউন তুলে দিলে গোটা দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত রোববার (১১ জুলাই) দেশে ২৩০ জনের মৃত্যু হয়। তার আগে শনিবার ১৮৫ জনের, শুক্রবার ২১২ ও বৃহস্পতিবার ১৯৯ জনের মৃত্যু হয়। গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। এদিন মৃত্যু হয় ২০১ জনের।
Discussion about this post