হার্টবিট ডেস্ক
দেশীয় প্রযুক্তিতে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর আবিষ্কার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার এসএম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহের মাহমুদ তারিফ। টানা সাত ঘণ্টা বাতাস থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করে, মানব দেহে সরবরাহ করতে সক্ষম যন্ত্রটি। করোনা রোগীদের জীবন বাঁচাতে যন্ত্রটি সহায়ক হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তাহের মাহমুদ তারিফ গণমাধ্যমকে জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অক্সিজেন সংকটে মারা গেছেন তার বাবা। চোখের সামনে সেই মৃত্যু দেখেছেন তিনি। এরপর প্রায় এক বছর চেষ্টা করে তিনি উদ্ভাবন করেন অক্সিজেন কনসেনট্রেটর। দেশীয় প্রযুক্তিতে যন্ত্রটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৬৫ হাজার টাকা।
শ্বাসকষ্টের রোগীদের এই যন্ত্রে উৎপাদিত অক্সিজেন দিয়ে অক্সিজেন লেভেল ৯৮-৯৯ এ ওঠানো সম্ভব। কনসেনট্রেটরটি মিনিটে ২৫ লিটার অক্সিজেন উৎপাদন করতে সক্ষম বলে দাবি অক্সিজেন কনসেনট্রটর উদ্ভাবক তাহের মাহমুদ তারিফ।
ঈশ্বরদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম আক্তার বলেন, ‘তারিফের এ কাজে আমরা সবাই উৎসাহ দিয়েছি। প্রাথমিক সাফল্য এসেছে। এখন ল্যাব টেস্ট করা হবে। ল্যাব টেস্টে করে দেখতে হবে, তারিকের আবিষ্কৃত কনসেনট্রেটরে উৎপাদিত অক্সিজেনের মধ্যে বাতাসের অন্য কোনো উপাদান আছে কি-না।’
এসএম (সাঁড়া মরোয়ারি) মডেল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আয়নুল ইসলাম জানান, ‘তারিফ অত্যন্ত মেধাবী। দরিদ্র এই শিক্ষার্থীর মেধা দেখে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই তাকে নানাভাবে তাকে সহযোগিতা করছি
। বাবার মৃত্যুতে আরও অসহায় হয়ে পড়লেও সে দমে যায়নি। কম খরচে অক্সিজেন তৈরির কনসেনট্রেটর বা মিনি প্ল্যান্টটিই তার অধ্যবসায়ের বড় প্রমাণ।’
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিএম ইমরুল কায়েস বলেন, ‘অক্সিজেন ঘাটতি ও এর জরুরি প্রয়োজনীয়তা মাথায় নিয়ে অল্প খরচে কনসেনট্রেটর তৈরি করেছে সরকারি এস এম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১০ শ্র্রেণির শিক্ষার্থী তাহের মাহমুদ তারিফ। বলা যায় বাতাস থেকে অক্সিজেন তৈরি করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে তারিফ। কম খরচে প্ল্যান্ট তৈরিতে তাকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারিফের অক্সিজেন ল্যাব পরীক্ষার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন বিভাগে যোগাযোগ করা হচ্ছে। ল্যাব টেস্টে সাফল্য প্রমাণিত হলে বৃহত্তর পরিসরে বড় প্ল্যান্ট তৈরি করে বিপুল পরিমাণ অক্সিজেন দেশেই কম খরচে উৎপাদন করা সম্ভব হবে।’
Discussion about this post