হার্টবিট ডেস্ক
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একদিনে আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (২৭ জুন) সকাল ৮টা থেকে সোমবার (২৮ জুন) সকাল ৮টার মধ্যে মারা যাওয়াদের মধ্যে সাত জনের করোনা পজিটিভ, বাকিরা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মারা যাওয়াদের মধ্যে রাজশাহীর সাত জন, চাঁপাইনবাগঞ্জের পাঁচ জন, নাটোর ও নওগাঁর একজন করে রোগী রয়েছেন। এদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ ও তিন জন নারী। এদের মধ্যে চার জন মারা যান আইসিইউতে।
মারা যাওয়া ১৪ জনের মধ্যে ছয় জনের বয়স ৬১ বছরের উপরে। বাকিদের মধ্যে ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে পাঁচ জন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের তিন জন পুরুষ। এ নিয়ে চলতি মাসে (১ জুন থেকে ২৮ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত) এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ৩১৫ জন।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৮ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৫২ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১০, নাটোরের আট, নওগাঁর চার, পাবনার দুই ও চুয়াডাঙ্গার দুই জন রোগী রয়েছেন।
এদিকে রামেক হাসপাতালে ৪৮ বেডের আরও একটি ওয়ার্ডকে করোনা ইউনিটে যুক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে করোনা ইউনিটে বেডের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০৫টি। সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ৪০৫ বেডের বিপরীতে চিকিৎসাধীন আছেন ৪৪২ জন। যা আগের দিন ছিল ৪৩৪। অতিরিক্ত রোগীদের মেঝে ও বারান্দায় রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কোভিড ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে রাজশাহীর ৩০৬ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৪৯ জন, নাটোরের ৩২ জন, নওগাঁর ৩২ জন, পাবনার ১৫ জন, কুষ্টিয়ার তিন জন, চুয়াডাঙ্গার দুই জন, দিনাজপুরের দুই জন ও ঢাকার একজন। আইউসিইউতে ভর্তি আছেন ২৯ জন।
রামেক হহাসপাতালের পরিচালক বলেন, রোগীদের চাপ সামলাতে আরও একটি করোনা ওয়ার্ড বাড়ানো হয়েছে। ৪৮ বেডের ১৪ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে অক্সিজেন লাইন বসিয়ে করোনা ওয়ার্ডে রূপান্তর করা হয়েছে।
অন্যদিকে রাজশাহীতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমেছে। রবিবার দুটি ল্যাবে রাজশাহী জেলার ৪৮৫ নমুনা পরীক্ষা করে ১৩৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। যা আগের দিনের চেয়ে ১ দশমিক ২৪ শতাংশ কম। করোনা শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ। যা আগের দিন শনিবার ছিল ২৯ দশমিক ০৮ শতাংশ। এর আগে শুক্রবার ছিল ৩৪ দশমিক ৫০, বৃহস্পতিবার ছিল ২৯ দশমিক ৭৫, বুধবার ৩৩ দশমিক ৯৫, মঙ্গলবার ৩৩ দশমিক ০৫ এবং সোমবার ছিল ৩৩ দশমিক ৫১ শতাংশ।
শামীম ইয়াজদানী জানান, গত রবিবার রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল পৃথক দুইটি ল্যাবে দুই জেলার ৫৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ এসেছে ১৪৯ জনের। এখানে রাজশাহী ছাড়াও চাঁপাইনবাগঞ্জের ৭৭ নমুনার মধ্যে পজিটিভ এসেছে ১৪ জনের।
ঈদের পর থেকে রাজশাহীতে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকে। শনাক্তের হার ৬০ শতাংশের উপরে উঠলে গত ১১ জুন সিটি করপোরেশন এলাকায় এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন। এর পর দুই দফা মেয়াদ বাড়িয়ে লকডাউন ৩০ জুন মধ্য রাত পর্যন্ত করা হয়।
Discussion about this post