হার্টবিট ডেস্ক
পিরিয়ড বা মাসিক নারী জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে থাকা একটি জীবন ঘনিষ্ট প্রাকৃতিক ঘটনা ও স্বাভাবিক জৈবিক প্রক্রিয়া।
মেয়ে বা নারীর সঙ্গেই এই মাসিক প্রক্রিয়ার এক নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।মাসিকের মাধ্যমেই একজন নারী সন্তান জন্মদানের প্রাথমিক সক্ষমতা অর্জন করে। শুধুমাত্র তাই নয় মাসিকের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে জড়িয়ে আছে নারীর সারাজীবনের প্রজনন স্বাস্থ্য এবং স্বাভাবিক সুস্থতা।
নীরবতা ভেঙ্গে সচেতনতা বৃদ্ধিতে এবং মাসিকের সঙ্গে সম্পর্কিত চারপাশের বিদ্যমান এই নেতিবাচক সামাজিক নিয়মগুলো পরিবর্তন করতে ২৮ মে পালন করা হয়
বিশ্ব মাসিক স্বাস্থ্য দিবস। ২০১৪ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে।
দিনটি সামনে রেখে দেশে নারীর স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা বলছেন, দুটি কারণে দেশে নারীদের মধ্যে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারের হার কম। প্রথমত, মেয়েদের মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা যে নিরাপদ হওয়া দরকার, তা সমাজে খুব কম ভাবা হয়। দ্বিতীয় কারণ, দোকানে ১০টির এক প্যাকেট স্যানিটারি প্যাডের দাম ১০০ টাকার বেশি, যা সীমিত আয় ও দরিদ্র মানুষের নাগালের বাইরে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), ইউনিসেফ বাংলাদেশ ও ওয়াটারএইডের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত ‘ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮’ (গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত) অনুযায়ী, দেশে মাসিকের সময় ৪৩ শতাংশ কিশোরী ডিসপোজিবল প্যাড, ৫০ শতাংশ পুরোনো কাপড় এবং বাকিরা নতুন কাপড় ও তুলা ব্যবহার করে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ২৯ শতাংশ ডিসপোজিবল প্যাড ও ৬৪ শতাংশের বেশি পুরোনো কাপড় ব্যবহার ব্যবহার করে।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উপপরিচালক শাহনাজ সুমি বলেন, পরিবারের যে বাজেট থাকে, তাতে মেয়েদের এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির জন্য কোনো বরাদ্দ থাকে না। তিনি বলেন, স্যানিটারি ন্যাপকিনের দাম ৫০ টাকায় নামিয়ে আনা দরকার। এ জন্য সরকার মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) ও অন্যান্য কর প্রত্যাহার করতে পারে। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে দাম কমাতে পারে।
কোম্পানিগুলো বলছে, এখনকার কর কাঠামোতে ২০০ টাকা খুচরা মূল্যের এক প্যাকেট প্যাডে ২২ টাকার মতো ভ্যাট ও ৫ টাকার বেশি অন্যান্য কর রয়েছে। দেশের তিনটি স্যানিটারি প্যাড উৎপাদন ও বিপণনকারী কোম্পানি বলছে, দাম কমাতে কর ছাড় দিতে পারে সরকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাসিকের সময় স্বাস্থ্যসম্মত প্যাডের বদলে পুরোনো কাপড় ব্যবহারে নারীদের চুলকানি, প্রদাহ, প্রস্রাবে সংক্রমণসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।
Discussion about this post