বিশ্ব মেডিটেশন দিবস আজ

হার্টবিট ডেস্ক  

চাকরির টেনশন, আর্থিক টেনশন— নানা টেনশনে অস্থির জীবন। হঠাৎ হঠাৎ রেগে যাচ্ছেন, আত্মবিশ্বাস একেবারে তলানিতে ঠেকেছে, ঘুম আসছে না, বিছানায় এপাশ-ওপাশ করেই রাত শেষ হয়ে যায়। এসব থেকে মুক্তি পেতে মেডিটেশনকে খুবই কার্যকরী । বলা হয় প্রতিদিন দশ থেকে পনের মিনিট করে মেডিটেশন করলেই মোটামুটি সপ্তাহ খানেক পরই অনেকটাই ভালো ফল পাওয়া যায়। দুশ্চিন্তা তো কমেই, আত্মবিশ্বাসও ফিরে  আসে।  

মেডিটেশন আসলে এক ধরনের মনের ব্যায়াম। দৈনন্দিন জীবনের নানা চিন্তা-ভাবনা থেকে মনকে সরিয়ে এনে একাগ্র করার উপায়। 

শতকরা ৯১ ভাগ মানুষ এই মেডিটেশন করে বাদ দিতে পেরেছেন ঘুমের ওষুধ বা স্লিপিং পিল খাওয়াও। কোনো ওষুধ বা প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতিতে এমন সাফল্য দেখা যায়নি।

প্রাচ্য বিশ্বকে যত জ্ঞান ও প্রযুক্তি উপহার দিয়েছে, তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার মনে করা হয় মেডিটেশনকে। মহেঞ্জোদারো সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ থেকে পাওয়া ৪৬০০ বছরের আগের সিলমোহরে দেখা যায়, ধ্যান আসনে বসে এক যোগী সাধক গভীর ধ্যানে মগ্ন।

প্রাচীন সাধকরা দিয়েছেন যোগধ্যান, মহামিত বুদ্ধ শিখিয়েছেন বিপাসন ধ্যান পদ্ধতি। এই ধ্যান চীনে চ্যান নামে এবং জাপানে জেন নামে প্রচলিত। যা আসলে ধ্যান শব্দেরই ভাষাগত রূপান্তর। ধ্যানের উৎস ভূমি বাংলা থেকে ধ্যানকে আরও ছড়িয়ে দেওয়ার অসাধারণ উদ্যোগের জন্য বিশ্ব মেডিটেশন দিবস পালিত হয়।

মেডিটেশনকে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিবছর ২১ মে পালিত হয় বিশ্ব মেডিটেশন দিবস। নিয়মিত মেডিটেশন চর্চায় মনের রাগ, ক্ষোভ, দুঃখ, হতাশা, টেনশন, স্ট্রেস বা মানসিক চাপ দূর হয়। নেতিবাচকতা থেকে ইতিবাচকতায় বদলে যায় দৃষ্টিভঙ্গি। ফলে, মনোদৈহিক নানা রোগ যেমন : আইবিএস, অনিদ্রা, মাইগ্রেন, করোনারি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ-সহ নানা রকম ব্যথা-বেদনা ইত্যাদি থেকে নিরাময় লাভ করা যায় খুব সহজেই। 

জানা যায়, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ কোটি মানুষ এখন নিয়মিত মেডিটেশন করে। স্ট্রেস বা মানসিক চাপে আক্রান্ত একজন মানুষ যখন মেডিটেশন করেন, তার স্ট্রেসের মাত্রা কমে যায় শতকরা ৬০ ভাগ। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি অন্তত ৮৭ শতাংশ কমে গেছে, যখন তারা মেডিটেশন করেছেন।

মন প্রশান্ত থাকলে, মনে মমতা জাগলে পারিবারিক পেশাগত সামাজিক সম্পর্কগুলোও সুন্দর হয়ে ওঠে। স্ট্রেসমুক্ত থাকা যায় বলে বাড়ে পেশাগত দক্ষতা। শুধু নিয়মিত মেডিটেশন চর্চা করেই একজন মানুষ পেতে পারেন প্রশান্তি সুস্বাস্থ্য ও সাফল্য।