হার্টবিট ডেস্ক
সারারাত পা ‘কামড়ায়’। ফলে ঘুম হয় না ঠিক মতো। এরকম হওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ থাকতে পারে।
রাতে পায়ের ‘কাফ’ বা পেছনের পেশিতে এবং পায়ের পাতায় প্রচণ্ড ব্যথায় নির্ঘুম রাত কাটান কিছু মানুষ। সারাদিন কোনো ব্যথা নেই, রাতে হলেই এই ব্যথা হানা দেয়। মাঝেমধ্যে ব্যথা উরুতেও উঠে আসে। কখনও ব্যথার তীব্রতা এতই বেড়ে যায় যে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠতে হয়, শক্ত হয়ে ওঠে পেশি।
কয়েক মিনিট থেকে শুরু করে সারারাত ভোগাতে পারে এই ব্যথা।
এই ব্যথার কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ
ঋতু পরিবর্তন: ইউনিভার্সিটি অফ অ্যালবার্টা’য়ের ‘ফ্যামিলি মেডিসিন’ বিভাগের সহকারী-অধ্যাপক ড. স্টক গ্যারিসন বলেন, “গ্রীষ্ম ও শীত কালে এমন পায়ের ব্যথা বেশি দেখা দেয়। এর কারণ স্নায়ুজনীত সমস্যা, পেশির সমস্যা নয়। গ্রীষ্মকালে ভিটামিন ডি’র মাত্রা বেশি থাকে বলে স্নায়ুর বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ বেশি সক্রিয় হয়। ভিটামিন ডি সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছালে এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত দ্রুত হয়, ফলে ব্যথা হতে পারে।
পানিশূন্যতা: নৈশকালীন পা ব্যথার আরেকটি কারণ হতে পারে পানিশূন্যতা। পানির অভাবে রক্তে ‘ইলেক্ট্রোলাইট’য়ের ভারসাম্যে তারতম্য দেখা দেয়, ফলে ব্যথা হয়। তাই রাতে পা ব্যথা হলে পানি পান করতে পারেন।
বার্ধক্য: পঞ্চাশোর্ধ বয়সে নিয়মিত পা ব্যথা হলে তা বার্ধক্যজনীত জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি পৌঁছালে নড়াচড়ার সঙ্গে সম্পর্কীত স্নায়ুগুলো নষ্ট হতে থাকে। ফলে ব্যথা হওয়াটাই স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়।
পুষ্টির অভাব: এই ধরনের ব্যথার একটি বড় কারণ প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব। ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম শরীরে যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে সেদিকে যত্নবান হতে হবে।
প্রচণ্ড ব্যায়াম: ব্যায়ামাগারের রুটিনে যেদিন আপনার ‘লেগ ডে’ অর্থাৎ পায়ের ব্যায়ামের প্রতি মনোযোগ বেশি সেদিন রাতে পা ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
‘কারেন্ট স্পোর্ট মেডিসিন রিপোর্টস’ নামক জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, “কোনো নির্দিষ্ট পেশি বেশি ব্যবহারের কারণে তা অবসাদগ্রস্ত হয়ে গেলে সেখানে ব্যথা হতে পারে।”
দাঁড়িয়ে থাকা: দিনের বেশিরভাগ সময় যদি দাঁড়িয়ে কাটে তবে সেদিন রাতে পা ব্যথা হওয়াটা বেশ স্বাভাবিক বিষয়। এর একটি কারণ হতে পারে, দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকলে শরীরের নিচের অংশে তরল ও রক্ত জমতে থাকে, ফলে শরীরের তরলের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং ব্যথা হয়।
স্বাস্থ্যগত জটিলতা: বাত, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এমনকি হতাশা থেকেও পা ব্যথা হতে পারে। গবেষণা বলে, এই জটিলতাগুলো স্নায়ুতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, ফলে পায়ে ব্যথা হয়।
গর্ভাবস্থা: আপনি যদি গর্ভবতী হন তবে হয়ত আপনার রক্তসঞ্চালনে সমস্যা হচ্ছে কিংবা ওজন বাড়ার কারণে পায়ে ব্যথা হচ্ছে।
করণীয়
সেহেতু অনেকগুলো কারণে হঠাৎ মাংসপেশি টান ধরতে পারে। তাই এ ধরনের সমস্যা নিয়মিত হতে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং কারণটি নির্ণয় করা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামান্য একটি স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ বা ব্যায়ামই এটি ভালো করার জন্য যথেষ্ট। তা ছাড়া হঠাৎ আক্রান্ত হলে, আক্রান্ত স্থানে মৃদু গরম সেক দিয়ে হালকাভাবে ম্যাসাজ করুন। সে ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে কমে যাবে।
Discussion about this post