হার্টবিট ডেস্ক
ফাইজার বায়োটেকের এক লাখ টিকা আগামী মে মাসে বাংলাদেশে আসবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। একই সঙ্গে টিকা পাওয়ার বিষয়ে সরকার আরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে। রবিবার (২৫ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত এক সংবাদ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।
কোভ্যাক্সের সঙ্গে অনেক আগে থেকেই চুক্তি ছিল টিকা নিয়ে জানিয়ে ডা. রোবেদ বলেন, ‘তারা আমাদের মোট যে টিকা দেবে তার ১০ ভাগ ফ্রি আসার কথা। প্রথম দফায় সেখান থেকে ফাইজার বায়োটেকের এক লাখ টিকা চলে আসবে বলে তারা জানিয়েছে। পরবর্তী সময়ে আমাদের জানানো হবে, অন্যান্য জায়গা থেকে কত সংখ্যক কোন টিকা আনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে এখন অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট তাদের বাধার কারণে আমাদের টিকা দিতে পারছে না। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, যাদের মাধ্যমে টিকা আনার কথা, তাদের বলেছে, অন্তত ২০ লাখ টিকা যেন অতি দ্রুত তাদের মাধ্যমে ব্যবস্থা করা হয়। কারণ, এটি সেরাম ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ সরকার এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি ছিল।’
এটা ছাড়াও টিকার জন্য বাংলাদেশ সরকার চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চীন থেকে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি এ দেশে প্রস্তুত করার জন্য সরকার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া চীন সরকার ছয় লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে প্রদান করবে বলে জানিয়েছে।’
অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, ‘কিছুদিন আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভ্যাক্সের আওতায় আরও দেশকে সেখানে আমন্ত্রণ জানায়। বাংলাদেশ সরকার সেখান থেকে ১০ কোটি টিকা কেনার বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে।’
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা একটি শক্তিশালী হাতিয়ার মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এতে কোনও সন্দেহ নেই। আমাদের দেশে অত্যন্ত সুনিপুণভাবে টিকা কার্যক্রম চলছে। সম্প্রতি জরুরি প্রয়োজনে টিকা পেতে ছয়টি দেশের সমন্বয়ে একটি ইমার্জেন্সি ভ্যাকসিন স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি টু সাউথ এশিয়া ফোরামে যোগদানের বিষয়ে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নেপাল, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও চীন এই ফোরামে রয়েছে। আমরা যদি এতে যোগদান করতে পারি, যদি এই ফোরামে অসংখ্য টিকা এসে যায় তাহলে পরবর্তী সময়ে টিকার সহজলভ্যতা হবে।’
আজ থেকে সীমিত পরিসরে দোকানপাট খুলে দেওয়া হচ্ছে এবং গণপরিবহন চালুর বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে। এ অবস্থায় জনগণকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তাদের পণ্য বিক্রয়ের জন্য নো মাস্ক নো সার্ভিস মেনে চলতেই হবে।’
করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য ভ্যাকসিনই একমাত্র পথ নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন একটি মাত্র পথ। পৃথিবীজুড়ে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের জন্য বৈজ্ঞানিকভাবে সমাদৃত এবং প্রমাণিত তার মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে ছয় ফুটের শারীরিক দূরত্ব এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে মাস্ক।’
‘মাস্ক ছাড়া যেন কেউ ঘর থেকে বের না হন এবং সঠিকভাবে মাস্ক পরতে হবে, খুলতে হবে সঠিকভাবে। নয়তো এ থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন হবে’, বলেন অধ্যাপক রোবেদ আমিন।
Discussion about this post