হার্টবিট ডেস্ক
ঘুম থেকে উঠে হঠাৎ করেই ঘাড়ের একপাশে প্রচণ্ড ব্যথা, কিংবা কাজ করতে করতে হঠাৎই ঘাড়ের একদিকে প্রবল টান, কিছুতেই ঘাড় ঘোরানো যাচ্ছে না…এই রকম সমস্যায় অনেকেই পড়েছেন। এর কারণ হিসেবে হতেপারে অনেক কিছু।
পেশি দুর্বল হলে- দীর্ঘক্ষণ একভাবে একজায়গায় বসে থাকলে পেশিতে খিল ধরে এবং ঘাড়ে ও কাঁধে ব্যথা হয়। এই একভাবে বসে থাকতে গিয়ে আচমকা টান লেগেও ব্যথা হতে পারে। এছাড়াও যদি ব্যথা নিয়েই সাইকেল চালানো কিংবা সাঁতার কাটার মতো পরিশ্রমের কাজ হয় তাহলে ব্যথা আরও বেড়ে যায়।
ঘাড়ের টিস্যুর ক্ষয়- বয়স হলে ঘাড়ের টিস্যুর ক্ষয় হয়। এছাড়াও যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ল্যাপটপের সামনে বসে কাজ করছেন তাঁদেরও এই সমস্যা আসতে বাধ্য। এর ফলে ঘাড়ের মধ্যেকার হাড়ে ফাঁক থেকে যায়। যেখান থেকে ব্যথা হতে পারে। আর যাঁদের সারভাইকাল স্পন্ডেলাইটিস রয়েছে তাঁদেরও ঘাড়ে ব্যথা হতেই পারে
স্লিপ ডিস্ক হলে- কোনও কারণে স্পাইলার কর্ডের মধ্যে কোনও টিস্যু ফুলে গেলে স্লিপ ডিস্ক হতে পারে। সেখান থেকেও ঘাড়ে ব্যথা হয়।
কোনও কারণে আঘাত পেলে- কোনও দুর্ঘটনায় ঘাড়ে আঘাত পেলে সেই ব্যথা বহুদিন স্থায়ী হয়। মাঝেমধ্যেই তখন পেশীতে টান গেলে ব্যথা হতে পারে।
বসার ত্রুটি হলে- বসার ভঙ্গীতে ত্রুটি থাকলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এছাড়াও বাঁকা ভাবে শুয়ে থাকলে ঘাড়ে চাপ পড়ে, সেখান থেকেও ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। সেই ব্যথা হলে অন্যদিকে ঘাড় ঘোরানো অসম্ভব হয়ে পড়ে।
প্রতিকার
খুব বেশি ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খান। এছাড়াও বাড়িতে কিছু মলম, স্প্রে রাখুন। ব্যথা হলেই যাতে সঙ্গে সঙ্গে লাগাতে পারেন। ফিজিওথেরাপি করুন। খুব প্রয়োজন না হলে শিরদাঁড়ায় ইঞ্জেকশন নেবেন না। এছাড়াও
নিয়মিত ব্যায়াম করুন- নিয়মিত ঘাড়ের ব্যায়াম করুন। ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘাড় ঘোরাবার চেষ্টা করুন। দরকারে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। তবে খুব বেশি ব্যথা থাকলে ব্যায়াম নয়। কিন্তু নিয়মিত ব্যায়ামে কাজ হয়।
ফিজিওথেরাপি- একটানা ব্যথা থাকলে চিকিৎসকের কাছে যান। তাঁর পরামর্শ মতো ফিজিওথেরাপি করাতে হতে পারে। এছাড়াও কি কারণে ব্যথা হচ্ছে তাও নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। ফিজিওথেরাপি হলে তবেই দৈনন্দিন ছন্দে ফিরতে পারবেন।
অস্ত্রোপচার- সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হল অস্ত্রোপচার। যদি কোনও ভাবেই ব্যথা না কমে তবেই কাটাছেঁড়ার সিদ্ধান্ত নিন। কারণ ঘাড়ের সঙ্গে যুক্ত থাকে গুরুত্বপূর্ণ স্নায়ু। অপারেশনের পর যে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হবে না তা জোর দিয়ে বলা যায় না। তবে চিকিৎসক বললে অবশ্যই ভেবে দেখবেন। সুপরামর্শ নিয়ে তবেই অপারেশন।
নিজে যা করবেন
সব বয়সের সব মানুষের প্রতিদিন ঘাড়ের ব্যায়াম করা উচিত। অন্তত ১০ মিনিট সময় দিন।
ঘাড়ের ব্যথা বেশি থাকলে গাড়ি চালানো, ভারী কাজ করবেন না। হিতে বিপরীত হবে।
কেন ঘাড়ে ব্যথা সেই কারণ আগে ভালো করে জানুন। স্পন্ডেলাইটিস ছাড়া অন্য কারণ হতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘাড়ে কলার পরবেন না। নিজের ইচ্ছেমতো পেনকিলার খাবেন না।
ব্যথা একসপ্তাহের বেশি হলে চিকিৎসকের কাছে যেতেই হবে।
মানসিক অবসাদ, দুশ্চিন্তা থেকেও ঘাড়ের ব্যথা আসে। তাই চাপ বেশি থাকলে আগে তা কমানোর চেষ্টা করুন। সেই সঙ্গে ঘরের বাইরে বেশি সময় কাটিয়ে নিজেকে চিন্তামুক্ত রাখুন।
Discussion about this post