অধ্যাপক অরূপ রতন চৌধুরী
ডায়াবেটিসের সঙ্গে দাঁত, মাড়ি ও মুখের নানা রোগের সম্পর্ক রয়েছে। ডেন্টাল ক্যারিজ, মাড়ির রোগ, মুখে বিভিন্ন ধরনের সাদা ঘা, সিস্ট, মাড়ির টিউমার, দাঁতের ক্ষয়, প্রদাহ, আঁকাবাঁকা দাঁত ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যার সঙ্গে রক্তের শর্করার নিবিড় সম্পর্ক আছে। ডায়াবেটিসের কারণে রক্তপ্রবাহে বিঘ্ন ঘটে, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে এবং রোগজীবাণুর আক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
বারডেমের দন্ত বিভাগে যে রোগীরা আসেন, তাঁদের মধ্যে জরিপ চালিয়ে দেখা যায়, দুই বছরে ২ হাজার ৯৯৫ জন রোগীর মধ্যে ৭৮ শতাংশ মাড়ির বিভিন্ন রোগ ও ২১ শতাংশ ডেন্টাল ক্যারিজে আক্রান্ত। সাদা ক্ষত, ক্যানডিয়াসিস ও লিউকোপ্লাকিয়ার সংখ্যাও কম নয়।
তাই ডায়াবেটিস রোগীদের চাই মুখ ও দাঁতের বিষয়ে বিশেষ সচেতনতা। যেমন:
১. দাঁতের সুস্থতায় রক্তের শর্করা অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। দন্তচিকিৎসককে ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানান।
২. দাঁত তোলা বা মুখের শল্যচিকিৎসার ক্ষেত্রে ওষুধ বা ইনসুলিনের মাত্রা ও নির্দিষ্ট সময় সম্পর্কে চিকিৎসককে জানাতে হবে।
৩. ফোড়া, সংক্রমণ ইত্যাদির চিকিৎসার আগে অবশ্যই রক্তে শর্করা ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৪. যদি অস্ত্রোপচারের কারণে খাদ্যবিরতির প্রয়োজন হয় তবে এ সময় ওষুধ বা ইনসুলিন কীভাবে ব্যবহার করবেন, তা জেনে নিন।
৫. ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে সাধারণ দন্তমল জটিল হতে পারে। কারণ, রক্তে শর্করা বেড়ে গেলে তা জীবাণুকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। ফলে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায় এবং রক্ত বের হয়।
দন্তমল প্রতিরোধে যা করবেন:
* প্রতিবার খাওয়ার পর নরম ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করুন।
* রাতে খাওয়ার পর ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করুন।
* নকল দাঁত ব্যবহার করলে তা পরিষ্কার রাখুন।
* বছরে কমপক্ষে দুবার দন্তচিকিৎসকের কাছে যান।
* ধূমপান বর্জন করুন।
দন্ত বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল
Discussion about this post