ডা. এ কে এম মাহমুদুল হক (খায়ের)
বাংলাদেশে বিভিন্ন যৌনব্যাধির প্রকোপ যেন বেড়ে চলেছে। ফলে আমাদের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ রোগগুলোর বেশির ভাগই ছোঁয়াচে অর্থাৎ সহজে একজন থেকে অন্যের দেহে ছড়িয়ে যায়। ফলে এর প্রভাব আমাদের পারিবারিক জীবনেও পড়ে। এ রোগগুলোর অন্যতম জেনিটাল হারপিস(Genital Herpes)। এটি হারপিস সিম্পলক্স ভাইরাস বাহিত একটি যৌনরোগ, যা পুরুষ ও মহিলার নাভীর নিচে যৌনাঙ্গকে আক্রমণ করে।
কারণ : ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে হারপিস সিমপ্লেক্স টাইপ-২ এবং ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে হারপিস সিমপ্লেক্স টাইপ-১ এ রোগ হওয়ার একমাত্র কারণ।
লক্ষণ : বিশেষ লক্ষণগুলো হলো-
আক্রান্ত স্থানের ত্বক লাল হয়ে তার ওপর ব্যথাযুক্ত ফুসফুড়ি তৈরি হয়।
# কয়েক দিনের মধ্যে ফুসকুড়িগুলো ফেটে ঘা হয়ে যায়।
# ফুসকুড়িগুলো বারবার একই জায়গায় হয়।
# মহিলাদের মাসিকের রাস্তা হয়ে পানির মতো রস বের হয়।
# প্রস্রাবের সময় ব্যথা যা সাধারণত প্রথম আক্রমণ ২-৪ সপ্তাহ স্থায়ী হয় এবং পরবর্তী আক্রমণ ৭-৮ দিন স্থায়ী হয়। আক্রমণ স্থানের আশপাশের গ্রন্থিগুলো ব্যথাযুক্ত হয়ে ফুলে উঠতে পারে।
রোগ নির্ণয় পরীক্ষা
# রক্তের রুটিন পরীক্ষা
# রক্তের বিশেষ কয়েকটি পরীক্ষা, যেমন- রক্তের সুগার, ভিডিআরএল টেস্ট, টিপিএইচ এবং এইচবিএসএজি পরীক্ষা
# ইমিউনোলজিক্যাল পরীক্ষা
# ভাইরাস এন্টিবডি শনাক্তকরণ
# ভাইরাস স্পেসিফিক পরীক্ষা পাঞ্চ বায়োবসি
চিকিৎসা : তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
জেনারেল : উত্তেজক ফ্যাক্টরগুলো শনাক্ত করে দূর করা, জ্বরজনিত সমস্যার চিকিৎসা করা, আক্রান্ত সময়ে যৌনমিলন এড়িয়ে চলা।
লোকাল : এন্টিসেপটিক এন্টিভাইরাল ক্রিম প্রয়োগ।
সিস্টেমিক : বিশেষ মাত্রায় এন্টিভাইরাল থেরাপি। তবে রোগটির আক্রমণ প্রতিরোধে দীর্ঘদিন স্বল্পমাত্রার এ ওষুধটি চালিয়ে যেতে হবে।
রোগটি যৌনবাহিত ও ছোঁয়াচে বলে আক্রান্ত হওয়ার পরপরই রোগীকে চলাফেরা ও দাম্পত্য মিলনে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। মনে রাখবেন চিকিৎসকের কাছে যেতে দ্বিধা ও সংকোচ রোগের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
চিকিৎসা না করলে জেনেটিক হার্পিস রোগের ফলে যেসব জটিলতা দেখা দিতে পারে
হ্যাঁ, জেনেটিক হার্পিস রোগের চিকিৎসা না করলে শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে চিকিৎসা না করলে জেনেটিক হার্পিস রোগ থেকে কী কী জটিলতা এবং সমস্যা দেখা দিতে পারে তার তালিকা নিম্নরূপ:
- অন্যান্য যৌন সংক্রমণ সংক্রমণ
- নবজাতক সংক্রমণ
- মূত্রাশয় সমস্যা
- মস্তিষ্ক-ঝিল্লীর প্রদাহ
- রেকটাল প্রদাহ
লেখক : ত্বক, যৌন ও এলার্জি বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
Discussion about this post