বছর ঘুরে আবারও এলো রোজা। গরমের দিনে রোজা হওয়ায় আমাদের প্রায় ১৫ ঘণ্টা অভুক্ত থাকতে হবে। তাই রোজা ভেঙেই অনেকে হাপুসহুপুস করে একগাদা খাবার খেয়ে ফেলেন। এতে করে পেটে গ্যাস, বদহজম ও নানারকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। রোজায় সুস্থ থাকতে তাই বাকি যে ৯ ঘণ্টা হাতে থাকে, সে সময়ে পরিকল্পিতভাবে খাওয়া-দাওয়া করতে হবে। এতে রোজায় ওজন বেড়ে যাওয়াসহ আরও যেসব সমস্যা দেখা দেয় তা থেকে মুক্ত থাকা যাবে।বিজ্ঞাপন
সারাবাংলার পাঠকদের জন্য নিয়মতি রোজায় সুস্থতার টিপস দিচ্ছেন পুষ্টিবিদ আজমেরী রহমান সিন্থীয়া
একজন গর্ভবতী নারী রোজা রাখতে পারবেন কিনা তাই নিয়ে নানা মতামত হয়ত আছে। তবে কোন গর্ভবতী নারী যদি রোজা রাখতে চান, তাহলে অবশ্যই একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। আর মা ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করতে একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে সেহেরী ও ইফতারির খাদ্য তালিকা জেনে নিতে হবে।
তবে গর্ভকালীন সময় ৩মাসের বেশি হলে রোজা রাখা মা এবং সন্তানের জন্য কিছুটা ঝুকিপূর্ণ। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়ে রোজা পালন করা জরুরী।বিজ্ঞাপন
গর্ভবতী মায়ের সেহেরীর খাবার-
- আঁশযুক্ত খাবার যেমন- ওটস, মটর, শিম, ডাল, বার্লি, লাল আটার রুটি ইত্যাদি
- প্রোটিন ও ক্যালরিসম্পন্ন খাবার – ভাত, মাছ, মাংস, ডিম ও ডিমের তৈরি খাবার,বাদাম ইত্যাদি
- দুধ ও দুধের তৈরি খাবার- টক দই, মিষ্টি দই, লাচ্ছি, ফ্রুট কাস্টার্ড, ফালুদা, পুডিং ইত্যাদি
বিজ্ঞাপন
গর্ভবতী মায়ের ইফতারিতে যা থাকবে-
- খেজুর, আপেল, কলাসহ অন্যান্য ফল অবশ্যই থাকা লাগবে
- তবে পেঁপে এবং আনারস হজমে জটিলতা থাকায় এগুলো বাদ দেওয়াই ভালো
- নানারকম দেশি সবজি যেমন- লাউ, চিচিঙ্গা, চাল কুমড়া ইত্যাদির সাথে চিকেন স্যুপ (দেশি মুরগি)
- পানি পর্যাপ্ত পরিমান খেতে হবে। অথবা পানির বিকল্প হিসেবে তাজা ফলের রস, গ্লুকোজ, ডাবের পানি ইত্যাদি
- প্রোটিনের চাহিদা পূরণে মাছের কাটলেট, দেশি কচি মুরগীর মাংস, মাংসের তৈরী অন্যান্য খাবার যেমন- কিমা, চিকেন শর্মা, চপ, ডিম ও ডিমের তৈরি খাবার খেতে হবে
- ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ এর চাহিদা পূরণ করতে পারে নানারকম সামুদ্রিক মাছ
বিজ্ঞাপন
গর্ভবতী মায়ের সন্ধ্যা রাতের খাবার-
- রুটি, চিড়া, মুড়ি জাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে
- যেকোন ফল বা তাজা ফলের জুস
- পানি অন্তত ১৫ থেকে ২০ গ্লাস (সেহেরী পর্যন্ত)
বিশেষভাবে মনে রাখবেন-
- ইফতারির পর থেকে প্রতি ২ ঘন্টা বিরতিতে খাবার খেতে হবে
- পাকস্থলী পূর্ণ করে খাওয়া যাবে না
- কারও গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস থাকলে, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রনে রাখা খুবই জরুরী
- একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ মতো খাদ্যতালিকা বানিয়ে সেই অনুযায়ী চলা উচিৎ
- ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ও ভিটামিন সি জাতীয় খাবার অবশ্যই রাখতে হবে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়
গর্ভবতী মায়েরা, একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ ও পুষ্টিবিদের খাদ্য তালিকা মেনেই রোজা রাখুন। ভালো থাকুক মা, ভালো থাকুক অনাগত শিশু।
Discussion about this post