হার্টবিট ডেস্ক
আইসোলেশন সেন্টার থেকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দিয়ে নতুন নামকরণ করা হবে রাজধানীর মহাখালী করোনা হাসপাতালের। বসুন্ধরায় নির্মিত অস্থায়ী করোনা হাসপাতাল আগামী ২০ এপ্রিল করোনা রোগীদের জন্য আনুষ্ঠানিকভবে এই হাসপাতালের দ্বার উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন।
মহাখালী করোনা হাসপাতালের যন্ত্রপাতি এনে মহাখালী আইসোলেশন সেন্টারকে সাজানো হচ্ছে নতুন আদলে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির বলেন, এটা দেশের সবচেয়ে বড় কোভিড বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। এখানে পরিপূর্ণ ১০০ শয্যার নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ) ও প্রায় সমমানের হাই ডিপেনডেনসি ইউনিট (এইচডিইউ) শয্যা থাকছে ১২২টি। এছাড়া সাধারণ শয্যা থাকছে প্রায় ১ হাজার।
তিনি বলেন, ১৫ এপ্রিল নাগাদ অন্তত ৫০টি আইসিইউ ও ২৫০টি সাধারণ শয্যায় রোগী ভর্তি শুরু করা যাবে। বাকিগুলোর কাজ চলতে থাকবে।
তিনি বলেন, আশা করছি চলতি মাসের শেষ দিকে পুরো হাসপাতালটি প্রস্তুত হয়ে যাবে পূর্ণাঙ্গ কোভিড বিশেষায়িত সেবার জন্য। এই হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ।
পরিচালক বলেন, এই হাসপাতাল ভবনটি সিটি করপোরেশনের। হাসপাতালটির যন্ত্রপাতি, জনবলসহ অন্যান্য সরঞ্জাম দিচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অবকাঠামোগত প্রস্তুতির কাজ বাস্তবায়ন করে দিচ্ছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। আর পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় থাকছে আর্মস ফোর্সেস মেডিক্যাল ডিভিশন। ৭শ চিকিৎসকের জন্য আবেদন করা হয়েছে এবং ৫০ জন ইতোমধ্যেই নিয়োগ হয়েছে। বসুন্ধরায় নির্মিত অস্থায়ী হাসপাতাল ভেঙে সেখান থেকে উন্নত যন্ত্রপাতি এনে এখানে বসানো হচ্ছে।
ভবনের ছয়তলায় করোনা রোগীদের জন্য আইসিইউ প্রস্তুত করা হচ্ছে। একটা সারির কাজ শেষ। ভেতরে থরে থরে সাজানো আইসিইউ বেড। যেগুলো বসুন্ধরা করোনা আইসোলেশন সেন্টার থেকে এনে এখানে লাগানো হয়েছে। বেডের সঙ্গে পিসিআর যন্ত্রপাতি সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে। অন্য সারিতে চলছে ইলেকট্রনিক কাজ। বেড সাজানো হয়নি, ডেকোরেশনের কাজও অনেক বাকি। শ্রমিকরা কাজ করছেন, ক্লিনাররা ঘষামাজা করছেন। কক্ষগুলোতে শয্যা বসানো হলেও যন্ত্রপাতি নেই। যন্ত্রপাতি ও খাবার রাখার ট্রলি নেই। করোনা নমুনা সংগ্রহের জন্য প্রতিটি তলায় ৩টি করে বুথ বসানো হয়েছে। তবে বুথের ভেতরেও ফাঁকা। চিকিৎসকদের জন্য প্রতিটি ব্লকে ২টি করে আলাদা কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। চেয়ার টেবিল বা মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট মোটামুটি সব প্রস্তুত। বাথরুমে পানির লাইনে সংযোগ থাকলেও দরজাগুলো ফিটিং হয়নি এখনো।
শ্রমিকরা বলেন, এখনো টেকনিক্যাল অনেক কাজ বাকি। তবে, অনেক বিষয়েই মুখ খুলতে রাজি হননি তারা। ভবনের দোতলায় ১৩৯০ বেডের হাসপাতালের জায়গায় ৫০ বেডের ইমার্জেন্সি বেড প্রস্তুত করা হচ্ছে। যার ৩০টি নারী এবং ২০টি পুরুষ রোগীর জন্য। জরুরিভিত্তিতে রোগী ভর্তি ও পরে আইসিইউতে নেওয়ার আগে এখানে রাখা হবে।
হাসপাতালটির বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. ফরিদ উদ্দিন মিয়া বলেন, কেবল মহাখালীর হাসপাতালই নয়, এর সঙ্গে আরো ১০টি হাসপাতালকে করোনা রোগীদের সেবায় বিশেষভাবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে গত বছর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করা হলেও সংক্রমণ কমে যাওয়ায় তা বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে গত সপ্তাহ থেকে ওই হাসপাতালে আবার আগের মতোই ২০০ শয্যার কোভিড ইউনিট চালু হয়েছে।
বসুন্ধরা হাসপাতালটিকে কেন ভেঙে ফেলা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বুঝতে হবে- ওটা হাসপাতাল নয়; আইসোলেশন সেন্টার ছিলো। মাঝে করোনা পরিস্থিতি কমে যাওয়ায় ওখানে কোনো রোগী যেত না। খালি পড়ে থাকার কারণেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওখানকার যন্ত্রপাতিগুলো বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানোর।
Discussion about this post