হার্টবিট ডেস্ক
পবিত্র মাহে রমজান শুরু হয়েছে। এবারের রোজায় গরম যেমন বেশি তেমনি দিনটাও অনেক বড়। তাই অনেকেই চিন্তা করেন এত বড় দিনে রোজায় শরীরের ক্ষতি হবে কিনা। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে, কেউ যদি সঠিক খাদ্য নির্বাচন করে সেহরী ও ইফতারে খান এবং কিছু সাধারণ স্বাস্থ্য টিপস মেনে চলেন তাহলে তার রোজার কষ্ট যেমন কমে যাবে এবং তেমনি স্বাস্থ্যেরও উন্নতি হবে।
সেহেরীতে যা খাবেন
রোজায় স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাসের চেয়ে একটু আগেই সকালের নাস্তাটি করতে হয়। অনেকেই মনে করেন, সারাদিন যেহেতু না খেয়ে থাকতে হবে তাই সেহরীতে যত বেশি পরিমানে খাওয়া যায় ততই ভাল। বিষয়টি মোটেও ঠিকনা। বরং পাকস্থলীর স্বাভাবিক ধারণ ক্ষমতা অনুসারেই খাবার খাওয়া উচিত। কারণ চার-পাঁচ ঘণ্টা পার হলেই খাদ্যগুলো পাকস্থলী থেকে অন্ত্রে গিয়ে হজম হয়ে যায়।
সেহরীর খাবারটি হতে হেবে মুখোরুচক, সহজপাচ্য, সহজে হজমযোগ্য। অধিক তেল, অধিক ঝাল, অধিক মসলা, অধিক চর্বি জাতীয় খাবার একেবারেই খাওয়া উচিত না। কারণ এতে শরীরে অতিরিক্ত তাপ তৈরি হয়।
সেহরীতে শুকনা খাবার ও প্রক্রিয়াজাত খাবার না খাওয়াই ভাল। কারণ এটি পানিশুন্যতা তৈরি করে।
চা, কফি বা এজাতীয় খাবার সেহরীতে না খাওয়াই ভাল।
ভাতের সাথে পর্যাপ্ত সবজি, মাছ ও প্রয়োজন মত মাংস খেতে হবে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেলে দেরিতে ক্ষুধা লাগবে এবং শরীরেও পর্যাপ্ত শক্তি থাকবে।
যেসব খাবারে প্রচুর পরিমানে পানি আছে সেসব খাবার যেমন কমলা, লেবু, শসা, তরমুজ জাতীয় ফল খেতে পারেন।
সেহরীর সময় পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করতে হবে। কমপক্ষে এক লিটার পানি পান করুন।
ইফতারে যা খাবেন
আমাদের দেশে ইফতারিতে খাবারের যে বাহার দেখা যায়, তার বেশিরভাগই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বিশেষ করে বাইরে তৈরি ভাজা-পোড়া খাবার খুব বেশি খেতে দেখা যায়। আবার অনেককে দেখা যায় ইফতারি বিরিয়ানি, তেহারি ইত্যাদি খেয়ে থাকে যা মোটেও ঠিক না।
এছাড়া, বাইরে তেলে ভাজা আলু র চপ, বেগুনি, পেয়াজু খান। এগুলো স্বাস্থ্য সম্মত নয়। বরং এগুলো খেলে বদ হজমের সম্ভাবনা থাকে।
রোযা এলেই হালিম আর তেহারির দেকানে যেন একটু বেশিই ভির জমে। তবে, সারাদিন রোজার পর এই দুটি খাবারই ক্ষতিকর।
ইফতারে লেবুর শরবত, খেজুর, শসা, তরমুজ, বাসায় তৈরি ছোলা, পেয়াজু খেতে পারেন। এছাড়া ফরমালিন ও কার্বাইডমুক্ত মৌসুমি ফল যেমন আম, কলা, আরানস খেতে পারেন। কারণ, ফলে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও মিনারেল থাকে যা কোষ্ঠাকািঠিন্য দূর করে ও হজমে সাহায্য করে।
এছাড়া ইফতারে বাসায় তৈরি নুডলস, জিলাপীও খেতে পারে।
তবে,ইফতারে যেটি সবচেয়ে জরুরি তা হলো প্রচুর পরিমানে বিশুদ্ধ পানি পান করা। এছাড়া বাসায় তৈরি করা শরবতও খেতে পারেন।
রোজার কিছু জরুরি টিপস..
*সেহরী না খেয়ে বা শুধু পানি খেয়ে রোযা রাখবেন না।
*খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে ধীরে ধীরে খাবেন, যা আপনার হজমে সহায়ক হবে।
*ইফতার ও সেহরি সময়ের মধ্যে অন্তত পক্ষে আট থেকে দশ গ্লাস পানি পান করুন।
*রান্নার কাজে খাবারে ডালডার পরিবর্তে সয়াবিন তেল ব্যবহার করুন, তবে যতটা সম্ভব কম পরিমাণে ব্যবহার করুন।
*অতিরিক্ত লবণ ও লবণাক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।
*ঘুমানোর আগে ও সেহেরির পরে অবশ্যই দাঁত ব্রাশ করুন।
*রোজা রাখা অবস্থায় সকালে ব্যায়াম না করে ইফতারের পর ব্যায়াম করা উচিত।
Discussion about this post