চতুর্থ মাসের গর্ভাবস্থার ডায়েট
গর্ভে বেড়ে ওঠা প্রাণটি আপনার রক্ত থেকেই পুষ্টি সংগ্রহ করে। তাই, গর্ভধারণের চতুর্থ পর্যায়ে, আপনার সেই সব খাবার খাওয়া উচিত যাতে আপনার শিশুর স্বাস্থ্যকর বিকাশ এবং সঠিক বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সবরকমের পুষ্টিগুণ উপস্থিত থাকে। এই সময় মায়ের দেহে ও শারীরিক কার্যক্রমে নানান রকম পরিবর্তন দেখা যায়, তাই কী খাচ্ছেন এবং কতটা পরিমাণে খাচ্ছেন সেই ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন ।
যেসব খাবার খেতে হবে
- আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
এমন খাবার খান যা আপনার দেহে আয়রনের চাহিদা পূরণ করতে পারে। যেমন- ডিম, মাছ, মাংস, মেটে, সয়াবিন, বাদাম, বিভিন্ন রকমের উপকারী বীজ, ব্রাউন রাইস, সবুজ শাক সবজি, ফলমুল ও ড্রাই ফুট ।
- ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার
পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা মেটানোর জন্য উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন। যেমন- ওটমিল, বার্লি, সিয়া সিড, ফ্ল্যাক্স সিড বা তিসি, আমন্ড বাদাম, পেস্তা বাদাম, পিক্যান বাদাম, ব্রকোলি, ডুমুর, কড়াইশুটি, সুইট কর্ন বা ভুট্টা, রাস্পবেরি, স্ট্রবেরি, আপেল, কলা, এবং ন্যাশপাতি।
- ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
দুধ, দই, চিজ এর মতো ডেয়ারি প্রোডাক্ট, ব্রকোলি, আমন্ড বাদাম, কলমিদল শালুক প্রভৃতি খাবার খেলে দেহের ক্যালশিয়ামের চাহিদা মেটে এবং তা ভ্রূণের হাড়ের বিকাশে সহায়তা করে।
- জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার
ল্যাম্ব, বিফ, পালং শাক, মাশরুম, কুমড়ো, লাউ ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক আছে। জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, স্বাস্থ্যকর স্নায়ুতন্ত্র গড়ে ওঠে।
- ভিটামিন–সি সমৃদ্ধ খাবার
ভিটামিন-সি তে ভরপুর বিল পেপার, মিষ্টি আলু, ফুল কপি, বাঁধাকপি, ব্রকোলি, টমেটো, এবং শাকপাতাতে পাওয়া যায় প্রয়োজনীয় প্রধান পুষ্টি উপাদান।
- প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার
বিভিন্ন ধরনের উপকারী বাদাম ও বীজ, মুরগির মাংস, সোয়াবিনে পাওয়া যায় প্রয়োজনীয় প্রোটিন উপাদান। কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে পড়ে ভাত, রুটি, পাস্তা এবং আলু।
- ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার
এছাড়াও, প্রসবের সময় বাচ্চার কম ওজন বা প্রতিবন্ধকতা আসার রিস্ক কমানোর জন্য আপনার ডায়েটে ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার রাখা অত্যন্ত দরকার। তাই, রোজকার ডায়েটে টাটকা জলের মাছ, টুনা, বাদাম, অলিভ ওয়েলের রান্না করা খাবার রাখার চেষ্টা করুন যাতে ওমেগা ৩, ৬, ৯ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে।
যে খাবারগুলি খাওয়া উচিত নয়
- যেহেতু, এই সময় কোষ্ঠকাঠিন্য বা অম্বল ও বদহজমের মতো সমস্যা হয়, তাই ময়দা দিয়ে বানানো খাবার যেমন মোমো, শিঙারা, চাউমিন এর মত খাবার এড়িয়ে চলা উচিৎ। আবার, ময়দা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।
- বিভিন্নরকম সামুদ্রিক মাছ এড়িয়ে চলা উচিৎ।
- কাঁচা বা কম রান্না করা ডিম খাওয়া উচিৎ না।
- অত্যাধিক চা বা কফি পান করা গর্ভাবস্থায় শরীরের পক্ষে ভালো না।
- এই সময় সফট চিজ বা ব্লু চিজ এড়িয়ে চলা উচিৎ। কারণ, এরা খাদ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। তাই চিজ খেলেও সর্বদা হার্ড বা শক্ত চিজই খাওয়া উচিৎ।
- এই সময় অত্যাধিক মশলাযুক্ত খাবার, ভাজাভুজি বা অত্যাধিক তৈলাক্ত খাবার, বাইরের খাবার বা স্ট্রিট ফুড খাওয়াও উচিৎ না। যতটা সম্ভব ঘরে বানিয়ে খাবার খাওয়া উচিৎ। খাবারে অত্যাধিক কাঁচা নুন বা চিনি না মেশানোই ভালো। গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিন কমপক্ষে দুই বা তিন লিটার জল অবশ্যই পান করা উচিৎ।
গর্ভাবস্থায় চতুর্থ মাসের জন্য ব্যায়াম
গর্ভাবস্থার চতুর্থ মাসে ব্যায়াম করা হবু মা ও শিশু উভয়ের পক্ষেই খুব উপকারী। গর্ভাবস্থায় যে সমস্ত মহিলারা ব্যায়াম অনুশীলন করেন তাদের কম পিঠব্যথা হয়, আরও ভাল শারীরিক গঠন হয় এবং আরও বেশি শক্তি অনুভব করেন। নীচে কিছু ব্যায়ামের কথা আলোচনা করা হল।
- হাঁটা
গর্ভাবস্থায় হাঁটা খুব লাভজনক। রোজ দশ মিনিট করে হাঁটা শুরু করুন, পরে সময়টা আস্তে আস্তে বাড়িয়ে আধ ঘন্টা পর্যন্ত করতে পারেন। সকাল সন্ধ্যে যখন ইচ্ছে বেড়িয়ে পড়ুন হাঁটতে। হাঁটলে শুধু শরীর নয় মনও ভালো থাকে। এছাড়া শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন। গর্ভ সংস্কারের অন্তর্গত কিছু ধ্যান মুদ্রা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপকারী হয়।
- সাঁতার
সাঁতার সব বয়সের মানুষের জন্য অসাধারণ ব্যায়াম। এই কারণে সাঁতার বা জলে এরোবিক্স ইত্যাদি করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে মাংসপেশী মজবুত হয় ও পেটে আরাম হয়।
- আস্তে আস্তে দৌড়নো
আগে থেকে দৌড়ানোর অভ্যেস থাকলে আস্তে আস্তে দৌড়াতে পারবেন এই অবস্থায়। তবে ক্লান্তি অনুভব করলে বন্ধ করে দিন।
- যোগব্যায়াম
গর্ভাবস্থায় যোগাসন করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এর জন্য আপনি কোনো প্রশিক্ষকের সাহায্য নিতে পারেন। এছাড়া শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন। গর্ভ সংস্কারের অন্তর্গত কিছু ধ্যান মুদ্রা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপকারী হয়। এটি আপনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে শুরু করতে পারেন।
- সতর্কতা
যখন ব্যায়াম করবেন তাতে খেয়াল রাখবেন পেটে যাতে কোনওভাবে চাপ না পড়ে এবং সব ব্যায়ামই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী করা উচিৎ।
গর্ভাবস্থায় চতুর্থ মাসের স্ক্যান এবং পরীক্ষা
আপনারা গর্ভাবস্থা ঠিকঠাক চলতে থাকে যাতে তার জন্য মাঝে মাঝেই ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করে নেওয়া দরকার। কোনও সমস্যা দেখা গেলে সময় থাকতেই চিকিৎসা করা যায়। চতুর্থ মাসে নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলো করা যেতে পারে।
- গর্ভবতী মহিলার ওজন ও রক্তপাত হচ্ছে কিনা তার পরীক্ষা
- গর্ভাশয়ের আকার মাপা
- শর্করা ও প্রোটিনের জন্য মূত্র পরীক্ষা
- ভ্রূণের হার্টবিট পরীক্ষা
এই সামান্য পরীক্ষাগুলো ছাড়া ডাক্তার আরও কিছু পরীক্ষা করতে দেন। সেগুলো নিম্নপ্রকার :
১. আল্ট্রাসাউন্ড টেস্ট
আল্ট্রাসাউন্ড টেস্ট দ্বারা পরীক্ষা করা হয় ভ্রূণ সঠিকভাবে বেড়ে উঠছে কিনা। আর এই টেস্টে দেখা যায় যে গর্ভে একটা বাচ্চা আছে না দুটো বাচ্চা অর্থাৎ যমজ। প্ল্যাসেন্টার স্থিতি ঠিক আছে কিনা সেটা জানার জন্যও আল্ট্রাসাউন্ড টেস্ট করানো হয়।
২. আলফা ফোটোপ্রোটিন টেস্ট
এই আলফা ফোটোপ্রোটিন টেস্ট গর্ভাবস্থার ১৬ সপ্তাহের আশেপাশে নিউরাল টিউবে দোষ আছে কিনা তা জানার জন্য করা হয়। প্রথম তিনমাসে এই সমস্যা আছে কিনা জানার জন্য নিউকল ট্রান্সলুসেন্সি টেস্ট করা হয়।
৩ অ্যামনিওসেন্টেসিস টেস্ট
অ্যামনিওসেন্টেসিস টেস্ট গর্ভাবস্থার ১৫ থেকে ১৮ সপ্তাহের মধ্যে করানো হয়। গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যজনিত কোনো সমস্যার আশঙ্কা থাকলে এই টেস্ট করা হয়।
৪. ইন্টিগ্রেটেড প্রিনেটাল স্ক্রিনিং
বাচ্চার ডাউন সিনড্রোম জাতীয় বিকৃতি আছে কিনা জানতে ইন্টিগ্রেটেড প্রিনেটাল স্ক্রিনিং করানো হয়।
গর্ভাবস্থায় চতুর্থ মাসের সময় সাবধানতা
গর্ভাবস্থার চতুর্থ মাসে যখন আপনি দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে প্রবেশ করতে চলেছেন তখন আপনাকে আগের থেকে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সতর্ক থাকতে কী কী করবেন ও কী কী করবেন না সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।
কী কী করবেন ?
- আপনার ডাক্তার অনুমতি দিলে নিয়মিত ব্যায়াম চালিয়ে যান। নিয়মিত হাঁটুন। যোগ ব্যায়াম করুন। সাঁতারও কাটতে পারেন। আপনার যে সমস্ত এক্সারসাইজ করতে ভালো লাগে করুন। এতে সন্তান হওয়ার সময় জটিলতা তৈরি হবে না। শরীর সুস্থ থাকলেই আপনি সুস্থ শিশুর জন্ম দিতে পারবেন।
- বাম পাশ ফিরে শুয়ে বালিশ নিয়ে ঘুমোন। দুই পায়ের মাঝে বালিশ নিয়ে ঘুমোন এতে আরাম পাওয়া যায়। এতে শরীরে রক্ত চলাচল বাড়ে আর ভ্রূণের বৃদ্ধিও ভালো করে হয়
- বন্ধ নাক, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, কান বন্ধ হয়ে যাওয়া – এইগুলো কিছু সাধারণ জিনিস যা চতুর্থ মাসে হয়। সবসময় সঙ্গে টিস্যু পেপার নেবেন আর প্রয়োজনে ওষুধও সঙ্গে রাখবেন।
- কিছু গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপযুক্ত জামা কাপড় কিনে ফেলুন। কারণ এই সময় পেটের পেশী দ্রুত প্রসারিত হতে শুরু করে। তাই আগে যে সব জামা কাপড় আপনি পরতেন সেগুলো পরতে অস্বস্তি বোধ হতে পারে।
- নিয়মিত দাঁতের যত্ন নিন। ডেন্টাল ক্লিনিকে গিয়ে ডেন্টিস্টকে দেখান। চেক আপ করলে মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার মত সমস্যা – যেগুলো চতুর্থ মাসে হয় , সেগুলো আর হয় না।
- এই সময় আপনার সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়া খুব জরুরি। সেক্ষেত্রে যৌন মিলন একটা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তবে তার আগে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়াই ভালো।
- স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ার পাশাপাশি প্রচুর জল পান করুন।
কী কী করবেন না ?
- মদ, অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন। এতে ভ্রূণের ক্ষতি হয়। ফেটাস অ্যালকোহল সিনড্রোম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- বিড়ালের জঞ্জাল পরিষ্কার করবেন না এতে অ্যালার্জি, টক্সোপ্লাজমোসিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
- কখনোই স্টিম বাথ নেবেন না বা বাথ টবে গরম জলে স্নান করবেন না। কারণ জলের উচ্চ উষ্ণতা বাড়ন্ত ভ্রূণের জন্য ক্ষতিকারক।
- ধূমপান বন্ধ করে দিন। কারণ দেখা গেছে যারা ধূমপান করে তারা কম ওজনের বাচ্চার জন্ম দেন এবং সেইসব বাচ্চার অনেক দুর্বলতা বা অক্ষমতা দেখা যায়।
- ভারী জিনিস তুলবেন না বা খুব কঠিন কিছু কাজ করবেন না। যতটা সম্ভব আরাম করার চেষ্টা করবেন।
- পেটের ওপর চাপ দিয়ে শোবেন না।
আপনার চতুর্থ মাসে ওজন বৃদ্ধি, ভ্যাকসিনেশন, যোনি থ্রাশ ইত্যাদি নিয়ে সাধারণ উদ্বেগ
এই অবস্থায় কিছু সাধারণ উদ্বেগ সৃষ্টি হয় যা আপনাকে এবং আপনার সঙ্গীকে চিন্তিত করে তোলে। এসবের সমাধানের জন্য ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
ওজন বৃদ্ধিই হল উদ্বেগের প্রথম কারণ। বলে রাখা ভালো – দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে কাঙ্ক্ষিত ওজন বৃদ্ধি হল প্রতি সপ্তাহে ১/২ কেজি। খাবারের পছন্দ – অপছন্দগুলোতেও পরিবর্তন আসে।
কোষ্ঠ কাঠিন্য , বুক জ্বালাসহ আরও কিছু সমস্যা দেখা যায়। নিজে থেকে ওষুধ নেওয়ার ভুল না করে ডাক্তার দেখানো বুদ্ধিমানের কাজ। গর্ভপাত বা ঝুঁকিপূর্ণ প্রেগন্যান্সির ইতিহাস থাকলে যৌন মিলনের সময়ও সতর্ক থাকা উচিৎ। ভ্যাকসিনেশন সংক্রান্ত কোনো জিজ্ঞাস্য থাকলে উদ্বেগ না করে ডাক্তারবাবুর পরামর্শ মত চলুন।
হবু বাবার জন্য টিপস
শুধু যিনি মা হতে চলেছেন তিনিই একমাত্র নন, যিনি বাবা হতে চলেছেন তার জন্যও এই সময়টা খুব স্পেশাল এবং গুরত্বপূর্ণ। তাকেও কিছু নির্দিষ্ট জিনিস বুঝতে হবে। তাকে তার গর্ভবতী স্ত্রী কী পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তা বুঝতে হবে । গর্ভবতী মহিলার মানসিক ও শারীরিক অবস্থার কথা চিন্তা করে তাকে কিছু জিনিস করতে হবে, সেগুলি হল –
- এই সময় হবু বাবার উচিৎ ঘরের কাজে সহযোগিতা করা। কারণ গর্ভবতী মায়ের পক্ষে ঘরের ও বাইরের কাজ করা অনেকটাই মুশকিল হয়ে যায়।
- এই সময়ে গর্ভবতী মায়ের শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক যে পরিবর্তন আসে সেটা বুঝতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গর্ভের বাচ্চার কীভাবে বড় হচ্ছে সেটা বুঝতে হবে। দরকার পড়লেই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।
- এই অবস্থায় সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানো একান্তই প্রয়োজন। পাশে থেকে তাকে নিশ্চিত করতে হবে যে আপনারা দুজনই জীবনের একই অধ্যায়ে আছেন।
- আগে যারা বাবা হয়েছেন বা পরিচিত কেউ যিনি কিছুদিনের মধ্যে বাবা হতে চলেছেন , তাদের সঙ্গে কথা বলুন। আমার মনের চিন্তা ভাবনা, ভয়, আশঙ্কা, অনুভূতি – সব ভাগ করে নিন। এতে আপনার মন সুস্থ থাকবে এবং আপনি অহেতুক ভয় পাবেন না। বরং অনেক উপকারী তথ্য জানতে পারবেন।
গর্ভাবস্থায় চতুর্থ মাস হল দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে প্রবেশ করার প্রথম ধাপ। এই সময় অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা দরকার। আপনার প্রিয়জনদের সঙ্গে কথা বললে মনের ভয় দূর হয়ে যাবে, তাই কাছের মানুষদের সঙ্গে কথা বলুন। আপনি এখন গর্ভাবস্থার একটি সুন্দর পর্বে আছেন যেখানে আপনার গর্ভের বাচ্চার সম্পূর্ণ রূপান্তর হচ্ছে। আপনি হয়ত কখনো একই সঙ্গে উত্তেজিত, চিন্তিত এবং ভয়ভীত অনুভব করবেন। বুঝতে হবে গর্ভাবস্থায় এই মিশ্র অনুভূতি বা আবেগ স্বাভাবিক। জীবনের এই সুন্দর পর্যায় উপভোগ করুন।
প্রায়শই জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন
১) দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা কত?
প্রথম তিনমাসে গর্ভপাত হয় – এটা অনেক ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে, কিন্তু পরের তিনমাসে গর্ভপাতের আশঙ্কা অনেক কম থাকে। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে গর্ভপাত কিছু কারণেই হয়ে থাকে, যেমন – ধূমপান, মদ্যপান বা অন্য কিছু শারিরীক সমস্যা। এই কারণে সেই সব জিনিস থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন যেসব জিনিস আপনার ও আপনার গর্ভের সন্তানের ক্ষতি করে।
২) চতুর্থ মাসে কি যৌনতা নিরাপদ?
হ্যাঁ, আগের মাসগুলোতে আপনার যদি কোনো সমস্যা না থেকে থাকে, তাহলে চতুর্থ মাসে যৌন মিলন নিরাপদ। এই সময় যৌন মিলনের ইচ্ছেও খুব স্বাভাবিক। এতে সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়ে। তবে তার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া উচিৎ। এছাড়া এই সময় গর্ভবতী মহিলাদের পেট বাড়তে শুরু করে তাই যৌন মিলনের সময় আপনি অন টপ পজিশনে চেষ্টা করতে পারেন। এই দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে।
যেহেতু, চতুর্থ মাস থেকে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের শুরু হয় তাই অনেক গর্ভবতী মহিলারাই জানেন না এইসময় কী করা উচিৎ কী করা উচিৎ নয়। আশা করি এই তথ্যগুলো আপনাদের অনেক সাহায্য করবে।
Discussion about this post