হার্টবিট ডেস্ক
উপহার হিসেবে দ্বিতীয় দফায় ভারত থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত আরও ১২ লাখ ডোজ করোনার টিকা দেশে আসছে আগামীকাল শুক্রবার (২৬ মার্চ)। করোনা মহামারি প্রতিরোধে ভারতের এই টিকা এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ ফ্লাইটে বেলা দেড়টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা।
বুধবার (২৪ মার্চ) ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন থেকে পাঠানো এক চিঠিতে সরকারকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, এই ১২ লাখ ডোজ টিকা ভারত সরকারের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে এই টিকা পাঠাচ্ছে ভারত।
এর আগে গত জানুয়ারি মাসে ভারত সরকার ২০ লাখ ডোজ টিকা উপহার দেয়। তবে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে ক্রয়চুক্তির আওতায় ফেব্রুয়ারি মাসের ৩০ লাখ ডোজ এবং মার্চ মাসের ৫০ লাখ ডোজ টিকা এখনো ঢাকায় আসেনি। এ টিকা কবে নাগাদ পৌঁছাবে সে বিষয়ে পাওয়া যায়নি সংশ্লিষ্টদের সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্য। এরই মধ্যে ভারত থেকে দ্বিতীয় দফা উপহারের টিকা আসছে বাংলাদেশে।
বুধবারের চিঠিতে ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, আগামী ২৬ মার্চ এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ ফ্লাইটে (ফ্লাইট নং-এএল ১২৩০) বেলা দেড়টায় টিকাগুলো শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে। ফ্লাইটটি সকাল সাড়ে আটটায় মুম্বাই বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করবে।
টিকাগুলো দ্রুত খালাসে বিমানবন্দরে রেফ্রিজারেশন ট্রাক, ফর্ক লিফট, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর অনুমোদনসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ে প্রস্তুতি রাখতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে কাজ সহজতর করতে এয়ারওয়ে বিল, প্যাকিং লিস্ট ও ব্যাচ রিলিজ সার্টিফিকেট ইত্যাদি কাগজ-পত্র এই চিঠির সঙ্গেই পাঠানো হয়েছে।
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিয়ষক মহাপরিচালককে পাঠানো এই চিঠির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে।
সংযুক্ত কাগজপত্রের মধ্যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কমার্শিয়াল ইনভয়েস এই টিকাগুলোকে ইন্ডিয়ান সরকারের পক্ষ থেকে উপহার হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, তিনটি ব্যাচের এক লাখ ২০ হাজার ভায়ল ১০০টি বাক্সে প্যাকেট করে পাঠানো হচ্ছে। এর মধ্যে ৪১২১ জেড০০৭ ব্যাচের উৎপাদন তারিখ চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি, যার মেয়াদ শেষ হবে ১১ জুলাই। ৪১২১ জেড ০০৮ ব্যাচের উৎপাদন তারিখ চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি, যার মেয়াদ শেষ হবে ১৫ জুলাই এবং ৪১২১ জেড ০০৯ ব্যাচের উৎপাদন তারিখ চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি, যার মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৬ জুলাই।
টিকাদান কার্যক্রম শুরু আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট প্লান বা টিকাদান কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়। এ ছাড়া ভারতে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ সরকার টিকার দাম আগাম পরিশোধ করে। চুক্তির শর্ত অনুসারে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশে আসার কথা।
তবে গত জানুয়ারি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসলেও ফেব্রুয়ারি মাসে এসেছে মাত্র ২০ লাখ। চলতি মাসে এখনো কোনো টিকা আসেনি। গত জানুয়ারি মাসেও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে উপহার হিসাবে ২০ লাখ টিকা পাঠানো হয়। যদিও চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে কেনা ফেব্রুয়ারি মাসের ৩০ লাখ এবং মার্চ মাসের ৫০ লাখসহ মোট ৮০ লাখ ডোজ টিকা এখনো দিতে পারেনি সেরাম ইনস্টিটিউট।
আগাম টাকায় কেনা টিকা এ মাসে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয়ভাবে করোনার গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলে।
Discussion about this post