হার্টবিট ডেস্ক
অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণের পর শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার অভিযোগ ওঠায় আতঙ্কে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ টিকা কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত করেছে। এরমধ্যে বেশিরভাগ দেশই ইউরোপীয়। যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিরাপদ এবং টিকা কর্মসূচি স্থগিতের প্রয়োজন নেই বলে মনে করছে তারা। ফ্রান্স ও কানাডাও বলছে একই কথা।
ভ্যাকসিন গ্রহণের পর শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে ৬০ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার দুই সপ্তাহের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে ড্যানিশ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। তবে ভ্যাকসিন ও রক্ত জমাট বাঁধার মধ্যে আদৌ কোনও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে তারা।
ডেনমার্কের পর একই পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে নরওয়ে। তারাও ভাকসিন কার্যক্রম স্থগিত করেছে।
এর আগে অস্ট্রিয়া জানায়, রক্ত জমাট বেঁধে ৪৯ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যুর পর অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের একটি চালানের ব্যবহার স্থগিত করেছে তারা। ইউরোপের ১৭টি দেশে ১০ লাখ ডোজের ওই চালানটি পাঠানো হয়েছিল। এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুনিয়া ও লুক্সেমবার্গও এর ব্যবহার স্থগিত করেছে।
ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওলিভিয়ের ভেরান বৃহস্পতিবার বলেন, তিনি ফরাসি ওষুধ সংস্থার সঙ্গে আলাপ করেছেন। তারা বলেছে টিকা কর্মসূচি স্থগিত করার প্রয়োজন নেই।
স্পেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ক্যারোলিনা দারিয়াস বলেছেন, এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন ও রক্ত জমাটের মধ্যে কার্যকারণগত সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
বুধবার (১০ মার্চ) ইউরোপের ওষুধ বিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা ইএমএ বলেছে, অস্ট্রিয়ায় নার্সের মৃত্যুর জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ওই চালানকে দায়ী বলে মনে হচ্ছে না।
ইএমএ জানিয়েছে, ৯ মার্চ নাগাদ ইউরোপীয় অর্থনৈতিক এলাকায় ভ্যাকসিন গ্রহণকারী ৩০ লাখের বেশি মানুষের মধ্যে ২২ জনের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে দেখা গেছে।
শুধু ইউরোপীয় দেশই নয়, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রয়োগ স্থগিত করেছে এশীয় দেশ থাইল্যান্ডও। শুক্রবার টিকাদান শুরুর কথা থাকলেও দেশটির প্রধানমন্ত্রী এই কর্মসূচি বাতিল করেছেন। তবে থাইল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ইউরোপে অ্যাস্ট্রাজেনেকার যে ব্যাচের টিকা সরবরাহ করা হয়েছে তা থাইল্যান্ডের সরবরাহ করা টিকার চেয়ে আলাদা। অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা স্থগিত করলেও করোনাভ্যাক প্রয়োগ অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে দেশটি।
এছাড়া এশীয়দের মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা সাধারণভাবে দেখা যায়নি।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা বৃহস্পতিবার দাবি করেছে, মানব শরীরে তাদের টিকা কতটা নিরাপদ তা নিয়ে বিস্তর পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এসব পরীক্ষায় দেখা গেছে, এ টিকা মানুষের শরীরে ভালোভাবে খাপ খেয়ে যায়।
Discussion about this post