হার্টবিট ডেস্ক
বিভাগীয় পর্যায়ে এখনও বিশেষায়িত ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরি না হওয়ায় রোগীদের ঢল নামে রাজধানীর জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটে। তবে দেশের ২৭ ধরনের ক্যান্সার রোগীদের জন্য এখানে রয়েছে মাত্র ৩০০ শয্যার হাসপাতাল। এতে চিকিৎসার নাগাল পেতে যে সময় লাগছে তার আগেই ক্যান্সার ছড়িয়ে যাচ্ছে ভুক্তভোগীর পুরো শরীরে।
দেশে ক্যান্সার নিয়ে সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে নিজস্ব কোনো পরিসংখ্যান নেই।
তবে ক্যান্সার সম্পর্কিত অনলাইন ডাটাবেজ গ্লোবোক্যানের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতি বছর দেড় লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। যার মধ্যে ৯১ হাজারের অধিক মানুষই মৃত্যুবরণ করেন।
এদিকে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল পরিচালক বলছেন প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়েও বেশি।
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল পরিচালক ডা. কাজী মোস্তাক হোসেন বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী দেশে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দুই থেকে আড়াই লাখ। তাদের মধ্যে চিকিৎসা নিতে পারছেন মাত্র ৫০ হাজারের মতো।
তিনি বলেন, ক্যান্সার চিকিৎসার একটা অংশ রেডিওথেরাপি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে আমাদের দেশে ৭০ ভাগ ক্যান্সার রোগীর রেডিওথেরাপির প্রয়োজন হয়। এর জন্য আমাদের মেশিন দরকার ২৫০টি। তার বিপরীতে মেশিন রয়েছে মাত্র ৫৭টি। তার মধ্যে অনেক মেশিন অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে। চিকিৎসার অপ্রতুলতা ক্যান্সার নির্মূলে বড় বাধা।
গবেষণায় দেখা গেছে, গড়ে একজন রোগীর বছরে ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যয় হচ্ছে ৬ লাখের অধিক। তবে ৮টি বিভাগীয় শহরে বিশেষায়িত ক্যান্সার হাসপাতাল স্থাপন হলে রোগীদের ভোগান্তি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে মত তাদের।
এ বিষেয়ে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ইপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, আমরা শতকরা ৯০ ভাগ মানুষের জন্য কিভাবে বাংলাদেশ মানের সেবা নিশ্চিত করতে পারি সেদিকে সরকারকে নজর দিতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার ইতিমধ্যে ৮টি বিভাগীয় শহরে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ করছে। এটি আগামী তিন বছরের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। এর ফলে জেলা পর্যায়ের রোগীদের কষ্ট লাগব হবে অনেকটা।
গ্লোবোক্যানের তথ্যমতে, ২০১৮ সালে বিশ্বে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৮০ লাখের অধিক। যার মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছে প্রায় ১ কোটি মানুষ। এগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ফুসফুস ক্যান্সার। তারপরেই রয়েছে কোলোরেক্টাল, স্টোমাক, লিভার, ব্রেস্ট, খাদ্যনালী, প্যানক্রিয়াস ও জরায়ুমুখ ক্যান্সার।
Discussion about this post