ডা. মো. জিয়াউল করিম
ফুসফুস ঢেকে থাকে এক ধরনের পাতলা আবরণী বা প্লুরায়ে। এতেই পানি জমে। এ রোগের নাম প্লুরাল ইফিউশন। পানি জমার রয়েছে বিভিন্ন কারণ। এসবের মধ্যে রয়েছে ফুসফুসের কিছু নিজস্ব এবং ফুসফুসের সঙ্গে সম্পর্কহীন কারণ। সাধারণত ফুসফুসের টিবি, নিউমোনিয়া, ক্যানসার, ইনফার্কশন এ জাতীয় রোগে প্লুরায় পানি জমতে পারে।
ফুসফুসের রোগের বাইরে হার্ট ফেইলিউর, লিভার সিরোসিস, নেফ্রোটিক সিন্ড্রম, কিডনি ফেইলিউর, ম্যালনিউট্রিশন, পেরিকার্ডাইটিস, লিভার অ্যাবসেস এসব রোগেও ফুসফুসের প্লুরায় পানি জমতে পারে। প্লুরাল ইফিউশন হলে রোগীর শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, বুকব্যথা করে, কাশির সঙ্গে হালকা কফ অথবা জ্বর থাকতে পারে।
অনেক কারণেই এই ফুসফুসে পানি আসতে পারে যা ফুসফুসের নিজস্ব রোগ হতে পারে, আবার অন্য কোনো অঙ্গের রোগ যা ফুসফুসকে জড়িত করে তৈরি করে বিভিন্ন সমস্যা।
সাধারণত নিউমোনিয়ার কারণে ফুসফুসে পানি আসার সমস্যা হয়। তবে যক্ষ্মা, ক্যানসার ইত্যাদি সমস্যায়ও ফুসফুসে পানি আসতে পারে। ফুসফুসের মতন প্লুরালও দুটি।
কোনো কোনো রোগে একটিতে পানি জমে, কোনো কোনো রোগে দুই প্লুরালে পানি জমতে পারে। সাধারণত লিভার, কিডনি জাতীয় রোগের কারণে দুই প্লুরালে পানি জমে থাকে।
লক্ষণ:
> জ্বর/ শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া,
> কাশি,
> শ্বাসকষ্ট,
> কফের সাথে রক্ত আসা,
> ওজন কমে যাওয়া,
> বুকে ব্যথা হওয়া।
রোগ নির্ণয়ঃ
উপরোক্ত লক্ষন সমূহ দেখা গেলে, অতি সত্তর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এসময় বুকের এক্স-রে করালে প্লুরাল ইফিউশন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তবে পানির মাত্রা খুব কম হলে, অর্থাৎ প্লুরালে অল্প মাত্রার পানি জমলে আল্ট্রাসনোগ্রাম বা সিটিস্ক্যান করার প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়াও সিরিঞ্জ দিয়ে পানি বের করে এনে নানা রকম পরীক্ষা করে দেখা হয়। তবে অনেক সময় এ রোগে প্লুরালের বায়োপসি করারও প্রয়োজন হতে পারে।
অনেক সময় এ রোগে প্লুরার বায়োপসি করারও প্রয়োজন হতে পারে।
চিকিৎসাঃ
বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে, প্লুরাল ইফিউসনের চিকিৎসা শুরু করতে হয়। টিবির কারণে এই রোগটি দেখা দিলে, রোগীকে টিবির ওষুধ দিতে হবে। অন্যদিকে আবার ক্যান্সারের কারণে হলে ক্যান্সারের চিকিৎসা শুরু করতে হবে। একই সাথে ফুসফুসের বাইরে অন্য কোনো রোগের কারনে এই সমস্যা হলে সেই রোগের চিকিৎসা করালে প্লুরাল ইফিউশন ভালো হয়ে যায়।
অনেক সময় খুব বেশি পানি জমা হলে সুঁই দিয়ে ফুটো করে বিশেষ পদ্ধতিতে সব পানি বের করে দেওয়া হয়। তবে এতে ব্যর্থ হলে ছোট অপারেশনের মাধ্যমে প্লুরালে একটি টিউব প্রবেশ করিয়ে পানি বের করে দেওয়া হয়।
চিকিৎসাঃ
বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে, প্লুরাল ইফিউসনের চিকিৎসা শুরু করতে হয়। টিবির কারণে এই রোগটি দেখা দিলে, রোগীকে টিবির ওষুধ দিতে হবে। অন্যদিকে আবার ক্যান্সারের কারণে হলে ক্যান্সারের চিকিৎসা শুরু করতে হবে। একই সাথে ফুসফুসের বাইরে অন্য কোনো রোগের কারনে এই সমস্যা হলে সেই রোগের চিকিৎসা করালে প্লুরাল ইফিউশন ভালো হয়ে যায়।
অনেক সময় খুব বেশি পানি জমা হলে সুঁই দিয়ে ফুটো করে বিশেষ পদ্ধতিতে সব পানি বের করে দেওয়া হয়। তবে এতে ব্যর্থ হলে ছোট অপারেশনের মাধ্যমে প্লুরালে একটি টিউব প্রবেশ করিয়ে পানি বের করে দেওয়া হয়।
অনেক সময় পানি বেশি জমলে সুই দিয়ে ফুটো করে বিশেষ পদ্ধতিতে পানি বের করে নেওয়া হয়। এতে ব্যর্থ হলে ছোট্ট অপারেশনের মাধ্যমে প্লুরায় একটি টিউব ঢুকিয়ে পানি বের করে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে প্লুুরায় পানি থাকার পরও যদি চিকিৎসা শুরু করা না হয়, তা হলে প্লুরায় শক্ত আবরণ পড়ে গিয়ে তা ফুসফুসে স্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে বড় অপারেশনের মাধ্যমে তা সরিয়ে ফেলতে হয়। তাই কারো এ ধরনের সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
লেখক : চেস্ট এবং মেডিসিন বিশেষজ্ঞ
সহকারী অধ্যাপক, চেস্ট মেডিসিন বিভাগ
জাতীয় অ্যাজমা সেন্টার, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা
Discussion about this post