ডা. সজল আশফাক
অঞ্জনি হলো চোখের পাতায় অবস্থিত জেইস গ্রন্থি নামক গ্রন্থির প্রদাহ। এটি সাধারণত চোখের উপরের পাতায় হয়।
চোখের পাপড়ি যেখান থেকে বের হয়, সেই রেখা ঘেঁষে যে লাল ছোট্ট দানা বা পুঁটুলি মাঝে মাঝে তৈরি হয়, তাকে চলতি কথায় অঞ্জনি বলে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে স্টাই বা হরডিওলাম। চোখের পানি তৈরি করে এমন একটি গ্রন্থি হলো মেবোমিয়ান গ্রন্থি। এই গ্রন্থির মুখ বন্ধ হয়ে গিয়ে ভেতরে ময়লা জমা হয় এবং প্রদাহ বা সংক্রমণ থেকে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। কখনো অন্যান্য গ্রন্থিও আক্রান্ত হতে পারে। এই দানাটা লাল হয়ে ফুলে যায় ও ব্যথা করে। অঞ্জনির সঙ্গে চোখের পাপড়ির প্রদাহ থাকতে পারে।
উপসর্গ
• চোখের পাতা ভারী ভারী লাগে। আক্রান্ত স্থান লাল হয়ে ওঠে, ফুলে যায় এবং শক্ত হয়ে পড়ে।
• পুঁজ জমার কারণে আক্রান্ত জায়গায় টিস্ টিসে ব্যথা হয়।
• আক্রান্ত স্থানের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যায় এবং চুলকায়।
কী করবেন?
• তুলো অথবা নরম কাপড় বোরিক পাউডার মিশানো কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে তা চোখে লাগিয়ে ভাপ দিতে পারেন। তবে এর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।
• ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ যেমন প্যারাডল টেবলেট একটি করে দিনে তিনবার খেতে পারেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
• উপরের ব্যবস্থামতো চার/পাঁচদিনে অঞ্জনি ভালো না হলে বিশেষজ্ঞ চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
• মাথায় খুশকি থাকলে তার চিকিৎসাও করাতে হবে।
কী করবেন না
• চোখের পাতা অযথা ঘসবেন না।
• নিজে নিজে সুঁচ দিয়ে অঞ্জনি গলাবার চেষ্টা করবেন না।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অঞ্জনি এক সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায় ও ভেতরের ময়লা বের হয়ে আসে। চিকিৎসা খুবই সাধারণ। অঞ্জনি অনেকের বারবার হয়, সে ক্ষেত্রে গ্রন্থির মুখে কোনো সমস্যা বা দীর্ঘদিনের পাপড়ির প্রদাহ, পাপড়িতে খুশকি ইত্যাদি আছে কি না দেখে নিতে হবে।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ
Discussion about this post