ডা: ঈষিকা নাজনীন
ডেন্টাল সার্জন, জেড এইচ সিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
শিশুর মুখ ফুলে গেছে, ব্যথায় কাতরাচ্ছে সে। খেলতে গিয়ে চোট লাগেনি, কিছুই হয়নি কিন্তু কী হলো? বুঝতে না পেরে অভিভাবকেরাও বিচলিত হয়ে যান। অনেক সময় তাঁরা না বুঝেই শিশুর গালে গরম কিছু দিয়ে সেঁক দেন। কিন্তু এটা করা একেবারেই অনুচিত বলে মনে করেন চিকিত্সকেরা। ‘অ্যালভিওলার অ্যাবসেস’ নামে এক প্রকার দাঁতের রোগ থেকে এমনটা হতে পারে।
‘বাচ্চারা ঠিকমতো দাঁত ব্রাশ না করলে এবং বিস্কুট, চকলেট বা মিষ্টিজাতীয় কিছু খেয়ে ঠিকমতো মুখ না ধুলে দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়। এরপর তা থেকে ক্ষয়টা ধীরে ধীরে বেড়ে দাঁতের মজ্জা পর্যন্ত চলে যেতে পারে। মজ্জায় পাল পিটিস নামে একটা জীবাণু তৈরি হয় এবং এটাই ধীরে ধীরে অ্যালভিওলার অ্যাবসেস রোগে রূপ নেয়।’
সাধারণত ছয় থেকে ১০ বছরের শিশুদের দুধদাঁতে এই রোগটা বেশি হয়ে থাকে বলে জানান এই দন্ত্য চিকিত্সক। অ্যালভিওলার অ্যাবসেসের প্রাথমিক লক্ষণগুলো জানিয়ে এই রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধে পরামর্শ দিয়েছেন ঈষিকা নাজনীন।
প্রাথমিক লক্ষণসমূহ
প্রাথমিকভাবে শিশুর দাঁতের গোড়ায়, মাড়িতে পুঁজ জমা হতে থাকে। পুঁজ বের হওয়ার কোনো রাস্তা থাকে না বলে মাড়ি থেকে শুরু করে গাল পর্যন্ত ফুলে যায়। অনেক সময় পুঁজও বের হতে পারে। দাঁতে অনেক ব্যথাও হতে পারে। সঠিক সময় এই রোগের প্রতিকার ভালোভাবে না করলে দাঁতের মজ্জা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা আছে। এমনটা হলে অনেক সময় দাঁত তুলেও ফেলতে হতে পারে।
প্রতিকার ও প্রতিরোধ
প্রাথমিক লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুতই চিকিত্সকের কাছে রোগীকে নিয়ে আসতে হবে। চিকিত্সকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাওয়া যাবে না। তবে ব্যথা বেশি হলে ব্যথার সামান্য ওষুধ খাওয়া যেতে পারে এবং হালকা গরম পানিতে লবণ দিয়ে কুলি করলে ব্যথা কিছুটা প্রশমন হতে পারে।
চিকিত্সকের পরামর্শে ওষুধ খেতে শুরু করলে ধীরে ধীরে মুখ ফোলা কমে যেতে পারে। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে এক থেকে দেড় সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। চিকিত্সা চলাকালীন রোগীকে নরম ভাত, দুধ ও পাউরুটি বা এ জাতীয় নরম খাবার খাওয়ানো ভালো।
চিকিত্সা শেষে রোগীকে নিয়মিত দুবেলা দাঁত ব্রাশ করতে হবে। চকলেট, জুস ও মিষ্টিজাতীয় খাবার খেলে ঠিকমতো মুখ পরিষ্কার করতে হবে।
Discussion about this post