হার্টবিট ডেস্ক
তৃতীয় মাসে যা করবেন তার তালিকা
তৃতীয় মাসে যা যা করলে সুস্থ থাকবেন প্রসবের সময় পর্যন্ত।
1. স্বাস্থ্যকর খাওয়া
আপনার ভাল খাবার ইচ্ছা হবে।আপনা 3য় মাসে গর্ভাবস্থায় আপনাকে একটা সম্পুর্ণ, স্বাস্থ্যকর এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ খাবার যাতে ফল, সবজি,দুগ্ধজাত খাদ্য,মাংস,বাদাম দানাশস্য,ভাত ইত্যাদি পরিমাণ মত থাকবে।
2. পর্যাপ্ত বিশ্রাম
অবসাদ খুব স্বাভাবিক ব্যাপার,আপনি অবশ্যই বিশ্রাম নেবেন যখনই আপনআর শরীর ভাল লাগবে না। কয়েকটি মাতৃত্বকালীন বালিশ ব্যবহার করুন আরাম পাবার জন্য।
3. অতিরিক্ত পুষ্টিকর পদার্থ সংযোজন
ফোলিক অ্যাসিড নিন প্রসবের সমস্যা এড়াতে এবং অন্যান্য ভিটামিন যা ডাক্তার আপনাকে দেবেন তা খেতে থাকুন
4. পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বজায় রাখুন
5. দাঁতের যত্ন
আপনি দাঁতের ডাক্তারের সাথে কথা বলুন যেহেতু এই সময় হরমোনাল পরিবর্তন এর জন্য মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।
6. শিশু জন্মের শিক্ষা
শিশু জন্মের শিক্ষার জন্য নাম নথিভূক্ত করান জানতে পারবেন কীভাবে অবসাদ,হতাশা অন্যান্য বিষয় গুলোকে এড়াতে পারবেন।Advertisements
7.যোগাযোগ
এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়,নিশ্চিত করুন আপনি আপনার সাথী আপনার বন্ধুবান্ধব এবং অন্যান্য আত্মীয় স্বজনদের যথেষ্ট কথাবার্তা বলছেন সমস্যা বা আপনার আশঙ্কা নিয়ে।আপনার প্রিয় মানুষরা আপনাকে আত্মবিশ্বাস দেবে যাতে আপনি অবসাদে না ভোগেন।
8. সিগারেট এবং মদ্যপান ছেড়ে দিন
অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে মদ্যপান ও সিগারেট খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হল আপনাকে কারণ এটা আপনার গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি করে এমনকি গর্ভপাত পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
9. ক্যাফিন গ্রহণের পরিমাণ কমান
চা এবং কফির মত গরম পানীয় খাবার পরিমাণ কমান যেহেতু এগুলো গর্ভপাতের সম্ভবনা বাড়ায় এবং এর ফলে কম ওজন যুক্ত শিশুর জন্মায়।
10. শরীর চর্চ্চা
হাঁটা,সাঁতার কাটা ইত্যাদির মত সহজ শরীর চর্চ্চা করুন। তবে খেলাধূলা করবেন না এতে পড়ে যাবার সম্ভবনা থকে এবং সন্ধিতে চাপ পড়তে পারে।Advertisements
11. সক্রিয় থাকুন
বিভিন্ন ধরণের কাজের মধ্যে থাকুন এতে আপনার মন সেই কাজেই নিবেশিত থাকবে। উল বোনা,ছবি আঁকা প্রভৃতি আপনার চাপ কমাতে সাহায্য করবে।
যে সমস্ত ব্যায়াম আপনি গর্ভাবস্থার তৃতীয় মাসে আপনি করতে পারেন
কিছু ব্যায়াম যা আপনাকে স্বছন্দে রাখতে সাহায্য করবে আপনার গর্ভাবস্থার তৃতীয় মাসে।
- প্রাতঃভ্রমণ– এটা অবসাদ এবং মর্নিং সিকনেস কমায়।এটা আপনাকে সতেজ করে এবং শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে।
- সাঁতার-পেশীগুলোকে ঠিক রাখে,লিগামেন্টের বিস্তারে সাহায্য করে, রক্ত সংবহন বৃদ্ধি করে।
- পাইলেটস- শক্তি বৃদ্ধি করে এবং নমনীয়তা বাড়ায়।
- কম প্রভাব বিশিষ্ট অ্যারোবিকস- হৃদপিন্ড শক্তিশালী করে,পেশীরসচলতা বাড়ায় এবং যন্ত্রণা থকে মুক্তি দেয়।
- যোগা- একজন পেশাদার ব্যাক্তির অধীনে করবেন এতে আপনার এবং আপনার সন্তানের অভূতপূর্ব উপকার হবে।
3য় মাসে যা করা যাবে না
এখানে একটি সতর্কতার তালিকা রইল যেগুলো 3য় মাসে করা উচিত হবে না।
- ভারী কোনো বস্তু তুলবেন না এবং বেশী পরিশ্রম হয় এমন কোনো কাজ করবেন না এতে গর্ভের ওপর চাপ পরে।
- যে কোনওরকম মশলাদার,বেশী তেলযুক্ত,চর্বিযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন এগুলো হজমের সমস্যা করে।
- হালকা বাঁধুনির জামাকাপড় পরুন এবং আরামদায়ক ব্রা ব্যবহার করুন।
- আরামদায়ক জুতো পড়ুন যগুলো সমান বা ফ্ল্যাট অর্থাৎ হিল নেই।
- ড্রাগ ছেড়ে দিন আপনার শিশুর বিকাশের জন্যে।
আপনার ডাক্তার আপনার নিম্নলিখিত বিষয়গুলো চেক করবেন।
- আপনার স্বস্থ্যের এবং আপনার পরিবারে স্বাস্থ্যের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চাইবেন।
- তিনি চেক করবেন আপনার আগের থেকে কোনো অসুখ আছে কিনা।
- আপনার ওজন এবং ব্লাড প্রেসার চেক করবেন
- আপনার তলপেটের আকার এবং মোটামুটি আয়তন দেখবেন এবং জরায়ুর ফান্ডাল হাইট চেক করবেন।
- গর্ভস্থ শিশুর হৃদস্পন্দন চেক করবেন।
পরীক্ষাগারের করা পরীক্ষাগুলি
যে সকল পরীক্ষা গুলি আপনার তিন মাসের গর্ভাবস্থায় করতে হবে সেগুলি নিম্ন রুপ
1.মুত্র পরীক্ষা
শর্করা এবং প্রোটিনের মাত্রার সাথে সাথে সংক্রমণ হয়েছে কিনা জানতে এটি করা হয়।
2.রক্ত পরীক্ষা
রক্ত নমুনার সাহায্যে আপনার ব্লাডগ্রুপ,Rh ফ্যাকটার, এবং অ্যানিমিয়া আছে কিনা জানা যায়।
3.ফ্লুয়িড রিটেনসান টেষ্ট
যদি আপনার বাহু বা পা ফুলে যায় তাহলে এটা করা হয়।
4.প্রথম ত্রৈমাসিকের স্ক্রিনিং টেষ্ট
ভ্রুণের কোনোরকম ঝুঁকি আছে কিনা সাথে সাথে জন্মের সময় এবং জেনেটিক সমস্যা আছে কিনা তা জানতে স্ক্রিনিং করা হয়।
5.মায়ের সিরাম(রক্তের)পরীক্ষা
দুটি পরীক্ষা করা হয় একটি হল প্রেগনেন্সি-অ্যাসোসিয়েটেড প্লাজমা প্রোটিন স্ক্রিনিং(PAPP-A) এবং হিউম্যান ক্রনিং গোনাডোট্রপিন(hCG)।
6.ক্রনিক ভিল্লাস স্যাম্পেলিং(CVS)
এটা করা হয় গর্ভাবস্থার 11তম সপ্তাহে ডাউন সিন্ডোম বা অন্য ক্রোমোজোমাল সমস্যা আছে কিনা তা জানা যায়।
আলট্রাসাউন্ড স্ক্যান
নুচাল ট্রন্সলুয়েন্সি (NT) হল গর্ভাবস্থার 11 সপ্তাহে কৃত স্ক্যান যেখানে অ্যামনিওটিক ফ্লুয়িডের মাত্রা,জরায়ুতে অমরার অবস্থান,এবং ভ্রুণের কোনো অস্বভাবিকতা আছে কিনা দেখা হয়।
Discussion about this post