জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
“দেশে করোনার শুরু থেকে মানুষের মনে আতঙ্ক ছিল। আমি পরিচালক হিসেবে সেটিকে চ্যালেঞ্জ ভেবে নিয়েছি এবং বন্ধের দিনও হাসপাতালে এসে চিকিৎসক, কর্মচারীদের সঙ্গে কাজ করেছি। আমাদের হাসপাতালের অনেক চিকিৎসক রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যেহেতু আমি ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক, আমার যদি করোনা পরীক্ষার পরে পজিটিভ রিপোর্ট আসতো তাহলে আইসোলেশনে থাকতে হতো, তখন হাসপাতাল চালাতো কে! একথা চিন্তা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাসপাতালের সকলকে নিয়ে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আজ আমার হাসপাতালে শেষ দিন। আজ করোনা পরীক্ষা করিয়ে তারপর যাবো।”
রোববার (১৫ নভেম্বার) সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে অবস্থিত বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিএমআরএ) কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিদায়ী অনুষ্ঠানে ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন একথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালটির নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক, উপ পরিচালক ডা. আলাউদ্দিন আল আজাদ, সহকারী পরিচালক ডা. মোসাদ্দেক হোসেন, ঢামেক নার্সদের নেতা মো. কামাল হোসেন পাটুয়ারী ও বিএমআরএ’র সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বাবুসহ সংগঠনের সকল নেতা-কর্মীরা।
তিনি বলেন, আমি ঢামেক হাসপাতালের ৫০তম পরিচালক হিসেবে ২০১৭ সালে যোগদান করি। যোগদানের পর থেকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগসহ সব বিভাগই উন্নত করা হয়েছে। এছাড়া অনেকগুলো নতুন বিভাগও চালু করা হয়েছে। হাসপাতালে যোগদানের পর থেকে শুনতে থাকি আমাদের হাসপাতালে জায়গা নেই, যন্ত্রপাতি নেই, লোকবল নেই। আমি আসার পর চেষ্টা করেছি আমাদের যা কিছু আছে তার মধ্যে আরো কিছু সংযোজন করে রোগীদের সেবার মান বাড়ানোর।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা সব সময় আমাদের সাথে নিবিড় ভাবে কাজ করেছেন। আমাদের যেসব সমালোচনা হয়েছে তা আমাদের কিছু ব্যর্থতার কারণেই হয়েছে।
হাসপাতালের নতুন পরিচালকের উদ্দেশ্যে নাসির উদ্দিন বলেন, তিনি আরও অভিজ্ঞ ব্যক্তি। আশা করি তিনি হাসপাতালের সেবার মান আরও উন্নত করবেন।
অনুষ্ঠানে হাসপাতালের নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমার ছোট কয়েকটি হাসপাতালে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু ঢামেক অনেক বড় একটি হাসপাতাল। আমি রাত ৩টার দিকে একবার হাসপাতালে এসেছিলাম, তখন দেখি হাসপাতালের জরুরী বিভাগসহ সবখানেই রোগীদের সেবার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে সকলে।
বিদায়ী পরিচালকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, স্যারের কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখেছি। স্যারের কাছ থেকে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। আর সাংবাদিকরা হলেন আয়না, আমি যা করছি তা আপনাদের মাধ্যমেই প্রকাশিত হবে।
অনুষ্ঠানে সংগঠনের পক্ষ থেকে সদ্য বিদায়ী ও নতুন পরিচালককে ফুলের শুভেচ্ছা জানানো হয়।
Discussion about this post