রাস্তার পাশে, বাড়ির আনাচে কানাচে, বিভিন্ন পতিত জমিতে অনাদরে-অবহেলাতেই জন্মে যেতে পারে এই কচু। বহু জাতের কচু রয়েছে। আর বিশেষ করে কচু শাকের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কচু শাকের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে:
পুষ্টি গুণ: কচু শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম ও লৌহ রয়েছে। ভিটামিন এ জাতীয় খাদ্য রাতকানা প্রতিরোধ করে আর ভিটামিন সি শরীরের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। তাই শিশুদের ছোট বেলা থেকেই কচু শাক খাওয়ানো উচিত।
ব্যবহার: যে সমস্ত কচু দাড়াঁনো পানিতে চাষ করা যায় তাকে পানি কচু বলে। আমাদের দেশে কচু একটি সুস্বাদু সবজি হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের পানি কচুর বিভিন্ন নাম রয়েছে যেমন নারিকেল কচু, জাত কচু, বাশঁ কচু ইত্যাদি।
উপকারিতা:
১. কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকায় এর লৌহ উপাদান আপনার দেহে সহজে আত্তীকরণ হয়ে যায়। তাছাড়া ভিটামিন সি শরীরের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। তাই শিশুদের ছোট বেলা থেকেই কচু শাক খাওয়ানো উচিত।
২. কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে “ভিটামিন এ” থাকায় রাতকানা, ছানি পড়াসহ চোখের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধসহ দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়ে দেয়।
৩. কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ থাকে যা খাবারকে সহজে হজম করতে সাহায্য করে থাকে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে, তারা কচুশাক খেতে পারেন।
৪. কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে তাই রক্তশূন্যতায় ভোগা রোগীদের জন্য কচু শাক খাওয়া একরকম আবশ্যক বললেই চলে। যারা রক্তস্বল্পতায় ভূগছে তারা নিয়মিত কচু শাক খেতে পারেন। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা রক্তশূন্যতা দূর করতে ভূমিকা রাখে।
৫. আমাদের শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ সচল রাখতে কচু শাক অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। এই শাকের আয়রন ও ফোলেট রক্তের পরিমাণ বাড়ায়। ফলে অক্সিজেন সংবহন পর্যাপ্ত থাকে। এতে উপস্থিত ভিটামিন কে রক্তপাতের সমস্যা প্রতিরোধ করে।
৬. কচু আঁশ জাতীয় হওয়ায় এটি কোষ্ঠ-কাঠিন্য দূর করে। কচুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ক্যালসিয়াম যা আমাদের হাড় শক্ত করতে সহায়তা করে।
৭. কচু শাকে বিদ্যমান নানা রকমের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান গর্ভবর্তী মা ও শিশুর জন্য অনেক উপকারী। কচু শাক সহজ লভ্য তাই দরিদ্র পরিবারের গর্ভবতী মহিলারা ভিটামিন ও আয়রনের চাহিদা পূরণের জন্য কচু বা কচুশাক খেতে পারেন।
৮. যেহেতু কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে এ কারণে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কচু শাক রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে নিয়মিত এই শাকটি খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।
৯. যাদের গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি রয়েছে তাদের জন্য কচু অনেক উপকারী। এটি হজমশক্তি বাড়াতেও ভূমিকা রাখে। অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরী ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান থাকায় কচু শাক যেকোন ধরনের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
১০. কচু শাকের সব চেয়ে বড় উপকারিতা হল এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাংগানিজ ও ফসফরাস। আমাদের দাঁত ও হাড়ের গঠনে এবং ক্ষয়রোগ প্রতিরোধে কচু শাকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১১. কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে । এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত কচু শাক খেলে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়। আরেক গবেষণা বলছে, কচু শাক স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে দারুন কার্যকরী।
১২. কচু শাক খেলে রক্তের কোলেস্টরেল কমে তাই উচ্চরক্ত চাপের রোগীদের জন্য কচুশাক এবং কচু বেশ উপকারী। নিয়মিত কচুশাক খেলে কোলন ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমে।
Discussion about this post