অনলাইন ডেস্ক
দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম তিন জন করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর মে মাসের মাঝামাঝি থেকে পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করে। সে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই রোগী শনাক্তের হার চলে যায় ২০ শতাংশের ওপরে। চলতে থাকে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। তবে এরপর থেকে শনাক্তের হার কমতে থাক। প্রায় এক মাসের বেশি সময় থেকেই শনাক্তের হার ১০ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে ছিল। তবে গত ২ নভেম্বর রোগী শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৪৭ শতাংশে।
গেল সপ্তাহে রাজধানী ঢাকার হাসপাতালগুলোতে জটিল করোনা রোগীর সংখ্যা আবার বাড়তে শুরু করেছে। প্রায় সবগুলো হাসপাতালে খালি বেডের চেয়ে রোগী ভর্তি আছে এমন বেডের সংখ্যা বেশি। তবে রাজধানী বাদে সারাদেশের আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র)-তে ফাঁকা বেড বেশি। শুক্রবার (৬ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, করোনা রোগীদের শতকরা ৮০ শতাংশের মধ্যে মৃদু লক্ষণ দেখা দেয়। তাদের হাসপাতালে যেতে হয় না। বাকি ২০ শতাংশের মধ্যে ১৫ শতাংশের উপসর্গ তীব্র হয় এবং হাসপাতালে যেতে হয়। বাকি ৫ শতাংশের অবস্থা থাকে জটিল, তাদের আইসিইউ বেডের পাশাপাশি দরকার হয় ভেন্টিলেটর।
সংক্রমণের মাঝের সময় জুন-জুলাইর দিকে আইসিইউ না পেয়ে মারা যাওয়ার ঘটনাও গণমাধ্যমে এসেছে। তারপর থেকে সংক্রমণের হার কমার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালের আইসিইউ শয্যা এবং সাধারণ শয্যা ফাঁকা থাকা শুরু হয়। শয্যা ফাঁকা থাকাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনেক করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল কমিয়ে আনে।
তবে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজধানী ঢাকার হাসপাতালগুলোতে আইসিইউতে রোগীর সংখ্যা আবার বাড়তে শুরু করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের আজকের (৬ নভেম্বর) বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, ঢাকা মহানগরীতে থাকা হাসপাতালগুলোর মধ্যে করোনার প্রথম ডেডিকেটেড হাসপাতাল বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের ১৬টি আইসিইউ বেডের মধ্যে রোগী রয়েছেন ১৪টিতে, ফাঁকা দুটি; ৫০০ শয্যার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ১০টি বেডের ১০টিতেই রোগী রয়েছেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ২৪টি বেডের মধ্যে রোগী আছেন ১৭টিতে, ফাঁকা সাতটি; ৫০০ শয্যার মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১৪টি বেডের মধ্যে রোগী আছেন ১২টিতে, ফাঁকা দুটি; রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের ১৫টির মধ্যে রোগী আছেন ১২টিতে, ফাঁকা তিনটি; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি বেডের মধ্যে রোগী আছেন আটটিতে, ফাঁকা আটটি; ২৫০ শয্যা শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের ১৬টির মধ্যে রোগী আছেন সাতটিতে, ফাঁকা ৯টি; আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১০টি বেডের মধ্যে রোগী আছেন ছয় জন, ফাঁকা চারটি; সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের ছয়টি বেডের চারটিতে রোগী আছেন, ফাঁকা দুটি; আসগর আলী হাসপাতালের ৩৬টি বেডের ২০টিতে রোগী আছেন, ফাঁকা ১৬টি; স্কয়ার হাসপাতালের ২৫টি বেডের ১৮টিতে রোগী আছেন, ফাঁকা সাতটি; ইবনে সিনা হাসপাতালের ছয়টি বেডের ছয়টিতেই রোগী আছেন, ইউনাইটেড হাসপাতালের ২২টির মধ্যে রোগী আছেন ১২ জন, ফাঁকা ১০টি; এভার কেয়ার হাসপাতালের ২০টির মধ্যে রোগী আছেন ১৮ জন, ফাঁকা দুটি; ইম্পালস হাসপাতালের ৫৬টি বেডের মধ্যে রোগী আছেন আট জন, ফাঁকা ৪৮টি; এএমজেড হাসপাতালের ১০টি বেডের মধ্যে রোগী আছেন সাত জন, ফাঁকা তিনটি এবং বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের ১২টি আইসিইউ বেডের সবগুলোতেই রোগী রয়েছেন।
মোট ৩১৪টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে রোগী আছেন ১৯১টিতে, আর ফাঁকা রয়েছে ১২৩টি বেড।
তবে সারাদেশে করোনা রোগীদের জন্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) রয়েছে ৫৬৪টি। এরমধ্যে রোগী আছেন ১৭৩ জন, আর ফাঁকা রয়েছে ২৯১টি বেড।
Discussion about this post