বর্তমানে ক্যান্সার ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এই নিয়ে দুশ্চিন্তাও তাই কম নয়। অনেকেরই ধারনা ক্যান্সার হলে আর বাঁচানো সম্ভব নয়। কিন্তু জানেন কি যদি এই মারণব্যাধি ধরা পরে প্রাথমিক পর্যায়ে ,তাহলে অনেকটাই সম্ভব এর থেকে রক্ষা পাওয়া। আগে থেকেই সাবধনতা অবলম্বন করতে চাইলে দেখে নিন ক্যান্সারের লক্ষণগুলি…
১) দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি: আপনি যদি দীর্ঘ সময় ধরে ক্লান্তিবোধ করেন অথবা অবসাদে ভোগেন তবে সেটা অনেক রোগের কারণই হতে পারে, হতে পারে ক্যান্সারও। মলাশয়ের ক্যান্সার বা রক্তে ক্যান্সার হলে সাধারণত এমন উপসর্গ দেখা যায়। তাই এরকম হলে দ্রুত পরামর্শ নিন চিকিৎসকের।
২) দ্রুত ওজন কমে যাওয়া: কোনও কারণ ছাড়া হঠাৎ করেই দ্রুতগতিতে যদি ওজন কমতে থাকে সেটা কিন্তু সত্যিই চিন্তার কারণ। এটা কিন্তু ক্যান্সারের অন্যতম উপসর্গ। তাই নজর দিন ওজনের দিকে।
৩) দীর্ঘদিনের ব্যথা: কোন কারণ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে শরীরের কোনও অংশে যদি ব্যথা হয় আর তাতে ওষুধও যদি কাজ না করে, তাহলে কিন্তু এই নিয়ে ভাবনার যথেষ্ট কারণ আছে। শরীরের কোন জায়গায় ব্যথা হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করছে রোগীর ব্রেইন টিউমার বা মলাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে কিনা।
৪) অস্বাভাবিক মাংসপিণ্ড: আপনি যদি শরীরের কোনও অংশে অস্বাভাবিক কোনও মাংসপিণ্ড দেখতে পান অথবা মাংস জমাট হতে দেখেন কিংবা এ ধরনের পরিবর্তন বুঝতে পারেন, তবে এটা কিন্তু ক্যান্সারের উপসর্গ হতে পারে। তাই দেরি না করে পরামর্শ নিন চিকিৎসকের।
৫) ঘন ঘন জ্বর: এটা যে কোনও রোগের উপসর্গ। ক্যান্সার শরীরে জেঁকে বসলে স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এতে দেখা দেয় ঘন ঘন জ্বর । ঘন ঘন জ্বর ব্ল্যাড ক্যান্সার-এর লক্ষণ বুঝতে হবে।
৬) ত্বকে পরিবর্তন: ত্বকে অস্বাভাবিক পরিবর্তনই ক্যান্সার শনাক্ত করার সহজ উপায়। তাই ত্বকে অতিরিক্ত তিল বা ফ্রিকেল অথবা আঁচিলের বিষয়টি খেয়াল রাখুন। যদি আঁচিলের রং, আকারে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা যায়, তবে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
৭) দীর্ঘস্থায়ী কাশি: যদি দেখেন ওষুধ খাবার পরও কাশি সারছে না বা কাশির কারণে আপনার বুক, পিঠ বা কাঁধে ব্যথা করে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সামান্য কাশি ভেবে একেবারেই ফেলে রাখবেন না।
৮) মল-মূত্রত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন: যদি ঘন ঘন মল-মূত্রের বেগ অনুভব করেন, তবে এখানে ক্যান্সার নিয়ে ভাবনার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ঘন ঘন ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যও মলাশয়ের ক্যান্সারের লক্ষণ। মূত্রত্যাগের সময় অন্ত্রে ব্যথা বা রক্তক্ষরণ মূত্রথলির ক্যান্সারের উপসর্গ।
৯) অকারণে রক্তক্ষরণ: যদি কাশির সময় রক্তক্ষরণ হয়, তবে এটা ক্যান্সারের একটা বড় লক্ষণ। এছাড়া জনিপথ বা মলদ্বার থেকে রক্তক্ষরণ-সহ এ ধরনের অন্যান্য অস্বাভাবিকতাও ক্যান্সারের উপসর্গ।
১০) খাবারে অনিচ্ছা: কেউ খাবার খেলেই যদি নিয়মিত বদহজমে ভোগেন, তবে পেট, কণ্ঠনালী বা গলার ক্যান্সার নিয়ে চিন্তার কারণ আছে। অবশ্য সাধারণত এসব উপসর্গকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় না। তবু অসুস্থতাকে কখনও এড়িয়ে যেতে নেই।
অন্যান্য উপসর্গ: এগুলির মধ্যে আছে পা ফুলে যাওয়া, শরীরের আকারে অস্বাভাবিক পরিবর্তন ইত্যাদি। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত করতে পারলে বেশিরভাগ ক্যান্সারেরই চিকিৎসা ও নিরাময় সম্ভব।
Discussion about this post