অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ্
রান্নাঘরে লুকিয়ে থাকতে পারে অসংখ্য জীবাণু। এসব জীবাণুর কারণে পেটব্যথা, বমি, পাতলা পায়খানা, জ্বরসহ নানা অসুখ হতে পারে। অতএব রান্নাঘরের পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে একটু বেশি যত্নবান হতে হবে।
থালা–বাসন ধোয়ার মাজনি
রান্নাঘরে ব্যবহৃত স্পঞ্জ বা মাজনি অসংখ্য রোগজীবাণুর আরামদায়ক আবাস। হাঁড়ি-পাতিল মাজার পর স্পঞ্জ বা মাজনি পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করলেও এর ভেতরে থেকে যায় বেশ কিছু খাদ্যকণা ও ময়লা। ভেজা, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে এসব মাজনিতে রোগজীবাণু বংশ বৃদ্ধি করে খুবই দ্রুত। তারপর তা চলে যায় থালা–বাসন, হাঁড়ি-পাতিল কিংবা গ্লাসে। স্পঞ্জ বা মাজনির জীবাণু সহজে দূর হয় না। তাই এগুলো প্রতি সপ্তাহেই দুই-একবার সাবান দিয়ে ভালো করে ধুয়ে এবং পানিতে ফুটিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। আর এগুলো শুকনো রাখতে হবে সব সময়।
হাঁড়ি–পাতিল ধরার কাপড়
এসব কাপড় বা ছোট তোয়ালে সাধারণত প্রতিদিন ধোয়া হয় না। এ কারণে এগুলোও নোংরা আর আর্দ্র হয়ে যায়, যা জীবাণুর জন্য আদর্শ জায়গা। কাজেই এগুলোকেও স্পঞ্জ বা মাজনির মতো নিয়মিত পরিষ্কার ও শুকনো রাখতে হবে।
রান্নাঘরের বেসিন এবং পানির কলের হাতল
থালা-বাসন, হাঁড়ি-পাতিল ধোয়ার সময় রান্নাঘরের বেসিনে পরিত্যক্ত খাবার, খাদ্যকণা, তেল ইত্যাদি জমে। কলের হাতলেও বেশ ময়লা জমে। পরিষ্কার না করলে এগুলো থেকেও জীবাণু ছড়ায়। সুতরাং রান্নাঘরের বেসিন ও পানির কলের হাতল পরিষ্কার করতে হবে প্রতিদিন। কাজ শেষে রাতের বেলা সিংকে বা বেসিনে জীবাণুনাশক ঢেলে দিন খানিকটা। তারপর ফুটন্ত গরম পানিতে ধুয়ে নিন।
দা, বঁটি, ছুরি, চাকু, কাটিং বোর্ড
মাছ-মাংস, সবজি কাটা হয় দা-বঁটি-ছুরি-চাকু দিয়ে। অনেকে কাটিং বোর্ড ব্যবহার করেন এসব কাটাকুটিতে। কাঁচা মাছ, মাংস ও সবজি হলো জীবাণুর আধার। এসব থেকে দা, বঁটি, ছুরি, চাকু, কাটিং বোর্ডে জীবাণু ছড়ায়। কাজেই প্রতিবার কাটাকুটির পর এসব জিনিস ভালো করে সাবান দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করতে হবে।
থালা–বাসন রাখার ঝুড়ি বা র্যাক
থালা–বাসন যে র্যাকে বা ঝুড়িতে রাখা হয়, তাতেও কিন্তু জীবাণু থাকতে পারে। কাজেই মাঝেমধ্যে এগুলোও পরিষ্কার করতে হবে।
মনে রাখবেন, নিত্যদিনের রান্নাবান্নায় ব্যবহৃত জিনিসপত্র থেকে রোগবালাই ছড়াতে পারে। কাজেই একটু সচেতন হলেই এড়ানো যায় এসব ঝুঁকি।
অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ্, বিভাগীয় প্রধান, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ, কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ
Discussion about this post