ডা. দিদারুল আহসান
কারও কারও ত্বকের সংবেদনশীলতার কারণে প্রসাধনী ব্যবহারে ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে। হতে পারে অ্যালার্জি।
নেইলপলিশে থাকে সালফোনোমাইড। থাকে ফরমালডিহাইড রেজিন, যা ব্যবহারে গলা এমনকি চোখের পাতায়ও প্রদাহের সৃষ্টি হতে পারে। অনেকের অভ্যাস নেইলপলিশ বারবার তুলে নতুন করে লাগানোর। এটি তুলতে যে পদার্থ ব্যবহার করা হয়, তাতে থাকে অ্যাসিটোন, যা থেকে নখ ক্ষয় হতে পারে।
চুল পাকলে অনেকে কলপ ব্যবহার করেন। চুলের কলপে থাকে প্যারাফিনাইল ডাইঅ্যামাইন। এ থেকে অনেকের মাথা, গোঁফ বা দাড়িতে অ্যালার্জির সৃষ্টি হয়। তাই এ ধরনের কলপ ত্বকে অ্যালার্জি সৃষ্টি করবে কি না, তা বুঝতে আগে সামান্য একটু কলপ কানের লতির পেছনে ২৪ ঘণ্টা লাগিয়ে রাখতে পারেন। যদি অ্যালার্জির সৃষ্টি করে, তবে সেটা ব্যবহার না করাই উচিত।
চুল কার্ল বা স্ট্রেইট করতে যে পদার্থ ব্যবহার করা হয়, তা থেকে সাধারণত কোনো বিক্রিয়া বা প্রদাহ কিংবা অ্যালার্জির সৃষ্টি না হলেও চুল ভঙ্গুর হয়ে পড়তে পারে। চুলে ব্যবহারের জন্য নানা ধরনের স্প্রে বাজারে পাওয়া যায়। এতে থাকে ল্যানোলিন, যা অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে। সুগন্ধি ব্যবহারসামগ্রীও ত্বকে অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে।
লিপস্টিকে থাকে বিশেষ ধরনের রঞ্জন পদার্থ। অনেক নারীর ঠোঁটে এ থেকে অ্যালার্জির সৃষ্টি হয়। কারণ, এতে ডাই এবং ট্রেট্টা ব্রোমোফ্লোরোসিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কাজেই যাঁরা ঠোঁটের সমস্যায় ভোগেন, তাঁরা লক্ষ করবেন, লিপস্টিক ব্যবহারের পর তা বাড়ে কি না।
মুখের ব্রণ বা অন্য কোনো সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শে কেনা মলমজাতীয় ওষুধ মুখে ব্যবহার করলেও তা থেকে মুখে সৃষ্টি হতে পারে অ্যালার্জি।
বিভিন্ন প্রসাধনী নির্বিচার ব্যবহার না করাই ভালো। বারবার প্রসাধনী পরিবর্তনও যুক্তিসংগত নয়। যার যেটায় অ্যালার্জি হয় না, সেটাই ধরে রাখা ভালো। তবে মনে রাখতে হবে, একটি বিশেষ প্রসাধনী দীর্ঘদিন ব্যবহারের পরও তার দেহে ওই প্রসাধনী থেকেও অ্যালার্জির সৃষ্টি হতে পারে। যাঁদের ত্বক একটু বেশি সংবেদনশীল, আর যাঁদের অ্যালার্জির প্রবণতা আছে, তাঁরা সতর্কতার সঙ্গে প্রসাধনসামগ্রী বাছাই করবেন। প্রয়োজনে প্রথমে সামান্য একটু ব্যবহার করে পরীক্ষা করবেন। কোনো প্রসাধনী ব্যবহারের পর চুলকানি, ত্বকে দানা বা র্যাশ, ফুলে ওঠা দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
ডা. দিদারুল আহসান, চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ, আল-রাজি হাসপাতাল
Discussion about this post